• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সংজ্ঞায়িত আওয়ামী লীগ, সত্যায়িত সৈয়দ আশরাফ

অনলাইন ডেস্ক
  ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:১৮

মিথ্যাকে আমি প্রশ্রয় দেই নাই, মিথ্যাকে অলংকার দিয়ে সাজিয়ে আমি কোনো রূপান্তর করতে পারি নাই বরং সত্যটাকেই সত্য বলে জেনেছি আর তা প্রকাশ করেছি, আমার সেই সত্য কোনো সত্যের অলাতচক্র তৈরি করতে পারে নাই, সত্যের জোয়ার তৈরি করতে পারে নাই যা দিয়ে ভাটায় আটকে থাকা তরীগুলোকে অবমুক্ত করে সত্যের কূলে ফেরাবে। আর সত্য বলাতে আমি যে ঘৃণা পেয়েছি তার জন্য আমার কষ্ট নাই। কারণ আমার জন্য সত্যবতী নাই। আর এই প্রেক্ষাপটের জন্য সত্যবান নাই কারণ সত্যবানের সত্য সত্যহীন হয়ে গেছে আর সত্যবতী সত্যহারা সত্যহীন অসত্যে সত্যবান। (রূপক অর্থে আমি হলো সমাজ, সত্যবতী হলো রাজনীতি, আর সত্যবান হলো সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম)

বাংলাদেশ সৃষ্টির পর বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ রাজনীতিবিদ কাউকে বলা হলে তা শেখ হাসিনা নিঃসন্দেহে বলতে হবে আর সৈয়দ আশরাফ শেখ হাসিনার রাজনীতিতে শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে সজ্জন ব্যক্তিটাই সৈয়দ আশরাফ।

এই দুনিয়াতে কিছু কিছু জিনিস বার বার আসে না, তা কেবল একবারের জন্যই জন্মায় আর কিছু কিছু মানুষ যুগের অন্তরে নতুন যুগের সূচনার জন্য আসে এবং নতুন সংস্কৃতির অস্তিত্ব ধারণ করে, এক নব্য দিগন্তের কারণে নব্য সূচনায় তার গাম্ভীর্য প্রতিষ্ঠা করে যায়। এই ধরণের বাক্যের বিশেষরা অসাধারণ হয়, আর এই অসাধারণ কোনো সাধারণের কাতারে নয়, বরং এই অসাধারণদের সাধারণ জীবন যাপন এবং সত্যকে সত্যে দেখানোর প্রবল ক্ষমতায় চরম বিশ্বাসের পাত্র হয়ে উঠে, মানুষ বিশ্বাস করে অন্ধের মত। দেশ-জাতি এদেরকে ধরে বাঁচতে চায় বারবার এদেরকে চায়, এদের বিয়োগান্ত জাতিকে কাঁদায়, শক দেয় এক অস্থিরতায় ফেলে দেয়। সৈয়দ আশরাফ ঠিক তাদেরই এক জন, সংকটে এক অজানা কালো ভয়কে আলোতে ফেরাতে সৈয়দ আশরাফকেই চায়, যে আশরাফকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়, “আওয়ামী লীগের অনেকের গ্রুপ আছে, আপনি কোনো গ্রুপের তখন সৈয়দ আশরাফের উত্তর আসে, আমার কোনো গ্রুপ নাই, আমি শুধু শেখ হাসিনার রাজনীতি করি। নেত্রীর প্রতি এত প্রচণ্ড বিশ্বাস, আস্থা একনিষ্ঠতা শুধু নির্লোভ সৈয়দ আশরাফের পক্ষেই সম্ভব কারণ নেত্রীর অভিভাবকতার সৈয়দ আশরাফ তিনি।

সৈয়দ আশরাফ ১৯৬৯ সাল থেকেই সক্রিয় ছাত্র-রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। ১৯৭১ সালে শেখ কামালের সাথে ভারতের উত্তরখণ্ডের দেরাদুনে গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদলের অন্যতম এক মুক্তিযোদ্ধা তিনি। ১৯৭৫ সালের জাতি এক প্রচণ্ড অমানুষিক বর্বরতার (১৫ই আগস্ট জাতির পিতার সপরিবারে হত্যা, তারপর ৩রা নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা) শিকার হয়। ১৯৭৫ সালের পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য যারা আন্দোলন করে সেই সংঘটকদের মধ্যে সৈয়দ আশরাফ অন্যতম। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা, শেখ রেহান যখন ইংল্যান্ডে সৈয়দ আশরাফ ও তখন এক সাথে ইংল্যান্ডে বাংলাদেশের স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে থাকে।

১৯৮৩ সালে ইংল্যান্ডের টিবি-চ্যানেল ফোর এ "Fighting Back" নামে একটি Drama Play হয় যেটা লেখক ছিলেন সৈয়দ আশরাফ, যে নাটকটির বিষয়বস্তু ছিলো, স্বৈরাচার বিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সৈয়দ আশরাফ ব্রিটিশ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকেন এবং লেবার পার্টির সক্রিয় রাজনীতিবিদ ছিলেন। ১৯৯৫ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সৈয়দ আশরাফকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনেন এবং ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে বিজয়ী হয়। (উল্লেখ্য: সৈয়দ নজরুল সাহেবের পর তিনিই আওয়ামী লীগকে এই আসনে আবার জয়ী করেন) এবং শেখ হাসিনা তার মন্ত্রী ক্যাবিনেটে সৈয়দ আশরাফকে বেসরকারি বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী করেন।

১/১১ এর সময় সৈয়দ আশরাফ আওয়ামী লীগসহ গণতন্ত্রের জন্য এক ত্রাণকর্তা রূপে আবির্ভাব ঘটান। কেয়ারটেকার গভারমেন্টকে দেশী-বিদেশী চাপে এক ভঙ্গুর অবস্থায় নিয়ে যান। সৈয়দ আশরাফ, দুই নেত্রীকেই জেলের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সমমর্যাদা দিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবহিত করেন। মাইনাস ২ এর রাজনীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান, অনেক সিনিয়র রাজনীতিবিদদের রোষানলে পড়েন কিন্তু শেখ হাসিনাকে ছাড়া কোনো নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যাবে না তা ঘোষণা দেন।

ঠিক তাই হলো শেখ হাসিনাকে নিয়েই নির্বাচনে গেলেন, কোনো কিছুতেই আপোষ করেননি এবং আওয়ামী লীগের ইতিহাসে এক অনন্য বিজয় নিয়ে সংসদে গেলেন এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আস্থার সাধারণ সম্পাদক হয়ে যান।

সময়ের ক্ষত তখনো শুকাইনি সরকার গঠনের পরেই পিলখানা ঘটনায় যখন তাল মাতাল, খুব কঠিন হস্তে তা মোকাবেলা করেন আওয়ামী লীগের এই তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শ্রেষ্ঠ ধারক বাহক সৈয়দ আশরাফকে আপনি চোখ বন্ধ করে বলতে পারেন। তিনি বঙ্গবন্ধুকে সর্বদায় ধারণ করতেন এবং তার কাজে তা প্রতিফলন ঘটাতেন। ২০১২ সালের দিকে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সংসদে, সংস্কারের হবে আইন তখন সৈয়দ আশরাফ প্রকাশ্যে বিএনপিকে আহ্বান জানান, "আপনারা সংসদে আসুন, বসুন এটাকে নিয়ে আলোচনা করে যুগের অন্যতম এক সিদ্ধান্ত আমরা নিবো, আমরা সংসদে সংখ্যাগুরু আপনারা না আসলেও তা পাশ হবে কিন্তু আমরা আপনাদের নিয়েই তা করতে চাই" ঠিক যেমন বঙ্গবন্ধুর ভাষণেরই প্রতিফলন, "আমরা সংখ্যায় বেশী হলেও, আপনারা ন্যায্য কথা বললে সেই ন্যায্য কথাই গ্রহণ করা হবে"।

২০১৩ সালে হেফাজতকে মোকাবেলা করা এক কঠিন বিষয় ছিল কিন্তু তিনি যে ক্রাইসিস ম্যান ঠিকই হাজির এবং এক অনন্যতায় কঠিন ভাবে বিদ্রোহের হাত থেকে বেঁচে গেলো আওয়ামী লীগ।

হিলারি ক্লিনটন আসলেন বাংলাদেশে, বাংলাদেশের যুবকদের সাথে দেখা করলেন প্রশ্ন শুনলেন উত্তর দিলেন। সৈয়দ আশরাফ বললেন, "আমাদের দেশের যুবকেরা আমাদের গণ্ডি থেকে বের হতে পারলো না, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা পৃথিবী নাকাল বৈশ্বিক মন্দার জন্য কে দায়ী তা জিজ্ঞেস করে আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের অস্তিত্ব বিলীন করে দেশের রাজনীতিতে কি হবে কি করবে তা জানতে চাইল। দূরদর্শন-হীন যুবকদের দূরদর্শী হতে বললেন। আজ এই সমাজের মানুষ ভাবে কখন কে এসে আমাদের কি করে দিয়ে যাবে অনেকেই সেই অপেক্ষায় কিন্তু সৈয়দ আশরাফ শক্তভাবেই বলে গিয়েছেন, বাংলাদেশকে নিয়ে বিদেশের খেলার দিন দেশ। এখন আর সেই দিন নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় দূতকেও ছাড়লেন না, ড্যান মজিনা কে কাজের মেয়ে মর্জিনা বলে সম্বোধন করলেন আর বললেন কাজের মেয়ে মর্জিনা আর দুই আনার মন্ত্রী নেশাদেশাই ক্ষমতা এনে দিতে পারবে না। এত স্পর্ধা তৃতীয় বিশ্বের দেশের এক নেতার তা ভাবা যায় অন্য দিকে শেখ হাসিনা স্পর্ধা যেন তাক করে দিয়েছিল, ড্যাং মদিনাকে বিদায়ের আগ পর্যন্ত কোন সাক্ষাৎকারই দেয় নাই।

শেখ হাসিনা-সৈয়দ আশরাফ এক অদ্ভুত ভাই-বোনের রসায়ন যা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আর ফিরবে না হয়ত তাই সংসদে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেছিল, "আশরাফ আমাকে বড় বোনের মত আবদার করতো, আমি সব সময় ছোট ভাইয়ের মত দেখতাম"।

২০১৪ সালের নির্বাচনে যখন বিএনপি আসে নাই তখন সৈয়দ আশরাফ বলেছিল, "বিএনপি ট্রেন মিস করেছে, এটা তাদের রাজনীতির অংকে ভুল করেছে"। ঠিক তাই হলো, বিএনপি আর উঠে দাড়াতে পারে নাই, ৯৩ দিনের টানা হরতালে বিএনপি তার ইমেজকে নষ্ট করে দিল।

সৈয়দ আশরাফ দপ্তর-বিহীন মন্ত্রী হলেন, প্রত্যক এমপিকে ২০ কোটি টাকা ব্যক্তিগত ফান্ডে দিতে হবে, এমন বিল পাসে তিনি নারাজ, দুর্নীতিকে সম্পূর্ণ বঞ্চন করেছেন তার সমস্ত জীবনে। তিনি একনেকের বৈঠকে যান নাই, ঘুণে খাওয়া রাজনীতির বলীর শিকার হলেন। বিল পাস হলো কিন্তু দপ্তর-বিহীন মন্ত্রী হলেন। ক্ষমতার লোভ বলে তার কাছে কিছু ছিল না। ক্ষমতা, অর্থ এই গুলা তিনি ছুড়ে ফেলেছিলেন এক অনন্য অসাধারণ সজ্জন বাংলার সত্যবান সৈয়দ আশরাফ। দপ্তর-বিহীন হওয়ার পরের দিনই শ্রমিক লীগের সভায় উপস্থিত হন, কিন্তু তার চোখে মুখে কষ্টের কোন ছাপ বা মন্ত্রিত্ব হারানোর ব্যথায় ব্যথিত নয় বরং আরো উৎফুল্ল। তিনি বললেন, "আমার বাবা বঙ্গবন্ধুর সাথে বেঈমানি করে নাই, সেই রক্তই আমার শরীরে বহমান"। তিনি বুজিয়ে দিলেন, কোন চেয়ার, অবস্থা তার থেকে আওয়ামী লীগকে বিচ্ছুরিত করতে পারবে না। তার রক্ত বিশুদ্ধ এই রক্ত বিসর্জন দিবে কিন্তু বেঈমানি নয়। আর সৈয়দ আশরাফ চিহ্নিত করে গেছেন যে, ত্যাগীরা কখনও আওয়ামী লীগ ছাড়ে না, অভিমান করে কিন্তু আওয়ামী লীগ ছাড়ে না।

সৈয়দ আশরাফ বলে গেছেন, "সত্য গোপন ইতিহাস বিকৃতি থেকে কোন অংশে কম নয়"। অপপ্রচার ও বিভ্রান্ত একটা জাতিকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে তা তিনি ভালো করেই জানতেন আর সেই জন্য তিনি সব সময় সত্য বলাকেই নিজের জীবনের মূলমন্ত্র বানিয়ে নিয়েছিলেন। রাজনীতিবিদদের ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সব সময় সম্মান আর রাজনীতি থেকে আলাদা করেই দেখতেন। রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল মিটিং এ রাজশাহীর এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেছিল, "খালেদা জিয়া রেশমের শাড়ী পড়ে, এত সোনাদানা পড়ে..."

সৈয়দ আশরাফ যখন আসলেন সর্বপ্রথম বললেন,"খালেদা জিয়া রেশমের শাড়ী পড়ে কি না তা রাজনীতির বিষয় নয় বরং এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার "। রাজনীতিতে প্রতিপক্ষকেও সম্মান দেখানোর জায়গা এটাতেই অন্যরা পিছিয়ে।

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে সৈয়দ আশরাফ অন্যতম এক ব্যাকটি। সৈয়দ আশরাফ বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ হিসাবে চীনে সব চেয়ে দীর্ঘতম সফর করেন। তিনি ২৮ দিনের রাষ্ট্রীয় চীন সফর করে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিং পিং কে বাংলাদেশে সফরের এবং বাংলাদেশ-চীন এক নতুন সম্পর্কে উন্নীত করেন। সৈয়দ আশরাফ চীন সম্পর্কে বলেছিলেন, "সময় এখন আর পশ্চিমাদের নেই, নতুন জাগরণ হয়েছে এশিয়ানদের। চীন পৃথিবীর নতুন পরাশক্তি।

আমরা সকলের সাথে বন্ধুত্ব করবো কারো সাথে বৈরিতা নয়"। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও কূটনীতিতে এটা বড় একটা ধমকা ছিল।

আওয়ামী লীগ এর কাউন্সিলের অধিবেশনে শেখ হাসিনা - আশরাফ যা দেখালেন তা আওয়ামী লীগের বাংলাদেশ সৃষ্টির পর এমন কাউন্সিল মনে হয় প্রত্যক্ষ করে নাই। শেখ হাসিনা পাশাপাশি বসে তার হাত টা প্রসারিত করলেন সৈয়দ আশরাফের দিকে, ভাতৃত্বের ভালবাসায় সিক্ত এমন কাউন্সিল বাংলাদেশ মনে হয় আর প্রত্যক্ষ করবে না। ওই দিন সৈয়দ আশরাফ বললেন, আওয়ামী লীগকে কোন দিন আমি একটা দল মনে করি নাই, আওয়ামী লীগ একটি অনুভূতি। বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগে, হাজার হাজার নেতা কর্মীদের ত্যাগে যে অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে, সেই অনুভূতিই হলো আওয়ামী লীগ।

আরো বলেন, আওয়ামী লীগ কোন দিন মরবে না, স্তব্ধ হবে না।

আর নিজেই ওবায়দুল কাদেরের নাম প্রস্তাবে চমক দেন। এমন কেও আছে হাসি মুখে বিসর্জন দিয়েছে নিজের সাধারণ সম্পাদক পদ কিন্তু বনে গেছেন অসাধারণ তার বিজয়া যে বিসর্জনের মধ্যেই।

সৈয়দ আশরাফের জন্য কিশোরগঞ্জের মানুষের আর্তনাদে এক স্তব্ধ-নীরবতায় থমকে গিয়েছিল। তিনি যখন অসুস্থ হয়ে থাইল্যান্ড এ চিকিৎসাধীন এই মানুষদের মর্মমূলের আবেগাস্নাত অনুভূতিতে যে সৈয়দ আশরাফ অধিষ্ঠিত তা বার বার প্রমাণ পেয়েছে। রাজনীতিতে চরম বিরোধীদেরও যদি জিজ্ঞেস করা হয়েছে, একজন সৎ রাজনীতিবিদের নাম বলেন, যার ভিতর দুর্নীতি,অর্থ লোভ, ক্ষমতায় মোহের ছিটা ফোটাও নাই? চোখ বন্ধ করে সৈয়দ আশরাফের নামই এসেছে। ২০১৮ সালে ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে, প্রাথমিকভাবে আওয়ামী লীগের আসন প্রাপ্তিদের তালিকায় কিশোরগঞ্জ-১ আসনে সৈয়দ আশরাফের নাম আসেন যখন তিনি অসুস্থ অবস্থায় থাইল্যান্ড এ চিকিৎসাধীন, সমস্ত মানুষ তাকে ফিরে পাবার আশায় শপথ গ্রহণ পর্যন্ত নিয়ে যায়। কিন্তু তা আর হয় নি, ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে সহকর্মীদের কাঁধে চড়ে বিমান থেকে নামেন এই প্রচণ্ড মেধাবী সজ্জন রাজনীতিবিদ। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় তিল ধারণের জায়গা ছিল না তার জানাযায়। কিশোরগঞ্জ এর ইতিহাসে কোন রাজনীতিবিদের জানাযায় এত সিক্তকরণ অবস্থা হয় নাই। তিনি ফিরবে না, আর ফিরানোর পথ ও নাই কিন্তু তার মত এমন প্রজ্ঞাবান, যশ, মেধাবী ও প্রচণ্ড আস্থাশীল এমন রাজনীতিবিদ খুবই দুষ্কর কারণ তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এমন অকাট্য সেনাপতি যার মননে-মনসায় অস্থি-মজ্জায় অগাধ ভালবাসায়, অন্তহীনতার অবিরতায় গণতন্ত্র,আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা চরমোৎকর্ষে বিদ্যমান ছিলও যা অন্যদের পক্ষে অসম্ভব প্রায়।

সৈয়দ আশরাফ আওয়ামী লীগের অন্য সাধারণ সম্পাদকদের মত নয় যে, নিজের বিসর্জনেও বিজয়া পায়, নেত্রীর মমত্ববোধের প্রসারিত হাত সবাইতো পায় না কারণ সৈয়দ আশরাফ এমন ভাবে সত্যায়িত যার সত্যয়ন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা করেছে। প্রচণ্ড ভালবাসায় অনুকরণীয়, বরণীয় সৈয়দ আশরাফ যেখানে সংজ্ঞায়িত আওয়ামী লীগ, সত্যায়িত সৈয়দ আশরাফ।

লেখক:
আব্দুল্লাহ আল জাবের, সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও পরিচালক সাইবার ৭১।

মোঃ মঞ্জুরুল হক ফাহিম, কান্ট্রি এম্বাসেডর, ইউনিভার্সাল ইয়ুথ মুভমেন্ট।

মন্তব্য করুন

daraz
  • নির্বাচিত কলাম এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সরকার দেশে নব্য বাকশাল কায়েম করেছে : মির্জা ফখরুল
‘সরকার চোরাবালিতে দাঁড়িয়ে, যেকোনো সময় ডুবে যাবে’
‘আ.লীগের সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ’
সন্ত্রাসীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে : কাদের
X
Fresh