রাজধানীর যেসব এলাকায় দাবদাহের প্রবণতা বাড়ছে: গবেষণা
ঢাকায় দাবদাহের প্রবণতা বাড়ছে বলে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, জার্মান রেড ক্রস এবং বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর পরিচালিত এক গবেষণায় জানানো হয়েছে। দাবদাহের কারণে বাড়ছে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়াসহ নানা ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
রাজধানীর বেশকিছু এলাকায় দাবদাহ বাড়ছে। এলাকাগুলো হচ্ছে- বাড্ডা, গুলশান, কামরাঙ্গীরচর, মিরপুর, গাবতলি, গোড়ান, বাসাবো, টঙ্গী, শহীদ নগর, বাবুবাজার, পোস্তগোলা, জুরাইন, হাজারিবাগ, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, কুর্মিটোলা, আজমপুর, উত্তরা, মোহাম্মদিয়া হাউজিং, আদাবর, ফার্মগেট, মহাখালী, নাখালপাড়া ইত্যাদি। গড়ে এসব এলাকায় ২৯ থেকে ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকে যা গরম বাড়লে দাবদাহের পর্যায়ে চলে যায়।
গবেষণা দলটির একজন বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ফোরকাস্ট বেজড অ্যাকশনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর শাজাহান বিবিসিকে বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বজ্রপাত বেড়েছে এবং তাপমাত্রা বাড়ছে। দাবদাহকে দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করে এ নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা দরকার। দাবদাহের কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ার পাশপাশি মানুষের কর্মসময়কাল কমছে।
চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল ২৬ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রার ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড হয়েছে এবং ওইদিন দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিলো ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসেবে এর আগে ২০১৪ সালে চুয়াডাঙ্গায় ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মতে একটি জায়গার দৈনিক যে গড় তাপমাত্রা সেটি ৫ ডিগ্রি বেড়ে গেলে এবং সেটি পরপর পাঁচদিন চলমান থাকলে তাকে হিটওয়েভ বলা হয়। সার্বিকভাবে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির ওপরে ওঠলে শরীর নিজেকে ঠাণ্ডা করার যে প্রক্রিয়া সেটিকে বন্ধ করে দেয়। যে কারণে এর বেশি তাপমাত্রা হলে তা স্বাস্থ্যবান লোকের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া বিভাগে তাপমাত্রা বেড়ে ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি হলে সেটিকে মৃদু হিটওয়েভ, ৩৮-৪০ ডিগ্রি হলে মধ্যম মাত্রার হিটওয়েভ, ৪০-৪২ডিগ্রি হলে তীব্র বা মারাত্মক এবং ৪২ ডিগ্রির বেশি হল অতি তীব্র হিটওয়েভ হিসেবে বিবেচনা করে।
সে হিসেবে বাংলাদেশে হিটওয়েভ বা দাবদাহ শুরু হয় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে। তবে এটা আসলে পুরোটা নির্ভর করে মানবদেহের খাপ খাইয়ে নেয়ার সক্ষমতার ওপর।
রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, জার্মান রেড ক্রস এবং বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর পরিচালিত গবেষণা প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে তিনটি সময়কালে ভাগ করা হয়েছে- ঠাণ্ডা ও শুষ্ক অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি, মার্চ থেকে মে গরমকাল এবং জুন থেকে অক্টোবর মৌসুমি বৃষ্টিপাতের সময়।
গবেষণায় ৪৪ বছরের তাপমাত্রার একটি বিশ্লেষণে দেখা গেছে এপ্রিল, মে ও জুন মাসে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি গরম অনুভূত হয়।
আবার অগাস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দেশের কোন কোন জায়গায় বেশ গরম অনুভূত হলেও সেটি তাপপ্রবাহ বা হিটওয়েভের পর্যায়ে যায় না।
এফএ
মন্তব্য করুন