• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

জনপ্রিয় খাবার না হলেও হাঙর কমছে যে কারণে

আরটিভি নিউজ ডেস্ক

  ০১ মে ২০২১, ২১:০৬
জনপ্রিয় খাবার না হলেও হাঙর কমছে যে কারণে

হাঙরের মাংস, চামড়া ও মল বাংলাদেশে জনপ্রিয় খাবার না হলেও বঙ্গোপসাগরে হাঙর কমছে। হাঙর ধরা নিষিদ্ধ করলেও বাড়ানো সম্ভব হয়নি। উল্টো দিনে দিনে হাঙর কমছে। এর পেছনে কয়েকটি কারণকে দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীদের মতে, হাঙর শিকার নিষিদ্ধ হওয়ার পরও জেলেরা বঙ্গোপসাগরে চিংড়ি ও ছোট মাছ ধরার সঙ্গে হাঙরের বাচ্চাও শিকার করছেন। হাঙরের বাচ্চা শিকার করায় দিনে দিনে বঙ্গোপসাগরে প্রাণিটি কমছে।

কয়েকজন মৎস্য ব্যবসায়ী বলেন, বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে হাঙর আটকা পড়ে। হাঙর প্রাণী শিকার নিষিদ্ধ হলেও জালে আটকা পড়লে জেলেরা তা ছেড়ে দেয় না। লুকোচুরি করে হাঙর কেটে বাজারে বিক্রি করেন। কেটে টুকরো টুকরো করে প্রতি কেজি ১ থেকে ২ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হয়।

গত শুক্রবার পটুয়াখালীর রাবনাবাদ নদীর মোহনা থেকে ২০ টন হাঙর আটক করেছে বাংলাদেশের কোস্টগার্ড। কিন্তু স্থানীয়ভাবে হাঙর জনপ্রিয় কোন মাছ বা খাবার না হলেও কেন হাঙর শিকার করা হচ্ছে?

বঙ্গোপসাগরে হাঙরের বর্তমান অবস্থা এবং এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব' শিরোনামে ২০১১ সালে একটি গবেষণা নিবন্ধ লিখেছেন বর্তমানে চট্টগ্রামের জেলা মৎস্য দপ্তরের সহকারী পরিচালক বিক্রম জীৎ রায়। তখন তিনি সামুদ্রিক মৎস্য জরিপ ব্যবস্থাপনা ইউনিটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ছিলেন।

বিক্রম জীৎ রায় বিবিসি বাংলাকে বলেন, ২০০৮-২০০৯ সালে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পটুয়াখালী, বরগুনা জেলার সাগর উপকূলে জেলেরা জাল ও বড়শি দিয়ে ৩ হাজার ৯৩৩ মেট্রিকটন হাঙর শিকার করেছিল। হাঙর শিকার করে বাণিজ্যিকভাবে হাঙরের মাংস, চামড়া, পাখনা সিঙ্গাপুর, হংকং, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশে রপ্তানি করা হতো। হাঙর ধরা নিষিদ্ধ হলেও গত ১০ বছর আগেও যে সংখ্যায় হাঙর ছিল, এখন তা অনেক কমে এসেছে।

বাংলাদেশে হাঙরের প্রজাতিগুলোর মধ্যে ইয়েলো ডগ শার্ক (টুইট্যা হাঙ্গর), মিল্ক শার্ক (কামোট হাঙ্গর), হ্যামারহেড হাঙর (হাতুড়ী হাঙর), বুল শার্ক (বলি হাঙ্গর) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। বুল শার্ক ছাড়া এসব হাঙর ততোটা হিংস্র নয়।

হাঙর শিকারের বিষয়ে বিক্রম জীৎ রায় বলেন, হাঙর শিকার নিষিদ্ধ সত্ত্বেও স্থানীয় কিছু কিছু এলাকার মানুষ হাঙরের মাংস ও শুটকি খেতে পছন্দ করে। এছাড়া হাঙরের মাংস, পাখনা, চামড়া এবং হাড়ের বিশ্বব্যাপী চাহিদা রয়েছে। পাখনা দিয়ে তৈরি সুপ হংকং, তাইওয়ান ও চীনের অভিজাত হোটেলে বেশ জনপ্রিয়। হাঙরের পাখনায় মার্কারি নামক উপাদান থাকায় এসব দেশে নব দম্পতিকে হাঙ্গরের সুপ খাওয়ানো হয়।

হাঙরের লিভার ও নাড়িভুঁড়ি থেকে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ তৈল সংগ্রহ করে তা পোল্ট্রি শিল্পে, রং কারখানায়, বার্নিশ ও কসমেটিক্স ও ঔষধ শিল্পে, ট্যানারিতে চামড়া নরম করতে ব্যবহৃত হয়।

কামোট, বলি হাঙর এর চামড়া দিয়ে দামি শিরিষ কাগজ তৈরি করা হয়। হাঙরের পিঠের চামড়া বাদ্যযন্ত্র ও বিদেশে হ্যান্ডব্যাগ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। হাড় কসমেটিক্স ও শোপিজ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

হাঙর বাচ্চা ততোটা দেয় না এরপরও বিভিন্ন সময়ে চিংড়ি ও ছোট মাছ শিকারের জালে বাচ্চা হাঙর ধরা পড়ে মারা যাচ্ছে। কিন্তু একটা হাঙর বড় হতে প্রায় ১৫/২০ বছর লাগে। এসব কারণে হাঙরের সংখ্যা কমছে বলে মনে করেন বিক্রম জীৎ রায়।

এফএ

মন্তব্য করুন

daraz
  • জাতীয় এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh