• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

প্রাইভেটকার চলছে সারি সারি, রিকশা চললেই দোষ

আরটিভি নিউজ

  ২২ এপ্রিল ২০২১, ১৯:৫০
প্রাইভেটকার চলছে সারি সারি, রিকশা চললেই দোষ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের দেওয়া কঠোর লকডাউনে সড়কে প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করলেও সেদিকে খুব একটা নজর নেই পুলিশের। কিন্তু পেটের দায়ে রিকশা চালাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন রিকশাচালকরা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

রেফাত সিদ্দিকী নামে একজন তার ফেসবুকে লেখিছেন, রিক্সা উল্টান কেনো? একটা প্রাইভেটকার উল্টে বা রেকার করে দেখান না কত স্বচ্ছতার সাথে চাকরী করেন, কত বড় বুকের পাটা???

চলতি মাসের ১৪ এপ্রিল থেকে সরকারের ঘোষিত লকডাউনে পুলিশ রাস্তার মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়েছে। লকডাউনের প্রথম দিনে রাজধানীজুড়ে প্রাইভেটকার ও রিকশা চলাচল সীমিত দেখা গেলেও দিনে দিনে চলাচল বাড়তে থাকে। যানবাহন চলাচলে মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা থামিয়ে মামলা দেওয়া হচ্ছে। তবে ছাড় পাচ্ছে অনেক প্রাইভেটকার। ভুক্তভোগীদের প্রশ্ন– লকডাউন কী শুধু গরিব ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের জন্য?

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় এক শারীরিক প্রতিবন্ধী রিকশাচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় পুলিশের একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, রিকশাটির সিট নিয়ে আটকের চেষ্টা করছিল পুলিশ। অভিযোগ আছে, রিকশাচালকের গায়েও হাত তোলেন দায়িত্বরত ওই পুলিশ কনস্টেবল।

পেটের দায়ে সরকারের ঘোষিত লকডাউনের নিয়ম-নীতি ভেঙে সড়কে নেমেছে সিএনজি, রিকশা ও মোটরসাইকেল চালকরা। তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে এটি জানি কিন্তু কতদিন আর বাড়িতে বসে থেকে খাবো। করোনায় সব বন্ধ, পেট তো বন্ধ নেই, পেটে ক্ষুধা লাগলে কামড় দেয়। পেটে ক্ষুধার কামড় শুধু আমার একার নয়, পুরো পরিবারের। কতদিন আয় রোজগার ছাড়া থাকবো।

মুগদা হাসপাতালের বিপরীত পাশে পুলিশের চেকপোস্ট সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন রিকশা চালক ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, রাস্তা দিয়ে প্রাইভেটকার, ট্রাক, কন্টেইনারসহ বড় বড় গাড়ি সব যাইতে দেয় পুলিশ। শুধু আমাদের মতো গরিবদেরই ধরে। লকডাউন মনে হয় শুধু গরিবের।

মতিঝিল এলাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন ফরিদ প্রধান তিনি প্রতিদিন সকাল ১০টায় অফিসে যান। গণপরিবহন না থাকায় রিকশায় অফিসে চলাচল করেন। পুলিশের চেকপোস্টে রিকশা আটকানো হয় বিধায় তাকে বাধ্য হয়ে কিছু দূর রিকশা এসে চেকপোস্টের আগেই নেমে যেতে হয়। ফরিদ প্রধান বলেন, লকডাউনে রাস্তায় গণপরিবহন বাদে সব পরিবহন চলছে। সাধারণ মানুষের জন্য চলাচল কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি গণভবনের সামনে একটি দুর্ঘটনার উদাহরণ দিয়ে সার্জেন্ট ঝোটন শিকদার বলেন, গতকালই গণভবনের সামনে একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। মূল সড়কে চলে আসা একটি ব্যাটারিচালিত রিকশাকে বাঁচাতে গিয়ে একটি ট্রাক ধাক্কা মারে প্রাইভেটকারে। তাহলে এভাবে রিকশা যদি সড়কে চলে আসে বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত রিকশা তখন তো দুর্ঘটনার আশংকাও থাকে।

সব যানবাহনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং কোনো যানবাহনের বিষয়েই ‘শ্রেণিবিন্যাস’ করা হয় না বলে জানান ডিএমপির জনসংযোগ ও মিডিয়া বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ইফতেখারুল ইসলাম।

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা যানবাহনে কোনো ক্ল্যাসিফিকেশন করি না যে প্রাইভেটকার ধরবো না কিন্তু সিএনজি-রিকশা ধরবো। বিষয়টা মোটেও এমন না। ব্যাটারিচালিত রিকশার ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনাই আছে। আমরা শুধু সেটি বাস্তবায়ন করছি।

এফএ

মন্তব্য করুন

daraz
  • জাতীয় এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh