• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বাঁশখালীতে পুলিশের গুলিতে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় ৬৮ নাগরিকের বিবৃতি

আরটিভি নিউজ

  ১৭ এপ্রিল ২০২১, ২২:১৮
বাঁশখালীতে পুলিশের গুলিতে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় ৬৮ নাগরিকের বিবৃতি

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বেতন-ভাতার দাবিতে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পাঁচ শ্রমিক নিহত ও অন্তত ১৩ জন আহতের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ৬৮ নাগরিক।

শনিবার (১৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা জানান, বকেয়া মজুরির দাবিতে সমাবেশরত নিরীহ শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণ একটি গর্হিত অপরাধ ও গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য লজ্জাকর। শ্রমিকদের ওপর গুলি চালানোর ঘটনা আইনের শাসনের পরিপন্থী। যেখানে জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের কাজ, সেখানে এমন নির্মম ও অবিবেচনাপ্রসূত হত্যাকাণ্ড ক্ষমতার অপপ্রয়োগ এবং চরম অনাচারের শামিল।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন অনুসারে পুলিশ কোনো অবস্থাতেই নিরীহ শ্রমিকদের উপর গুলি চালানোর অনুমতি পেতে পারে না। পুলিশ প্রবিধান ১৯৪৩-এর বিধান অনুসারে নিরাপত্তার জন্য হুমকিমূলক সমাবেশ অন্য কোনোভাবে ছত্রভঙ্গ না করা গেলে সর্বশেষ পন্থা হিসেবে ন্যূনতমভাবে শক্তি প্রয়োগের বিধান রয়েছে এবং সেক্ষেত্রে গুলি চালানোর আগে বার বার সাবধান করতে হবে এবং তা চালাতে হবে কাউকে হত্যা করা না বরং সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার উদ্দেশ্য থেকে। আমরা এই আইনি বিধান বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানতে দেখিনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আইন অমান্য করার দায় সাধারণ নাগরিকদের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়।

বিবৃতিদাতারা এই হত্যাকাণ্ড ও গুলিবর্ষণের ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার-বিভাগীয় তদন্ত দাবি এবং দোষী পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

তারা বলেন, বাঁশখালি বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে এর আগে ২০১৬ ও ২০১৭ সালেও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে এবং সেসব ঘটনায় কমপক্ষে ৬ জন নিহত ও শতাধিক আহত হলেও ওই হত্যাকাণ্ডের কোন সুষ্ঠু বিচার হয়নি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, করোনামহামারির এই দুর্যোগে শ্রমজীবী মানুষের জীবন-জীবিকা যেখানে এমনিতেই দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে, সেখানে মজুরি না দেয়া শ্রম আইন ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এস আলম গ্রুপের মতো ধনী শিল্পগোষ্ঠী কেন শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেনি তার যথাযথ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আমরা সকল শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি অবিলম্বে পরিশোধ করার দাবি জানাই। একইসঙ্গে শ্রমিকদের মজুরি দিতে অবহেলা করার কারণে এস. আলম গ্রুপের সঙ্গে কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সরকারের যে চুক্তি হয়েছে তা বাতিলের দাবি জানাই।

বিবৃতিতে সই করেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, ব্র্যাকের নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশি কবীর, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এর প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সি আর আবরার, আসিফ নজরুল, রোবায়েত ফেরদৌস, প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ব্যঙ্গচিত্রশিল্পী আহমেদ কবির কিশোর, সাধনার আর্টিস্টিক ডিরেক্টর লুবনা মরিয়ম, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব চাইল্ড হেলথের ডা. নায়লা জেড খানসহ ৬৮ নাগরিক।

এফএ/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • জাতীয় এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh