জুলাইয়ে ২৯৩ সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ৩৫৬

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই জুলাই মাসে দেশে ২৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৫৬ জন নিহত এবং ৩৪১ জন আহত হয়েছেন। যেখানে জুন মাসে ২৯৭টি দুর্ঘটনায় ৩৬১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এই হিসাবে জুলাই মাসে দুর্ঘটনা কিছুটা কমেছে। নিহতদের মধ্যে নারী ছিলেন ৬৪ জন এবং শিশু ছিল ৩৫ জন। একই সময়ে ১৬টি নৌ-দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৭ জন এবং নিখোঁজ হয়েছেন ২১ জন। আর রেলপথে চারটি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে চারজনের।

বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত সড়ক দুর্ঘটনা সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদনটি তৈরি করা বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি উভয়ই সামান্য কমেছে। দুর্ঘটনায় ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী কর্মক্ষম মানুষ নিহত হয়েছেন ২৬৮ জন, অর্থাৎ ৭৫.২৮%। দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি যে সামান্য পরিমাণ কমেছে- তা পরিস্থিতির উন্নতির ক্ষেত্রে কোনো টেকসই লক্ষণ নির্দেশ করছে না। গ্রামীমের সড়কের তুলনায় মহাসড়কে দুর্ঘটনার হার ক্রমেই বাড়ছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মহাসড়কে পণ্যবাহী যানবাহনের বেপরোয়া গতি এবং মোটরসাইকেল ও স্বল্পগতির যানবাহনের অবাধ চলাচল এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করার ক্ষেত্রে নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো এবং গণপরিবহন খাতের সুশাসন উভয়ই জরুরি। এক্ষেত্রে প্রয়োজন ‘সড়ক পরিবহন আইন’ বাস্তবায়নে সরকারের কোঠর হতে হবে।

জুলাই মাসে যদিও দুর্ঘটনা কম, তারপরেও সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। ১০৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯৮ জন, যা মোট নিহতের ২৭.৫২ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৬.৫১ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ৮৪ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২৩.৫৯ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৩ জন, অর্থাৎ ১৪.৮৮ শতাংশ এবং ১৬টি নৌ-দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ও ২১ জন নিখোঁজ হয়েছেন। চারটি রেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন চার জন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১১৬টি (৩৯.৫৯ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ৯৮টি (৩৩.৪৪ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৪৮টি (১৬.৩৮ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে এবং ৩১টি (১০.৫৮ শতাংশ) শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে।

বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে ২৩.৮৯ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪.৬৭ শতাংশ,রাজশাহী বিভাগে ১৫ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ৮.৮৭ শতাংশ,ময়মনসিংহ বিভাগে ১০.২৩ শতাংশ , সিলেট বিভাগে ৮.৫৩ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ৯.৫৫ শতাংশ,এবং রংপুর বিভাগে ৯.২১ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

এসএ/এমকে