দুটি বই নিষিদ্ধ ও বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ
ধর্মীয় ও ব্যক্তি স্বার্থে আঘাত করে এমন অভিযোগে দুটি বই নিষিদ্ধ ও বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বই দুটি হলো- দিয়ার্ষি আরাগের ‘নানীর বাণী’ ও ‘দিয়া আরেফিন’।
বুধবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিতভাবে এই আদেশ দেন।
এই ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র সচিব, ঢাকার ডিসি ও নারায়ণগঞ্জের ডিসিকে আদেশ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বই দুটি বইমেলায় বিক্রি না করতে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালককে আদেশ দেয়া হয়েছে।
এসএস
মন্তব্য করুন
জামিন পেলেন বিএনপি নেতা আমান
১৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
দুর্নীতির এই মামলায় বুধবার (২০ মার্চ) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ আমানের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
তবে, জামিন পেলেও আমানকে বিদেশ যেতে আদালতের অনুমতি নিতে হবে।
আদালতে আমানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের বিবরণীতে তথ্য গোপনের দায়ে ২০০৭ সালের ২১ জুন আমানকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী সাবেরাকেও ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত।
এরপর এই দম্পতির আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট তাদের দুর্নীতির অভিযোগ থেকে খালাস দেন। কিন্তু ২০১৪ সালের ২৬ মে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল করে তাদের আপিলের ওপর নতুন করে শুনানির নির্দেশ দেন।
সম্প্রতি বিএনপির এই নেতার করা আপিল খারিজ করে বিচারিক আদালতের সাজার রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। এরপর গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত আমানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ১২ সেপ্টেম্বর ১৩ বছরের সাজার বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন আমান। আপিল আবেদনে তিনি খালাস চাওয়ার পাশাপাশি জামিন আবেদনও করেন।
আসামিপক্ষকে যাতায়াত ভাড়া দিতে পরীমনিকে আদালতের নির্দেশ
মারধর ও যৌন হয়রানির মামলায় সাক্ষ্য শেষ না করে বার বার সময় চাওয়ায় আসামিদের যাতায়াত ভাড়া এক হাজার টাকা দিতে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২০ মার্চ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক শাহানা হক সিদ্দিকা পরীমনির আইনজীবীকে এই আদেশ দেন।
এদিন পরীমনির অসমাপ্ত সাক্ষ্য শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি আদালতে হাজির হননি। তার পক্ষে আইনজীবী জয়া রাণী দাশ সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাতে সময়ের আবেদন করেন। সেখানে বলা হয়, পরীমনি সিনেমার শুটিংয়ের জন্য ভারতে থাকায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি।
অন্যদিকে মামলার আসামি ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদের আইনজীবী আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল পরীমনির অসমাপ্ত সাক্ষ্য শেষ করার আবেদন করেন।
তিনি বলেন, ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর পরীমনি সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেন। এরপর ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি, ৬ মার্চ ও ২৩ মে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন পরীমনি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। ২৪ জুলাই আংশিক সাক্ষ্য দেন। এরপর ১৩ সেপ্টেম্বর এবং চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি আবারও অনুপস্থিত থাকেন। অবশিষ্ট সাক্ষ্য দিতে পরীমনির অবহেলায় আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে। আসামিরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। পরীমনি সাক্ষ্য শেষ না করলে বিঘ্নিত হবে। আসামিপক্ষ অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তিনি পরীমনির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করার আদেশ প্রার্থনা করেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক ‘ন্যায়বিচারের স্বার্থে’ পরীমনিকে ‘শেষবারের মত’ সময় দেন। পাশাপাশি আসামিদের যাতায়াত ভাড়া হিসেবে এক হাজার টাকা করে দিতে নির্দেশ দেন পরীমনিকে।
এ মামলার তিন আসামি উত্তরা ক্লাবের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদ, তুহিন সিদ্দিকী অমি ও শহিদুল আলম। আবাসন ব্যবসায়ী নাসির ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। অমি ও শহিদুল আলমও বোট ক্লাবের সদস্য ছিলেন।
২০২১ সালের ৮ জুন পরীমনি সাভারের বিরুলিয়ায় তুরাগ তীরে ওই ক্লাবে হেনস্তার শিকার হওয়ার অভিযোগ তুললে শোরগোল পড়ে যায়। ১৩ জুন রাতে পরীমনি এক ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই। এরপর ১৪ জুন নাসির উদ্দিন ও অমির নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত চার জনকে আসামি করে সাভার থানায় মামলা করেন পরীমনি।
২০২২ সালের ১৮ মে তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
জামিন পেতে ধর্ষকের জমি লিখে দিতে হবে জন্ম নেওয়া সন্তানকে
ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুর পিতৃপরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। সেইসঙ্গে জন্ম নেওয়া শিশু সন্তানের ভরনপোষণ দিতে বলা হয় ২১ বছর পর্যন্ত। তবে আসামি সেই রায় না মেনে আপিল করেন হাইকোর্টে, চান জামিনও। তবে শুনানিতে সন্তানের স্বীকৃতি ও সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি হলে মিলে জামিন।
বুধবার (২০ মার্চ) দুই মাসের মধ্যে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার কথা ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহুরুল হকের বেঞ্চে বিষয়টি শুনানির জন্য উঠে।
আসাদুলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নুরুল ইসলাম সুজন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মাহফুজুল আলম মুন্না। এ ছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল আজিজ মিয়া মিন্টু ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান লিখন।
আইনজীবীদের তথ্য অনুযায়ী, রংপুরের মিঠাপুকুরের আসাদুলের সঙ্গে তার চাচাতো বোনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হন ওই নারী। বিয়ের জন্য চাপ দিলে আসাদুল সম্পর্ক ও অনাগত সন্তানের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর আসাদুলকে আসামি করে ২০০৭ সালে ধর্ষণের মামলা করেন ভুক্তভোগী।একপর্যায়ে আদালতের আদেশে শিশুর পিতৃপরিচয় নিশ্চিতে ডিএনএ টেস্ট হয়। এতে জানা যায়, ভুক্তভোগীর গর্ভে জন্ম নেওয়া ওই ছেলে শিশুর বাবা আসাদুল। শিশুটির বয়স এখন ১৫ বছর। ২০১৬ সালের রংপুরের বিচারিক আদালত এক রায়ে আসাদুলকে যাবজ্জীবন সাজার রায় দেয়। এরপর সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন তা আইনজীবীরা। এর ধারাবাহিকতায় জামিনের আবেদনের পর গত জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে জামিন পান আসামি।
আইনজীবীদের তথ্য অনুযায়ী আরও জানা যায়, দুই মাস আগে যখন জামিন হয় তখন হাইকোর্ট শর্ত দিয়ে বলেছিলেন, ওই শিশু সন্তানের ভরণপোষণ ও ভবিষ্যতের দায়িত্ব নিতে হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত শুনতে বুধবার ধার্য করেছিল হাইকোর্ট। দুপক্ষের আইনজীবীসহ স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন।
ভোক্তভোগী নারীর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, উভয়পক্ষের আইনজীবী ও স্বজনের উপস্থিতিতে বুধবার আদালত নির্দেশ দেন ৫ বিঘা জমি লিখে দিতে হবে। দলিল দাখিলের পর পরবর্তী আদেশ দেওয়া হবে।
তবে ভোক্তভোগী নারী দাবি করেন আসাদুলের সম্পত্তি আরও বেশি রয়েছে। পরে আদালত সিদ্ধান্ত দেন তার প্রাপ্ত সম্পত্তির অর্ধেক লিখে দিতে হবে। আর সম্পত্তি না লিখে দিলে তার জামিন বাতিল হবে। আর এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২১ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।
সুপ্রিম কোর্ট ভবনের ছাদ চুয়ে পানি, বিচারকাজে বিঘ্ন
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারকাজ পরিচালনার সময় ছাদ চুয়ে পানি পড়েছে বিচারকদের আসনে। এতে প্রধান বিচারপতিসহ ৫ বিচারপতি এজলাস ছেড়ে চলে যাওয়ায় সাময়িক বন্ধ থাকে বিচারকাজ।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বিচারকাজের শুরু থেকেই বিচারকদের ডানপাশে বসা বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের আসনে ছাদ থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় পানি পড়ছিল। বিষয়টি নিজের বেঞ্চ অফিসারকে জানান তিনি। এক পর্যায়ে পানি পড়ার ঘটনা প্রধান বিচারপতিরও নজরে আসে। পরে ৯টা ৪৪ মিনিটে প্রধান বিচারপতিসহ ৫ বিচারপতি এজলাস ছেড়ে খাস কামরায় চলে যান।
পরে রেজিস্টার জেনারেলসহ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তারা ছুটে যান এজলাসে। দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা থেকে সরিয়ে ফেলা হয় বিচারপতিদের আসন। ঘটনার প্রায় ১৮ মিনিট পর এজলাসে পুনরায় বিচারকাজ শুরু হয়।
এদিকে দ্বিতীয় দফায় বিচারকাজ শুরু হওয়ার পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ছাদটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে, ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে ভালো করে দেখানো উচিত।
এতে সহমত পোষণ করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ছাদের অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ, আজকে থেকে ইঞ্জিনিয়াররা কাজ শুরু করবে। এ ব্যাপারে অ্যাটর্নি জেনারেলকেও সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, এর আগেও আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে ছাদ থেকে পানি, পলেস্তারা পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এরপরও অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে আপিল বিভাগে বিচারকাজ পরিচালিত হয়ে আসছে।
ট্রান্সকমের ৩ কর্মকর্তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
ট্রান্সকম গ্রুপের সিইও সিমিন রহমান এবং বর্তমান চেয়ারম্যান মা শাহনাজ রহমানসহ তিনজনকে দেশে প্রবেশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন চেম্বার আদালত।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) চেম্বার আদালত এই নির্দেশ দেন।
গ্রুপটির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত লতিফুর রহমানের ছোট মেয়ে শাযরেহ হকের করা প্রতারণা মামলায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। তার বড় বোন, ট্রান্সকম গ্রুপের বর্তমান সিইও সিমিন রহমান এবং গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান, তাদের মা শাহনাজ রহমানসহ ট্রান্সকমের আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেন শাযরেহ হক।
শাযরেহ হকের অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, অবৈধভাবে ট্রান্সকম গ্রুপের শেয়ার স্থানান্তর, লতিফুর রহমানের টাকা বেআইনিভাবে এক হিসাব থেকে অন্য হিসাবে স্থানান্তর করে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এর আগে পিবিআই এই কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করে ভিন্ন ভিন্ন মামলায় রিমান্ড চাইলে আদালত তা নাকচ করে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেন। তবে তাদের ২৫ ফেব্রুয়ারি পাসপোর্ট আদালতে দাখিল করার শর্ত দেওয়া হয়। কিন্তু তারা এ শর্ত পালন না করায় প্রত্যেকের জামিন বাতিল করেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
ট্রান্সকম গ্রুপটির অধীনে পরিচালিত কোম্পানিগুলোর মধ্যে এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস, ট্রান্সকম বেভারেজেস, ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন, ট্রান্সকম কনজিউমার প্রোডাক্টস, ট্রান্সকম ফুডস, ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকস, ট্রান্সক্রাফট, মিডিয়াস্টার অন্যতম।
সাবেক সচিব প্রশান্ত কুমারকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
সাবেক পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায়ের অবৈধ সম্পদের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (২৪ মার্চ) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন প্রশান্ত কুমার। তারপক্ষে জামিন শুনানি করেন রফিকুল হোসেন। দুদকের পক্ষে মীর আহাম্মদ আলী সালাম জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রোববার (২৪ মার্চ) দুদকের আইনজীবী মীর আহম্মেদ সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ড. প্রশান্ত কুমার রায়ের বাড়ি খুলনার বাটিয়াঘাটা থানার গোপ্তমারী গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত বিমলেন্দু রায়। বর্তমানে তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাদিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৫ নম্বর রোডের ৩ নম্বর বাড়ির এ-৫ ফ্ল্যাটে থাকেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সাবেক সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায় একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’র প্রকল্প পরিচালক ছিলেন। দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তিনি এক কোটি ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৮১৬ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেন। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা দেওয়া ছাড়াও অবৈধ উপায়ে অর্জিত ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এক কোটি ২৫ লাখ ৪০ হাজার ২৪৭ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সোমবার (৫ মে) এ মামলা দায়ের করা হয়।
ড. প্রশান্ত কুমার রায়ের উল্লেখযোগ্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে— খুলনার বটিয়াঘাটা থানায় দুই দশমিক চার একর জমি। যা এক কোটি ৬৫ লাখ টাকায় কিনেছেন। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাদিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৫ নম্বর রোডের ৩ নম্বর বাড়ির যে ফ্ল্যাটে (এ-৫) থাকেন সেটা কিনেছেন ৪২ লাখ তিন হাজার ৮৪১ টাকায়। মোহাম্মদপুরে ৩৭৯, পুলপাড় রোড, পূর্ব জাফরাবাদে ১২০০ বর্গফুটের আরেকটি ফ্ল্যাট কিনেছেন ৫০ লাখ টাকায়।
রাজধানীর ১৪৩ গ্রিন রোডের ঠিকানায় গ্রিন সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় ৩০০ বর্গফুটের একটি কক্ষ কিনেছেন ১১ লাখ টাকায়। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমির ওপর দ্বিতীয়তলা ভবন নির্মাণ করেছেন। ২৩ লাখ টাকায় একটি জাপানি প্রিমিও কার কিনেছেন। ১৬ লাখ টাকায় কিনেছেন একটি এক্সক্যাভেটর (ভেকু)।
এছাড়াও সোনালী ব্যাংকের রমনা করপোরেট শাখায় ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র রয়েছে। স্বর্ণালংকার রয়েছে ১০ লাখ টাকার। ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও আসবাবপত্র রয়েছে সাত লাখ টাকার। ২০২২-২৩ অর্থ বছর শেষে তিনি এক কোটি ৪১ লাখ টাকা ঋণ বাদে তার নিট সম্পদ রয়েছে এক কোটি ৮৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৬৪ টাকার।
২০২৩ সালের ৫ জুন জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান। সাবেক এই সচিবের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত এক কোটি ২৫ লাখ ৪০ হাজার ২৪৭ টাকার সম্পদ রাখার অভিযোগ আনা হয়।
বিচারপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি, আটকে গেল মেয়রের জামিন
উচ্চ আদালতের বিচারপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া জামিন আদেশ তৈরির ঘটনায় বগুড়ার এক মেয়রের জামিন আগামী ২৭ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
সোমবার (২৫ মার্চ) আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম (৪৮)। উচ্চ আদালতের বিচারপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া আদেশ তৈরি করেছিলেন। দুদকের তদন্তেও তার জালিয়াতির ঘটনা প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে তার জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছিলেন দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। মামলার পলাতক আসামিরা হলেন পৌরসভার সচিব কার্তিক চন্দ্র দাস ও শিক্ষানবিশ আইনজীবী আবদুল মজিদ।
এর আগে গত ২১ মার্চ মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে জামিন দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।
আদালত সূত্র জানায়, দুপচাঁচিয়া পৌর মেয়র বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলমসহ তিন জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকে মামলা হয়। এরপর আসামিরা হাইকোর্টের ফৌজদারি মিস কেসের ভুয়া আদেশ সৃষ্টি করে সেটি বগুড়ার স্পেশাল জজ আদালতে দাখিল করে ওই মামলার বিচার কার্যক্রম ১০ বছর স্থগিত করান। পরে ওই আসামিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়।