‘রাজারবাগ পীরের বিষয়ে সিটিটিসি-সিআইডি-দুদকের তদন্ত চলবে’
রাজধানীর রাজারবাগের ‘পীর’ পরিচয় দেওয়া দিল্লুর রহমান ও তার প্রতিষ্ঠানের সম্পদ নির্ণয়, সম্পদের উৎস এবং তার পৃষ্ঠপোষকতায় কোনো জঙ্গি সংগঠন আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে পূর্বের আদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্টের আপিল বিভাগ। তার বিষয়ে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট, অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত চলবে বলে জানা গেছে।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতের জন্য যে আবেদন করা হয়েছিল, আজ মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) তা খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। আর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুরাদ রেজা।
পরে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘আবেদন খারিজ মানে হাইকোর্টের আদেশ বহাল। ওই দরবার শরীফের পীরের বিরুদ্ধে দুদক আর পুলিশের তদন্ত চলমান থাকবে।’
দেশের ছয়টি জেলায় ৩৪টি মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ এনে রাজারবাগের পীর দিল্লুর ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে আট ব্যক্তি গত মাসে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল ছাড়াও পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট, অপরধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তিনটি নির্দেশনা দেয়।
প্রথম নির্দেশনা- পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটকে নির্দেশ দেওয়া হয় কথিত পীর দিল্লুর রহমান ও তার পৃষ্ঠপোষকতায় কোনো জঙ্গি সংগঠন আছে কি না, সে বিষয়ে আগামী ৩০ নভেম্বরের আগে আদালতে প্রতিবেদন দিতে হবে।
দ্বিতীয় নির্দেশনা- দুদককে নির্দেশ দেওয়া হয়, পীর দিল্লুর ও তার প্রতিষ্ঠানের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব সম্পদ রয়েছে, তা নির্ণয়ের পশাপাশি সম্পদের উৎস খতিয়ে দেখে ৩০ নভেম্বরের আগে আদালতে প্রতিবেদন দিতে হবে।
তৃতীয় নির্দেশনা- আর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেওয়া হয় রিট আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে যারা হয়রানিমূলক মামলা করেছেন, তাদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে হবে।
হাইকোর্টের এসব আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন মফিজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি, যিনি রিট আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে করা একটি মামলার বাদী।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর আবেদনটি চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আদালত হাইকোর্টের আদেশে হস্তক্ষেপ না করে আবেদনটি ২৪ অক্টোবর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠায়। গত রোববার (২৪ অক্টোবর) আপিল বিভাগে আবেদনটির ওপর শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার আদেশ হলো।
কেএফ/টিআই
মন্তব্য করুন