‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলাম আবারও ৪ দিনের রিমান্ডে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে রাজধানীতে বাংলাদেশ ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের মিছিল থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীর ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার (২১ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কেএফ/পি
মন্তব্য করুন
বাবার বিষয়ে ‘এক্সক্লুসিভ’ তথ্য জানাতে সংবাদ সম্মেলন ডাকলেন তিশা-মুশতাক
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে ছবি ও ভিডিও নিয়ে ‘অসত্য, মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট’ তথ্য প্রচার হচ্ছে দাবি করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি এ ধরনের তথ্য পরিবেশন থেকে বিরত থাকতে ৭ দিনের সময় দিয়ে বাবা মো. সাইফুল ইসলামকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন সিনথিয়া ইসলাম তিশা। এবার সে বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর পাশাপাশি বাবার বিষয়ে ‘এক্সক্লুসিভ’ তথ্য জানাতে সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন আলোচিত তিশা-মুশতাক দম্পতি।
শনিবার (২ মার্চ) তিশা-মুশতাকের পক্ষে অ্যাডভোকেট হাসান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের সত্ত্বাধিকারী ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। একই দিন বিকেলে গুলশান-১ নম্বরের একটি বাড়িতে ওই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের বিকেলের ওই সংবাদ সম্মেলন কাভার করার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে আলোচিত দম্পতি সিনথিয়া ইসলাম তিশা এবং খন্দকার মুশতাক আহমেদের পক্ষে বিগত ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ তারিখে অ্যাডভোকেট হাসান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের স্বত্বাধিকারী ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং সিনথিয়া ইসলাম তিশার বাবা সাইফুল ইসলামকে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন।
কেন সেই লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হলো সে বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর পাশাপাশি সাইফুল ইসলামের বিষয়ে ‘এক্সক্লুসিভ’, অজানা তথ্যাদি জানানোর জন্য আজ ২ মার্চ, ২০২৪ ইং ফুড প্যালেস, বাড়ি নম্বর- এসডব্লিউএফ ৪/এ, রোড নম্বর- ১, গুলশান-১ (ড. ফজলে রাব্বি পার্কের উত্তর অংশে নিকেতন গেট-১ এর কাছে বিকেল ৪টায় একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি স্বামী খন্দকার মুশতাক আহমেদ ও তাকে জড়িয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য না দিতে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে বাবাসহ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠান তিশা। আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার তিশা-মুশতাক দম্পতির পক্ষে ওই নোটিশ পাঠান।
ওই নোটিশে তিশা-মুশতাকের আইনজীবী উল্লেখ করেন, সিনথিয়া ইসলাম তিশা ও খন্দকার মুশতাক আহমেদ দম্পতির স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত করার পাশাপাশি তাদের সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে মানহানি করা হচ্ছে। যা প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একই সঙ্গে কোনোপ্রকার লিখিত অনুমতি ছাড়া খন্দকার মুশতাক আহমেদের ছেলে ও মেয়ে, প্রাক্তন স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের ছবি, ভিডিও নিয়ে অসত্য, মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট তথ্যাদি সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমে পরিবেশন, প্রকাশ, সম্প্রচার তথা প্রচারণা করে প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করা হচ্ছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
সেদিন লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি তিশা-মুশতাক দম্পতি সম্পর্কে আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে সামাজিক মাধ্যম এবং ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমে অসত্য, মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট তথ্যাদি পরিবেশন থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকতেও তিশার বাবাকে অনুরোধ জানানো হয়।
দীর্ঘ হচ্ছে আগুনে মৃত্যুর মিছিল, অবহেলায় অপরাধীরা অধরা
নিমতলি, চুড়িহাট্টার পর আরও একবার এই শহর সাক্ষী হলো সন্তানহারা বাবা মায়ের আর্তনাদ আর অজস্র মানুষের কান্নার। একটির ক্ষত শুকানোর আগেই আরেকটি অগ্নিদুর্ঘটনা, আগুনে প্রাণহানি যেন প্রায় নিয়মিত ঘটনা। আগুনে মৃত্যুর মিছিল যেন থামছে না, বরং দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। দেশে গড়ে দিনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ৭৭টি ঘটে। আর এসব ঘটনায় নিরীহ মানুষের প্রাণহানিতে অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে মামলাও হয়। তবে তা থেকে যায় অবহেলায়। বিচারের মুখ দেখেনা কোন ঘটনা, ফলে পার পেয়ে যায় অপরাধীরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে লাগা রাজধানীর বেইলি রোডের আগুন কেবল ৪৬টি প্রাণই কেড়ে নেয়নি। অসংখ্য মানুষকে করেছে স্বজনহারা। ফায়ার সার্ভিসের ১৩ ইউনিটের চেষ্টায় দুই ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুড়ে গেছে বাণিজ্যিক ভবনটি। ভয়াবহ এ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেতা।
তবে বেইলি রোডের আগুনে এই মৃত্যুর মিছিল নতুন কিছু নয়। গত এক যুগে ঢাকায় অসংখ্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২০১০ সালের ৩ জুন রাজধানীর পুরান ঢাকার নিমতলীতে রাসায়নিক দাহ্য পদার্থের গুদামে বিস্ফোরণ থেকে আগুনের ঘটনায় নারী এবং শিশুসহ নিহত হয় ১২৪ জন। ২০১২ সালে আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডে ১১৭ জন, ২০১৬ সালে টঙ্গীতে ট্যাম্পাকো ফয়েলস প্যাকেজিং কারখানায় ৩১ জন, ২০১৯ সালে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ৭১ জন, বনানীর এফআর টাওয়ারে ২৬ জন। এসব ঘটনায় অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে মামলা করা হয়। মামলাগুলোর তদন্ত শেষ হলেও সাক্ষী না আসায় এখনো বিচার শেষ হয়নি।
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের তাজরীন ফ্যাশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১৭ জন নিহত হন। আরও দুই শতাধিক শ্রমিক আহত ও দগ্ধ হন। পরদিন পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ২০১৩ সালের ২২ ডিসেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে তাজরীন ফ্যাশনের এমডি দেলোয়ারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। দুিই বছর পর ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ । মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে আছে। মামলার ১০৪ জন সাক্ষীর মধ্যে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন মাত্র ১১ জন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘মামলাটিতে সাক্ষীই আসে না। ১০৪ চারজন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ১১ জন আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন।’
শনিবার (২ মার্চ) রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ৫ বছর পূর্ণ হল। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সেখানকার ওয়াহেদ ম্যানশন থেকে আশপাশে আগুন ছড়িয়ে ৭১ জনের প্রাণহানি ঘটে। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ৬৭ জন। ঘটনার পরদিন মো. আসিফ নামের এক ব্যক্তি থানায় মামলা করেন। মামলায় ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিকের দুই ছেলেসহ ৮ জনের বিচার শুরু হয়েছে। তবে বিচার শুরুর এক বছরেও শেষ হয়নি মামলার বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ।
মামলার বাদী বলছেন, বিচার নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা। কোনো ক্ষতিপূরণও পাননি। অপরদিকে, ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিকের দুই ছেলে সোহেল ও হাসানের আইনজীবীর দাবি, সবকিছু হারিয়ে ঘটনার ভিকটিম হয়েছেন তারা।
২০১৯ সালের ২৮ মার্চ বনানীর এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৭ নিহত হন। এরপর এ ভবন নির্মাণে নানান অনিয়মের বিষয় বেরিয়ে আসতে থাকে। কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়েরে ওই ভবনের জমির মূল মালিক ছিলেন প্রকৌশলী এস এম এইচ আই ফারুক। অংশীদারত্বের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ করে রূপায়ণ হাউজিং এস্টেট লিমিটেড। সে কারণে সংক্ষেপে ভবনের নাম হয় এফআর টাওয়ার। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেন। ২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট দেন। এরপর মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। চলতি বছর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অধিকতর তদন্ত শেষে আটজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে। এফআর টাওয়ারের নকশা জালিয়াতির অভিযোগে ভবন মালিক ও নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানসহ চারজনের বিচার চলছে। ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর ঢাকার বিভাগীয় স্পেশাল জজ কামাল হোসেনের আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে।
এ বিষয়ে আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলাগুলোর মধ্যে এখনো কোনো মামলার রায় হয়নি। এসব মামলায় সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হন না। রাষ্ট্রপক্ষের উচিত সাক্ষীদের আদালতে হাজির করে মামলাগুলো দ্রুত শেষ করা।’
ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলাগুলো সাক্ষীর পর্যায়ে রয়েছে। মামলায় কিছু সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসেন, আবার কিছু সাক্ষী আসেন না। সাক্ষী না আসায় মামলাগুলো শেষ করা যাচ্ছে না। সাক্ষীদের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সমন পাঠানোর পরও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এসব মামলায় যারা অপরাধী তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অসাবধানতা বা অবহেলার কারণে বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এগুলো গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘গাফিলতির কারণে বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আবাসিক এলাকার একটি ভবনে অর্ধেক রেস্টুরেন্ট আর অর্ধেক অ্যাপার্টমেন্ট করা হচ্ছে, এটা ঠিক নয়। একটা ভবনে হয় পুরোপুরি কমার্শিয়াল হবে, না হয় পুরোপুরি অ্যাপার্টমেন্ট হবে। ভবনের মালিকরা লাভবান হওয়ার জন্য এমন করছেন। এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। প্ল্যান দেওয়ার সময় রাজউকের এসব চিন্তা করা উচিত। যারা এসব ঘটনায় দায়ী তাদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
বেইলি রোডে নিহতদের পরিবারকে ৫ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে আইনি নোটিশ
রাজধানীর বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪৬ জনের প্রত্যেক পরিবারকে ৫ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণের দাবিতে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
রোববার (৩ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সোলায়মান তুষার ডাকযোগে এই নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়, ‘সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ অনুযায়ী প্রত্যেকের জীবনধারণের অধিকার রয়েছে ও ব্যক্তি স্বাধীনতা রয়েছে। অনুচ্ছেদ ৩৬ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের নিরবচ্ছিন্নভাবে চলাফেরার অধিকার রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ একটি ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা না-করায় এবং যথাযথ ব্যবস্থা না-নেওয়ায় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার কারণেই এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ঘটছে এবং ৪৬ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং অনেকেই আহত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ কোনোক্রমেই তাদের দায় এড়াতে পারে না।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, রাজউকের চেয়ারম্যান ও ঢাকার জেলা প্রশাসক বরাবরে ডাকযোগে ওই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে আইনজীবী সোলায়মান তুষার বলেন, ‘যেহেতু কর্তৃপক্ষ ভবন মালিককে তিনবার সতর্কতা নোটিশ দিয়েছিল কিন্তু কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এবং ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি, সেহেতু কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা রয়েছে। নোটিশ গ্রহীতাদের ব্যর্থতার কারণেই বেইলি রোডের ওই ভবনটিতে এমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া অন্তত ২২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
হাইকোর্টে ৪ বছরের নূরজাহান, মায়ের জামিনের বিষয়ে যা জানা গেল
গত ২৯ নভেম্বর গণমাধ্যমে প্রচারিত ‘বাবা ঘরে আসুক, কারাগার থেকে ফিরুক মা’ শীর্ষক এক সংবাদে বলা হয়, ‘গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে হামিদ ভূঁইয়া গ্রেপ্তার এড়াতে বিএনপির কর্মী আবদুল হামিদ ভূঁইয়া পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মা হাফসা আক্তার নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। মা-বাবার জন্য কাঁদছে চার বছরের ছোট্ট নূরজাহান।’ এবার মাকে ছাড়াতে হাইকোর্টে হাজির হয়েছিল চার বছরের ছোট্ট নূরজাহান।
সোমবার (৪ মার্চ) বিচারপতি রুহুল কুদ্দুসের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে জামিন শুনানি শেষে আদেশের জন্য আগামীকাল দিন ধার্য করেন আদালত।
হাইকোর্ট বলেন, এই মহিলা এত গুরুত্বপূর্ণ কেন আসামি হিসেবে। এসময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতকে বলেন, ফুটেজ আছে, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও আছে। পরে হাইকোর্ট বলেন, তাহলে সিসিটিভি ফুটেজ দেখবো। কাল আনেন।
তবে গত ২৯ নভেম্বর পত্রিকার প্রতিবেদনটির প্রতিবাদ জানিয়েছিল ডিএমপি। পুলিশের এ বিভাগ জানায়, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হাফসা আক্তার পুতুল ও তার স্বামী আব্দুল হামিদ ভূইয়া সম্পর্কে ২৯ নভেম্বর যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তা সঠিক নয়।
প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে ডিএমপি জানায়, গত ২০ নভেম্বর বিকালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত হাফসা আক্তার পুতুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। ওই দিন ডিএমপির কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা রুজু হলে তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ককটেল হামলার সাথে জড়িত অভিযুক্তদের অবস্থান সনাক্ত করে পুলিশ। এরপর গত ২৬ নভেম্বর হাফসা আক্তার পুতুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার হেফাজত থেকে ককটেল হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও একটি ভ্যানিটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। ককটেল বিস্ফোরণের সময় ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও ফুটেজেও এই মোটরসাইকেল ও ভ্যানিটি ব্যাগ দেখা গেছে।
পুতুলের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত ২০ নভেম্বর অন্য একটি মামলায় তার দেবর আঃ রহমানকে কোর্টে আনবে এমন তথ্য পেয়ে পুতুল তার স্বামী আব্দুল হামিদ ভূইয়া ও তাদের ছোট মেয়েসহ মোটারসাইকেলে করে বাসা থেকে কোর্টের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। তারা প্রথমে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তাদের মোটরসাইকেলটি রাখে। তারা সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানকালে আব্দুল হামিদ তার স্ত্রী পুতুলের কাছে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগে একটি ককটেল রাখতে দেয়। পরে তারা আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ৪র্থ তলায় উঠে। সেখানে আব্দুল হামিদ তার স্ত্রী পুতুলের ভ্যানিটি ব্যাগে থাকা ককটেলটি বের করে আদালত প্রাঙ্গণে ছুড়ে মারে। যার ফলে ককটেলটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। ঘটনার পর তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার পুলিশ রিমান্ড শেষে হাফসা আক্তার পুতুলকে আদালতে প্রেরণ করলে আদালতে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
ডিএমপি জানায়, হাফসা আক্তার পুতুলের স্বামী হামিদ কোতোয়ালী থানায় ২০ নভেম্বর দায়ের করা মামলার আসামী। এই মামলা দায়েরের পর থেকে তাকে গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত আছে। পলাতক অভিযুক্ত আব্দুল হামিদ ওয়ারী থানা যুবদলের সদস্য।
অবশেষে সেই মায়ের জামিন
গত ২৯ নভেম্বর গণমাধ্যমে প্রচারিত ‘বাবা ঘরে আসুক, কারাগার থেকে ফিরুক মা’ শীর্ষক এক সংবাদে বলা হয়, ‘গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে হামিদ ভূঁইয়া গ্রেপ্তার এড়াতে বিএনপির কর্মী আবদুল হামিদ ভূঁইয়া পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মা হাফসা আক্তার নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। মা-বাবার জন্য কাঁদছে চার বছরের ছোট্ট নূরজাহান।’ এবার মাকে ছাড়াতে হাইকোর্টে এসে মায়ের জামিন নিয়ে বাড়ি ফিরে গেল চার বছরের ছোট্ট নূরজাহান।
বুধবার (৬ মার্চ) বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ হাফসা আক্তারের জামিন মঞ্জুর করেন। মায়ের জামিনের খবর শুনে এসময় ৪ বছরের নূরজাহান আলহামদুলিল্লাহ বলে উঠে।
হাফসার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আদালতের এই আদেশের ফলে তার মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহিন আহমেদ খান। আর আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ।
এর আগে সোমবার (৪ মার্চ) হাইকোর্টের একই বেঞ্চে জামিন শুনানি শেষে আদেশের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন।
গত বছর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া নাশকতার মামলায় হাফসা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। সম্প্রতি মায়ের মুক্তির জন্য মানবন্ধন করে বেশ আলোচনায় ৪ বছরের নূরজাহান নুরী। গত বছরের নভেম্বরে দাদা-দাদির হাত ধরে মানববন্ধন করে ছোট নূরজাহান নুরী ও তার বোন সাত বছর বয়সী বড় বোন আকলিমা বর্ষা।
মানববন্ধনে শিশু বর্ষা মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বলে, আমার মাকে ছেড়ে দেন। আমার পরীক্ষা। আমি মাকে ছাড়া স্কুলে যেতে পারি না।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির ভবনে আগুন
ঢাকা আইনজীবী সমিতির তৃতীয় তলায় আগুনের লাগার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (৬ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এরপর বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটে আগুন লাগার খবর শুনে সদর ঘাট ফায়ার সার্ভিস দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে । তবে ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই আগুন নিভে যায়।
এ ঘটনায় কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিস ধারণা করছে সিগারেট থেকে এ আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
এ বিষয়ে সদরঘাট ফায়ার সার্ভিসের ইন্সপেক্টর মাহমুদুল হাসান বলেন, ঢাকা আইনজীবী সমিতির তৃতীয় তলায় আগুনের লাগার ঘটনা আমাদের খবর দেওয়া হয়। আমরা দুইটি ঘটনাস্থলে আসি। আমরা আসার আগেই আগুর নিভে যায়। এর আগেও দুই-তিন বার আমি এমন ধরনের আগুন নিভিতে এসেছি।
সিগারেট থেকে এ আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।
নির্বাচন ঘিরে সুপ্রিম কোর্টে দুই শতাধিক পুলিশ মোতায়েন, অস্বস্তিতে আইনজীবীরা
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের দুইদিন ব্যাপী নির্বাচনের শেষ দিনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এরই মধ্যে ৯ প্লাটুন পুলিশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির আশপাশে অবস্থান নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও সদস্য সুপ্রিম কোর্টে আসার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তারা।
নির্বাচনের শেষ দিন অতিরিক্ত এই পুলিশ মোতায়েনকে অশনি সংকেত হিসেবে দেখছেন বিএনপির প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। তিনি বলেন, এতো পুলিশ মোতায়েন করার মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি। গত দুই বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি এটা অশনি সংকেত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আইনজীবী বলেন, গতবার সুপ্রিম কোর্টে পুলিশের সঙ্গে আইনজীবীদের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিল। এবারও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ কারণে আমরা অস্বস্তিতে ভুগছি।
তবে, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান মনির বলেন, আইনজীবীদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বহিরাগতরা প্রবেশ করে যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে, সেজন্য কাজ করবে পুলিশ।
এর আগে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্যে দিয়ে গতকাল (৬ মার্চ) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের দুইদিন ব্যাপী নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। সকাল ১০টা ২০ মিনিট থেকে সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনের মিলনায়তনে স্থাপিত ৫০টি বুথে এক যোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম দিনে তিন হাজার ২৬১ জন আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। নির্বাচনে মোট ভোটার ৭ হাজার ৮৮৩ জন।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল খায়েরের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের কমিটি নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। নির্বাচন পরিচালনায় উপ-কমিটিকে সহযোগিতা করছেন ১৫০ জন আইনজীবী।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল ও বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল অংশগ্রহণ করেছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও কয়েকজন নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।