এনামুল বাছিরকে কেন জামিন নয়, হাইকোর্টের রুল
ঘুষ লেনদেনের মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন। আদালতে এনামুল বাছিরের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন রুহুল কুদ্দুস এবং দুদকের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান।
আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, আদালত এনামুল বাছিরের জামিন প্রশ্নে ৩ সপ্তাহের রুল জারি করেছেন।
গত ১৯ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্ল্যা এই মামলায় আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। এরপর ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ মামলাটি বিচারের জন্য ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন। গত ১৮ মার্চ এ মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন একই আদালত।
গত বছরের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুর্নীতির অনুসন্ধান থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন ডিআইজি মিজান।
ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে ওই চ্যানেলকে দিয়েছিলেন মিজান। ডিআইজি মিজান নিজেও এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতে ওই অর্থ ঘুষ দেন বলে ডিআইজি মিজান দাবি করেন।
এ প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর দুদক সংস্থার সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে ৩ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি গত বছর ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলাভঙ্গ ও সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কমিশন।
গত বছরের ১৬ জুলাই ৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও দুদক পরিচালক এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা শেখ মো. ফানাফিল্ল্যা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করতে গিয়ে এক ধরনের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বাছির। ডিআইজি মিজানের কাছে নিজের সুখ-দুঃখের আলাপ করেন। একটি গাড়ির অভাবে সন্তানকে স্কুলে আনা-নেয়ায় কষ্ট হয় বলে জানান। পুলিশের ডিআইজি মিজান এ সুযোগটি নেন। তিনি বাছিরকে কাবু করতে নানা কৌশল আবিষ্কার করেন। তার ফাঁদেই পা ফেলেন বাছির।
সেই ঘটনার রেশে গত বছরের ২২ জুলাই দিনগত রাত পৌনে ১১টার দিকে দুদকের পরিচালক ফানাফিল্ল্যার নেতৃত্বে একটি টিম রাজধানীর দারুস সালাম এলাকা থেকে এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে।
কেএফ/ এমকে
মন্তব্য করুন