• ঢাকা বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নাসা গ্রুপের বিরুদ্ধে

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১৪ মে ২০২০, ০০:০৫
Allegations financial irregularities against NASA group
ফাইল ছবি

দেশের অন্যতম বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান নাসা গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে বড় ধরনের আর্থিক অনিয়মের। ব্যাংকের কাছ থেকে বার্ষিক ঋণ সীমার চেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছে এই গ্রুপের একাধিক প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমদানির চেয়ে রপ্তানি বেশি হওয়ার কথা থাকলেও এসব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঘটেছে উল্টো। এর মাধ্যমে কয়েক শ কোটি টাকার অনিয়মের আলামত পাওয়া গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ ধরনের বেশকিছু অনিয়ম।
সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, আমদানির আড়ালে এসব অর্থ পাচার হয়েছে কিনা সে প্রশ্নও উঠেছে। অন্যদিকে এর মাধ্যমে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার বিষয়টিও সামনে এসেছে। নাসা গ্রুপের কর্ণধার দেশের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান। এছাড়া ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস এর (বিএবি) সভাপতি।
সূত্র জানিয়েছে, দেশের একটি শীর্ষ পর্যায়ের ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে পর পর চার বছর নাসা গ্রুপের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস ইউনিট ঋণের সীমা অতিক্রম করেছে। অর্থাৎ বছরে যে পরিমাণ ঋণ নেয়ার সীমা নির্ধারিত রয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি তার চাইতে বেশি ঋণ নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নাসা গ্রুপের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস ইউনিট বিভিন্ন সময়ে এই সীমা অতিক্রম করেছে। ২০১৫ সালে টেক্সটাইল ইউনিট ১৪৫ কোটি টাকা ঋণ সীমার বিপরীতে ঋণ নিয়েছে ৩৫৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ সীমার অতিরিক্ত ঋণ নিয়ে প্রায় ২০৯ কোটি টাকা। একইভাবে ২০১৬ সালে ২৯ কোটি ও ২০১৭ সালে প্রায় ১৩ কোটি টাকা সীমার অতিরিক্ত ঋণ নিয়েছে। অন্যদিকে গার্মেন্টস ইউনিট ২০১৭ সালে সীমার অতিরিক্ত ঋণ নিয়েছে ১১৯ কোটি ও ২০১৮ সালে সীমার অতিরিক্ত ঋণ নিয়েছে ৫৬ কোটি টাকা।
অন্যদিকে রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান ব্যাক টু ব্যাক এলসির মাধ্যমে আমদানির সুযোগ পায়। সাধারণত রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান হলে আমদানির চাইতে রপ্তানি বেশি হয়। কিন্তু চার বছরের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নাসা গ্রুপের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস ইউনিটের আমদানির চাইতে রপ্তানি কম হয়েছে। প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৫ সালে টেক্সটাইল ইউনিট আমদানির চেয়ে রপ্তানি কম করেছে ২১২ কোটি টাকা। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে তা যথাক্রমে ৪৭ কোটি ও ৩৬ কোটি টাকা। একইভাবে গার্মেন্টস ইউনিট ২০১৫ ও ২০১৭ সালের আমদানির চেয়ে রপ্তানি কম করেছে যথাক্রমে ৯৪ কোটি ও ১১ কোটি টাকার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের আর্থিক অনিয়মের বিষয়টি স্পষ্ট। এতে বাড়তি আমদানি দেখিয়ে অর্থপাচার হয়েছে কিনা তা এখন আলোচনায় এসেছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের পক্ষ থেকে শক্তিশালী তদন্ত করা হলে এর সঙ্গে আরো কী কী অনিয়ম রয়েছে কিংবা এর সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত, তা বেরিয়ে আসতে পারে।
বন্ড জালিয়াতির এমন চক্রের সন্ধানে অক্টোবর থেকে অভিযান চালাচ্ছে দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। বন্ড জালিয়াতি করে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে গড়ে উঠেছে একটি বড় সিন্ডিকেট। তালিকায় আছে শতাধিক গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান। সিন্ডিকেটে জড়িত তিন জন বড় মাপের ব্যবসায়ী এখন গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। যেকোনো মুহূর্তে তারা গ্রেফতার হবেন।
রফতানিমুখী শিল্পকারখানা পুনরায় রফতানির শর্তে শুল্কমুক্ত বন্ড সুবিধায় পণ্য আমদানির সুযোগ পায়। বন্ড লাইসেন্সের নামধারী চোরাকারবারি ব্যবসায়ীরা সে সুযোগের অপব্যবহার করে শুল্কমুক্ত পণ্য ফ্রি-স্টাইলে বিক্রি করছেন কালোবাজারে। এতে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
সি/

মন্তব্য করুন

daraz
  • অপরাধ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ঋণ খেলাপি প্রার্থী শনাক্তে তথ্য চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
নতুন আর কোনো ব্যাংককে আপাতত একীভূত করা হচ্ছে না
ব্যাংক-বীমা-অফিস-আদালত খুলছে আজ
অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রে ডুবে মার্কেন্টাইল ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু
X
Fresh