সাবিনা সুস্থ হলেও নির্বাক
রাজধানীর আশকোনায় আত্নঘাতি নারী শাকিরার মেয়ে সাবিনা (৬) সুস্থ হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার তার পেটের ব্যান্ডেজ খোলা হয়েছে। মাল্টিপল স্প্লিন্টারের আঘাতের ক্ষত স্থানগুলো শুকিয়েছে। স্প্লিন্টারের আঘাতে ভেঙ্গে যাওয়া বাম হাত ঠিক হতে আরো বেশ কিছু দিন লাগবে। শরীরের অবস্থা উন্নত হলেও সাবিনা কারো সঙ্গে কথা বলছে না। শুধু নির্বাক এদিক ওদিক তাকিয়ে থাকছে। কিছু জানতে চাইলে শুনছে। কিন্তু কিছুই বলছে না।
ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে শিশুটির খোজ খবর নিতে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডের একটি বেডে সাবিনাকে রাখা হয়েছে। আর তাকে ঘিরে রয়েছে কয়েকজন নারী ও পুলিশ সদস্য। তারাই বাচ্চাটির দেখভাল করছেন। পালা করে দু’দফায় ৫ পুলিশ সদস্য রয়েছেন তার নিরাপত্তায়।
সাবিনার সেবায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা জানান, সাবিনা খুব চুপচাপ, দরকার ছাড়া কথা বলে না। শুধু তাকিয়ে থাকে। অতিরিক্ত মানুষ দেখলে ভয় পায়।
সুস্থ হওয়ার পর সাবিনা কোথায় যাবে, এ বিষয়ে এখনো কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি পুলিশ কর্মকর্তারা।
গেলো ২৪ ডিসেম্বর বিকালে ঢামেকের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মো. আশরাফউদ্দীন খানের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের চিকিৎসক দল তার অপারেশন করে।
২৩ ডিসেম্বর শুক্রবার রাতে আশকোনায় জঙ্গি আস্তানায় সন্ধান পায় পুলিশ। পরদিন পুলিশি অভিযানের এক পর্যায়ে শাকিরা কন্যা শিশু নিয়ে বেরিয়ে এসে নিজের শরীরে বেঁধে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটান। এতে আত্মঘাতি বোমায় তার মৃত্যু হয়। আত্নঘাতি ওই বোমায় শিশু সন্তান সাবিনা গুরুতর আহত হয়।
পুলিশ জানায়, শাকিরার গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার আওয়াজপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আওয়াজপুর গ্রামে। চার বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে শাকিরা তৃতীয়। কয়েক বছর আগে এইচএসসি পড়ার সময় শাকিরার বিয়ে হয় ইকবালের সঙ্গে। এরপর রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বছিলায় ছোটখাটো ব্যবসা করতেন ইকবাল। বিয়ের বছরখানেকের মধ্যে সাবিনার জন্ম হয়। তখন ইকবাল ছিলেন ক্যান্সারে আক্রান্ত। মেয়ের জন্মের কয়েক মাসের মাথায় ইকবাল মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর শাকিরা মেয়েকে নিয়ে ভোলায় ফিরে যাননি। মোহাম্মদপুরে একটি ক্লিনিকে কাজ নেন। গেলো কোরবানির ঈদের পর সাবিনাকে নিয়ে ভোলায় বাবার বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন শাকিরা। তখনো কাউকে জানাননি তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। সেখান থেকে ঢাকায় ফেরার পর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখেননি শাকিরা।
এমসি/এসজেড
মন্তব্য করুন