• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

বিশ্বের বিরল জঙ্গিবিরোধী অভিযান

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৮:০১

আশকোনায় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের জঙ্গিবিরোধী অভিযানটির বেশ কিছু বিশেষত্ব রয়েছে যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। বললেন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন।

রোববার বিকেলে তার ফেসবুক পাতায় তিনি লেখেন, এই ধরণের ঝুঁকিপূর্ণ এবং কৌশলগত পদ্ধতিতে অভিযান পরিচালনা করে সাফল্য পাবার ঘটনা বিশ্বে একেবারেই বিরল। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশে অস্ত্রগোলাবারুদ দিয়ে এসব সমস্যার সমাধান করা হয়। জঙ্গি দমনে অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতিতেই সবাই অভিযান পরিচালনা করে। এক্ষেত্রে কো-লেটারাল ড্যামেজ ছাড়া কোন গত্যন্তর থাকে না।

সানোয়ার বলেন, প্যারিস, বোস্টন, গুলশান, কল্যাণপুর অভিযানে একই পদ্ধতি নেয়া হলেও শনিবার আশকোনায় এই প্রচলিত পদ্ধতি আমাদের কাছে উপযুক্ত মনে হয়নি। ৩ জন নারী, ৩ জন শিশু এবং ১ জন কিশোরের বিপরীতে বিশাল বাহিনী নিয়ে অস্ত্রশস্ত্র তাক করার মতো অদক্ষ মনোভাব আমরা দেখায়নি।

তাই মাঝরাতে আস্তানা ঘেরাও করার পরও দীর্ঘ সময় অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় কিছু কৌশল প্রয়োগ করা হয়। নিশ্চিত মৃত্যু আতঙ্কে ভোগা জঙ্গিদের কাছাকাছি গিয়ে কথা বলার মতো পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।

জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনার নানা পদ্ধতির ওপর আমাদের প্রশিক্ষণ থাকলেও সব থেকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতিতেই আমরা আশকোনায় সফলতা পেয়েছি। সেদিক বিবেচনা করলে অভিযানটি শুধুমাত্র বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, বিশ্বের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা।

তিনি বলেন, অভিযানে নেয়া কৌশলের ধাপগুলো জানার জন্য নানা দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহনীর সদস্যরা বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করছে।

যে সকল কারণে আশকোনা অভিযান একটি বিশেষ অভিযান হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে

১. দু’জন খুব গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গি সদস্যের স্ত্রী, যারা জঙ্গি মতবাদের ওপর সর্বোচ্চ বিশ্বাস করেন। তাদের আত্মসমর্পণে রাজি করানো।

২. সুইসাইডাল ভেস্ট (বোমা) পরিহিত নারী জঙ্গিদের সঙ্গে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে নেগোশিয়েশন চালিয়ে যাওয়া।

৩. ডায়ালগের ক্ষেত্রে জঙ্গিদের পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা নেয়া।

৫. কোন প্রকার গোলাগুলি ছাড়াই প্রায় ১৬ ঘন্টার (২৩ ডিসেম্বর রাত ১১.৩০টা থেকে ২৪ ডিসেম্বের বিকেল ৩.৩০টা পর্যন্ত) একটানা ডায়ালগ চালিয়ে যাওয়া।

৬. সবশেষ নারী জঙ্গি সদস্য সবাইকে ধোকা দিয়ে গুটিকয়েক পুলিশ সদস্যকে সুইসাইডাল বোমায় হতাহত করার পরিকল্পনা করে। কিন্তু তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি।

নারী জঙ্গি ৭ বছরের মেয়ে শিশুকে (অপর এক জঙ্গির মেয়েকে) হাত ধরে পুলিশের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। আমরা শিশুটিকে একা এগিয়ে দিতে অনুরোধ করি এবং তাকে দু'হাত মাথার ওপরে তুলে এগিয়ে আসার আহ্বান জানালে একসময় সে বোতাম টিপে সুইসাইডাল ভেস্টটি ব্লাষ্ট করে। কংক্রিট দেয়ালের আড়ালে থাকা প্রায় এক ডজন কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশ (সোয়াটসহ) অল্পের জন্য বেঁচে যায়। এরপর সোয়াট সদস্যরা মেঝেতে পরে থাকা মারাত্মকভাবে আহত মেয়েশিশুটিকে ট্যাকটিল্যাক ফার্স্টএইড দিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধ করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।

এমকে/এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • অপরাধ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh