• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ভেজাল ধরিয়ে দিলে মিলছে টাকা

মিথুন চৌধুরী

  ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৭:২৯

ঘটনা মাস খানেক আগের। রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্ট থেকে দুই বোতল কোল্ড ড্রিংকস কিনেছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিদুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ছাত্র। কোল্ড ড্রিংকস দুইটির দাম ৩০ টাকা হলেও রেস্টুরেন্টটি বাজার নির্ধারিত মূল্য (এমআরপি) থেকে ২০ টাকা বেশি রাখে। এ বিষয়ে রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ সুরাহা দেয়নি।

পরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযোগ করলে বিষয়টি আমলে আসে। রেস্টুরেন্টটির মালিককে আজ মঙ্গলবার হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় অধিদপ্তর। পরে রেস্টুরেন্টের মালিককে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ থেকে মহিদুল পান জরিমানার ২৫ শতাংশ অর্থ।

এভাবে প্রতিনিয়ত মহিদুলের মতো অনেক ভোক্তা অভিযোগ ফরমের মাধ্যমে আবেদন করে আসছেন। পরে ভোক্তা অধিকার অভিযোগ আমলে নিয়ে তা সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করে। নিষ্পত্তিতে অভিযোগকারীকে আলাদা কোনো ফি দিতে হয় না।

ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ধারা ৭৬ (১) অনুযায়ী, “যে কোনো ব্যক্তি, যিনি, সাধারণভাবে একজন ভোক্তা বা ভোক্তা হইতে পারেন, এই অধ্যাদেশের অধীন ভোক্তা-অধিকারবিরোধী কার্য সম্পর্কে মহাপরিচালক বা এতদুদ্দেশ্যে মহাপরিচালকের নিকট ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে অবহিত করিয়া লিখিত অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবেন। দায়েরকৃত অভিযোগ অবশ্যই ফরমে লিখিত হতে হবে। ফ্যাক্স, ই-মেইল, ওয়েব সাইট, ইত্যাদি ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে; বা
অন্য কোন উপায়ে; অভিযোগের সাথে পণ্য বা সেবা ক্রয়ের রশিদ সংযুক্ত করতে হবে। অভিযোগকারী তার পূর্ণাঙ্গ নাম, পিতা ও মাতার নাম, ঠিকানা, ফোন, ফ্যাক্স ও ই-মেইল নম্বর (যদি থাকে) এবং পেশা উল্লেখ করবেন।”

ভোক্তা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভোক্তা অধিদপ্তর ৭৮০৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৭৩ কোটি ৯ লাখ ৮০ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করা হয়। যার মধ্যে ২৭ লাখ ১৩ হাজার ৯ ৫০ টাকা দেয়া হয় ১ হাজার ৪১৮ অভিযোগকারীকে। বাকি ৭১ কোটি ২ লাখ ৬৬ হাজার ৯৫০ টাকা জমা দেয়া হয় সরকারি কোষাগারে।

যেসব কারণে অভিযোগ করা যাবে : পণ্যের মোড়ক, ইত্যাদি ব্যবহার না করা, মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করা, সেবার মূল্যের তালিকা সংরক্ষণ ও প্রদর্শন না করা, ধার্য মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য, ওষুধ সেবা বিক্রয়, ভেজাল পণ্য বা ওষুধ বিক্রয়, খাদ্যপণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ, অবৈধ প্রক্রিয়ার পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ, মিথ্যা বিজ্ঞাপনে ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করা, প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: রাজধানীর অভিজাত পাড়া থেকে সোয়া লাখ ইয়াবা উদ্ধার
--------------------------------------------------------

এছাড়া ওজনে কারচুপি, বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রে কারচুপি, পরিমাপে কারচুপি, দৈর্ঘ্য পরিমাপের কার্যে ব্যবহৃত পরিমাপক ফিতাতে কারচুপি, পণ্যের নকল প্রস্তুত বা উৎপাদন, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বা ওষুধ বিক্রয়, সেবাগ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্নকারী কার্য, অবহেলা ইত্যাদির মাধ্যমে সেবাগ্রহীতার অর্থ, স্বাস্থ্যহানি, ইত্যাদি ঘটানো, মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলা দায়ের।
ভোক্তা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, অভিযোগের ভিত্তিতে আদালত জেল ও জরিমানার পাশাপাশি যথাযথ মনে করলে দণ্ডের অতিরিক্ত হিসাবে অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট অবৈধ পণ্য বা পণ্য প্রস্তুতের উপাদান, সামগ্রী, ইত্যাদি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশ প্রদান করতে পারে। এছাড়া ভোক্তা অধিকারবিরোধী কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত ব্যক্তি পুনরায় একই অপরাধ করলে সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য নির্ধারিত সবোর্চ্চ দণ্ডের দ্বিগুণ দণ্ড দেয়া হবে।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো.কামাল উদ্দিন আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ভোক্তাদের অধিকার আদায়ে অধিদপ্তর সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে প্রতি সপ্তাহে ১ দিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক বা প্রতিনিধি ও অভিযোগকারী বা ভোক্তাদের নিয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০১৬-১৭ এ ৩৫৯টি গণশুনানি হয়। জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে লিফলেট, পোস্টার, গণবিজ্ঞপ্তি ও জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এতে করে ভোক্তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা প্রতিনিয়ত অভিযোগ দায়ের করছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে সংস্থা অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।

আরও পড়ুন:

এমসি/এসআর

মন্তব্য করুন

daraz
  • অপরাধ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
প্রবাসীর স্ত্রীকে টার্গেট করে প্রতারণা, হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (২৬ এপ্রিল)
হিলিতে কোটি টাকার কোকেন উদ্ধার
বীমা দাবির ১০ লাখ টাকা পরিশোধ করল ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যরেন্স
X
Fresh