চাঞ্চল্যকর দম্পতি হত্যার রহস্য উদঘাটন
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চাঁদপুর জেলার চাঞ্চল্যকর নুরুল আমিন দম্পতি হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে। সংস্থাটির তদন্তে দম্পতি হত্যার প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে এসেছে। চুরি করতে গিয়ে আসামিরা দম্পতিকে হত্যা করেছে।
চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানার নাওড়া এলাকার দম্পতি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবহৃত লোহার রড ও চুরি হওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পিবিআই।
দম্পতি হত্যাকাণ্ড মামলার ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে শাহরাস্তির ঘুঘুসাল গ্রামের মো. আবদুর রবের ছেলে মো. আবদুল মালেক (৩৪) ঝালকাঠি সদরের গাবখান এলাকার মৃত আজাহার আলী ছেলে মো. ইলিয়াছ হোসেন (৫৩) এবং বরিশালের চরবাড়ীয়ার মৃত কাঞ্চন হাওলাদারের ছেলে মো. বশিরকে (৪৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত ১ জুলাই সকাল ১০টার দিকে শাহরাস্তির নাওড়া, রেলক্রসিং (আমিন সাহেবের বাড়ি) এলাকার মৃত আবদুল মাজিদের ছেলে নুরুল আমিনকে (৬৫) তার বাড়ির ছাদের ওপর এবং তার স্ত্রী কামরুন নাহারকে (৬০) রক্তাক্ত অজ্ঞান অবস্থায় ঘরের ফ্লোরের ওপর পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তাদের ছেলে মো. জাকারিয়া বাবু (৩৮) বাদী হয়ে শাহরাস্তি থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামালাটি শাহরাস্তি থানা পুলিশ প্রায় এক মাস তদন্ত করে। পরবর্তীতে তদন্তাধীন অবস্থায় বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের আদেশে পিবিআই, চাঁদপুর পরবর্তী তদন্তের দায়িত্ব পায়।
মামলাটি তদন্ত করেন চাঁদপুর পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. কবির আহমেদ।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে পিবিআই জানায়, আসামিদের গ্রেপ্তারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার রাত প্রায় ৭টার দিকে নুরুল আমিনের বিল্ডিংয়ের মূল গেইট (কলাপসিবল) খোলা দেখতে পেয়ে আসামি গোপনে ঘরে প্রবেশ করে চুরি করার উদ্দেশ্যে সিঁড়ি দিয়ে ছাদের ওপর অবস্থান করতে থাকে। নুরুল আমিন রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে ছাদে উঠলে আসামি পেছন দিক থেকে রড দিয়ে নুরুল আমিনের মাথায় আঘাত করে এবং গলায় মোজা পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে। আসামি ছাদ থেকে বিল্ডিংয়ের ভেতরে প্রবেশ করে চুরি করার উদ্দেশ্যে গোপনে একটি রুমে প্রবেশ করে ফাইল কেবিনেটের ড্রয়ার টানাটানি করতে থাকে। এ সময় নুরুল আমিনের স্ত্রী কামরুন নাহার ড্রয়ার খোলার শব্দ পেয়ে ঘরের লাইট জ্বালিয়ে আসামি আবদুল মালেককে দেখে চিনে ফেলেন। এতে আসামি লোহার রড দিয়ে কামরুন নাহারের মাথায় আঘাত করে। আসামির আঘাতের ফলে কামরুন নাহার ফ্লোরে পড়ে যান। পরবর্তীতে আসামি আবদুল মালেককে নুরুল আমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে ছাদের ওপরে ওঠে। ছাদের ওপর থেকে হত্যায় ব্যবহৃত লোহার রডটি ফেলে দেয় এবং কাঁঠাল গাছ দিয়ে নিচে নেমে পালিয়ে যায়।
এফএ/এসকে
মন্তব্য করুন