গৃহবধূকে গণধর্ষণ, স্বামীসহ গ্রেপ্তার-৪
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নে সড়ক থেকে তুলে নিয়ে এক গৃহবধূকে (২৪) গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় নির্যাতিতার স্বামী সোহেলসহ ৪জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার ( ৪ আগস্ট) বিকেলে নির্যাতিতা গৃহবধূ বাদি হয়ে ৭জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হাতিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ভুক্তভোগী মহিলার স্বামী নিঝুমদ্বীপ ৭নং ওয়ার্ডের তাজুল ইসলামের ছেলে মো: সোহেল, নিঝুমদ্বীপের ৮নং ওয়ার্ডের মাকসুদুল হকের ছেলে মো: হকসাব (৩৩), ৪নং ওয়ার্ডের ছাইফুল হকের ছেলে রাশেদ উদ্দিন (২৫), ৪নং ওয়ার্ডের এনায়েত মাঝির ছেলে মো: আকতার হোসেন (৩৪)।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২৪ বছর বয়সী ওই গৃহবধূ কাজ করার সুবাধে চট্টগ্রামে বসবাস করতেন। মঙ্গলবার নিজ এলাকা নিঝুমদ্বীপ যাওয়ার উদ্দেশ্যে তার দুই বছরের বাচ্চাকে নিয়ে হাতিয়ার মুক্তারিয়াঘাট থেকে ট্রলার যোগে রওনা করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনি বন্দরটিলাঘাটে গিয়ে পৌঁছেন। ঘাটে নেমে একটি ভাড়া চালিত মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। কিছুপথ যাওয়ার পর তার স্বামী সোহেলসহ কয়েকজন মোটরসাইকেলটি গতিরোধ করে তাকে নামিয়ে হাত ও মুখ বেঁধে ফেলে। পরে তারা ওই গৃহবধূকে সিডিএসপি বাজার পার্শ্ববর্তী বান্ধাখালি এলাকার মেঘনা নদীর তীরে নিয়ে যান। নদীর তীর তাকে আটকে রেখে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সোহেল, হক সাব, রাশেদ, আক্তারসহ ৭জন তাকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। পরে মুখের বাঁধন খুলে গেলে চিৎকার করেন গৃহবধূ। এসময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে ধর্ষণকারী অন্যরা পালিয়ে গেলেও স্বামী সোহেলকে আটক করে স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে নিঝুমদ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সৌরজিৎ বড়–য়ার নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গৃহবধূকে উদ্ধার করে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রাতে বিষয়টি হাতিয়া থানায় অবগত করলে নিঝুমদ্বীপে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হক সাব, রাশেদ ও আক্তার হোসেনকে আটক করে পুলিশ। নির্যাতিতা নারী সোহেলের দ্বিতীয় স্ত্রী। গত কয়েকদিন ধরে গৃহবধূর কাছ থেকে তালাক নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকে সোহেল। কিন্তু তাতে তিনি রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয় সোহেল।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় নির্যাতিতা নারী বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এজাহারভুক্ত ৪ আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারকৃতদের বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে ও নির্যাতিতাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
এমএন
মন্তব্য করুন