পুলিশের ওপর বোমা হামলার ঘটনায় ২ নব্য জেএমবি গ্রেপ্তার
নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড ট্রাফিক বক্সে পুলিশের ওপর বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত নব্য জেএমবি’র ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের স্পেশাল এ্যাকশন গ্রুপ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন শফিকুর রহমান হৃদয় ওরফে বাইতুল্লাহ মেহসুদ ওরফে ক্যাপ্টেন খাত্তাব ও খালিদ হাসান ভূইয়া ওরফে আফনান।
অভিযানে তাদের কাছ থেকে আনুমানিক ৪০০ গ্রাম লাল রং এর বিস্ফোরক জাতীয় পদার্থ, ৩টি বিউটেন গ্যাসের ক্যান, ১সেট রিমোট কন্ট্রোল ডিভাইস, ৪ প্যাকেট ছোট সাইজের বিয়ারিং বল, ১০টি ক্রিসমাস বাল্ব, ২টি কালো রংয়ের ইলেকট্রিক টেপ, ১টি আইইডি তৈরির ম্যানুয়াল ও হামলায় ব্যবহৃত ১টি লাল রংয়ের পালসার মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গতকাল রোববার (০১ আগস্ট) দিনগত রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ সোমবার (০২ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠনের কতিপয় সদস্য রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় নাশকতার লক্ষ্যে একত্রিত হয়েছে- এমন তথ্য পায় সিটিটিসির স্পেশাল এ্যাকশন গ্রুপ। এ তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান করে নব্য জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য এবং বোমা তৈরির অন্যতম কারিগর শফিকুর ও খালিদ হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিটিটিসির প্রধান আরও বলেন, সিটিটিসি’র বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও সোয়াট টিম যৌথভাবে গত ১১ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াই হাজার থানার নোয়াগাঁও এলাকা হতে নব্য জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুনকে বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জামাদীসহ গ্রেপ্তার করে। তার দেয়া তথ্যে সাইনবোর্ড ট্রাফিক বক্সে পুলিশের ওপর বোমা হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত শফিকুর ও খালিদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, নব্য জেএমবির আমির মাহাদী হাসান জন ওরফে আবু আব্বাস আল বাঙ্গালী’র নির্দেশে গত ১৬ মে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাইনবোর্ড ট্রাফিকবক্সে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালায়। ক্রটিপূর্ণ রিমোটের কারণে কয়েকবার চেষ্টা করেও বোমাটি বিস্ফোরণে ব্যর্থ হয়ে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে এবং রিমোটটি রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়। পরবর্তীতে সিটিটিসি’র বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে বোমাটি নিষ্ক্রিয় করে।
মাহাদী হাসান জন’র নেতৃত্বে গ্রেপ্তারকৃত শফিকুর রহমান নব্য জেএমবি’র সামরিক শাখার ক্যাপ্টেন হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গ্রেপ্তারকৃত শফিকুর ও খালিদ হাসান বোমা তৈরির ম্যানুয়াল ও ভিডিও দেখে বোমা তৈরির অনলাইন প্রশিক্ষক ফোরকানের তত্ত্বাবধানে আব্দুল্লাহ আল মামুনের কক্ষে হামলায় ব্যবহৃত আইইডি তৈরি করে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত পলাতক অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে মর্মে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।
কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের স্পেশাল এ্যাকশন গ্রুপের উপ-কমিশনার (ডিসি) আব্দুল মান্নানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রহমত উল্লাহ চৌধুরী’র নির্দেশনায় এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. মাহমুদুজ্জামান’র নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয় বলে জানায় পুলিশ।
কেএফ/এম
মন্তব্য করুন