• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ছেলেকে কোদাল দিয়ে কু’পিয়ে হ’ত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন বাবা!

আরটিভি নিউজ

  ১১ জুন ২০২১, ২১:২১
The father gave a shocking description of the murder of the boy with a spade!
গ্রেপ্তারকৃত বাবা বাবুল হোসেন আকন্দ (বাঁয়ে), হত্যার শিকার ছেলে বিপ্লব আকন্দ (ডানে)

গাজীপুরের চাঞ্চল্যকর মাদ্রাসাছাত্র বিপ্লব হোসেন আকন্দ (১৪) হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। দ্বিতীয় স্ত্রীর নির্দেশে বাবা বাবুলই মূলত তার ছেলেকে নিজ হাতে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ওই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকায় বাবা বাবুলসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ শুক্রবার (১১ জুন) এ তথ্য জানা গেছে।

গত বুধবার (১০ জুন) দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে তাদের জয়দেবপুর উপজেলার পিরুজালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন নিহত বিপ্লব হোসেনের বাবা বাবুল হোসেন আকন্দ (৪২)। তিনি গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন পিরুজালী আকন্দপাড়া গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেন আকন্দের ছেলে। অন্যজন তার সহযোগী একই গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে এমদাদুল (৩৫)। এমদাদুল সম্পর্কে বাবুল হোসেন আকন্দের সহযোগী ও ভাগনিজামাই।

গ্রেপ্তারের পরই বাবুল হোসেন আকন্দকে এবং বৃহস্পতিবার (১০ জুন) এমদাদুলকে আদালতে হাজির করা হলে উভয়েই ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এ ঘটনায় নিহত বিপ্লবের মা খাদিজা আক্তার বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি থানা পুলিশ ১ মাস তদন্ত করে রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় দায়িত্ব পায় পিবিআই গাজীপুর।

পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ (পুলিশ সুপার) মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, গত ৮ মার্চ রাত ৮টায় নিহত বিপ্লব আকন্দ মসজিদে নামাজ পড়ার কথা বলে ঘর থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। পরদিন সকালে জয়দেবপুর থানাধীন পিরুজালী বকচরপাড়ার জনৈক সানাউল্লাহ মুন্সির বাঁশঝাড়ের পাশে ফাঁকা জায়গা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আসামি বাবুল হোসেন আকন্দ ১২ বছর আগে তার আপন ছোট ভাইয়ের স্ত্রী জুলিয়াকে বিয়ে করেন এবং পৈতৃক ২ কাঠা জমি বিক্রি করে টাঙ্গাইলে তার বাবার বাড়িতে ঘর তৈরি করে দেন। কিন্তু জুলিয়া সেখানে বিভিন্ন ছেলেদের সঙ্গে চলাফেরা করায় বাবুল তাকে নিয়ে পিরুজালীতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন।

জুলিয়া প্রায়ই বাবুলের বড় স্ত্রী খাদিজাকে মারধর করতেন। ফলে খাদিজার সঙ্গে জুলিয়ার ঝগড়াবিবাদ লেগে থাকত। ঘটনার ৩ মাস আগে বাবুলের সঙ্গে জুলিয়া ঝগড়া করে তার ছোট মেয়েকে নিয়ে (বাবার বাড়ি) টাঙ্গাইল চলে যান। অপর আসামি এমদাদ সম্পর্কে বাবুলের ভাগনিজামাই। এমদাদের সঙ্গে বাবুলের দ্বিতীয় স্ত্রী জুলিয়ার গোপন সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের সুযোগে জুলিয়া এমদাদকে দিয়ে বাবুলের প্রথম স্ত্রীকে ঘরছাড়া করার চেষ্টা করতেন।

ঘটনার ১০ দিন আগে জুলিয়া পিরুজালী এসে এমদাদের সঙ্গে দেখা করে বিপ্লবকে হত্যা করার জন্য বাবুলকে রাজি করাতে বলেন। পরে এমদাদুলের পরামর্শে তার ছোট ছেলে বিপ্লব আকন্দকে খুন করার পরিকল্পনা করেন বাবুল।

পিবিআই পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার দিন বাবুল ছেলে বিপ্লবকে নিয়ে এশার নামাজ পড়ার জন্য বাসা থেকে বের হন। এ সময় বাবুল তার ছোট স্ত্রীকে তাবিজ করার কথা বলে বিপ্লবকে দিয়ে প্রতিবেশী খালেকের বাসা থেকে একটি কোদাল আনান। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী এমদাদ বিপ্লবকে সেভেনআপের সঙ্গে নেশাজাতীয় ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান এবং বাবুল ছেলেকে নিয়ে পিরুজালী বকচরপাড়ার জনৈক সানাউল্লাহ মুন্সির বাঁশঝাড়ের পাশে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যান।

এরপর বিপ্লব ঝিমিয়ে পড়ে এবং বাড়ি যাওয়ার কথা বলে মাটিতে শুয়ে পড়ে। পরে বাবুল কোদাল দিয়ে বিপ্লবের গলায় কোপ দেন। এ সময় বিপ্লব লাফিয়ে ওঠার চেষ্টা করলে বাবুল পুনরায় কোদাল দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন এবং কোদালটি পার্শ্ববর্তী ঢাকাইয়ার ধানের জমিতে ফেলে বাসায় চলে যায়। পরে বাবুলের কথামতো এমদাদ কোদালটি সেখান থেকে নিয়ে তার বাসায় লুকিয়ে রাখেন বলে জানায় পিবিআই।

কেএফ

মন্তব্য করুন

daraz
  • অপরাধ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় যুবক নিহত
সেই ইজিবাইকচালকের পাশে দাঁড়াল র‌্যাব
ট্রেনে কাটা পড়ে যুবক নিহত
প্রাইভেটকারের চাপায় ভ্যানচালক নিহত
X
Fresh