• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

বাদী থেকে যেভাবে প্রধান আসামি সাবেক এসপি বাবুল

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১২ মে ২০২১, ১৬:৫৫
মিতু হত্যা: বাদী থেকে যেভাবে প্রধান আসামি সাবেক এসপি বাবুল

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার পেছনের ঘটনা সিনেমার গল্পকে হার মানিয়েছে। স্ত্রীকে হত্যার জন্য নাটকীয় কাহিনীর জন্ম দিয়েছিলেন সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার। মিতু হত্যার দায়ে বাদী থেকে প্রধান আসামি হয়ে গেলেন বাবুল আক্তার।

প্রায় পাঁচ আগে চট্টগ্রামে জনসম্মুখে প্রকাশ্যে রাস্তায় মিতুকে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনার পর বাবুল আক্তার নিজেই স্ত্রী হত্যার দায়ে বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যার প্রায় পাঁচ বছর পর বাদী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্তাতা পায় পিবিআই।

গতকাল বুধবার (১১ মে) বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ আরও একটি মামলা দায়ের করেছেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।

পিবিআই জানায়, মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করে তার স্বামী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পেয়েছে। কিন্তু মামলার বাদীকে ইচ্ছে করলেই আইন অনুযায়ী গ্রেপ্তার করা যায় না। আগের মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে ইতোমধ্যে আদালতে গেছেন পিবিআই'র তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। পরে দায়েরকৃত নতুন হত্যা মামলায় বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।

পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, মামলা তদন্তের স্বার্থে ইচ্ছা করলেই আমরা সবকিছু বলতে পারি না। কাগজে-কলমে যা রয়েছে তাই বলা হচ্ছে। মিতু হত্যার ঘটনায় উদ্ধার হওয়া ভিডিও ফুটেজ কামরুল ইসলাম মুসা নামে একজন ছিলেন। মুসাকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও বলেন, বাবুলের অনুপস্থিতিতে মুসা নিয়মিত বাবুলের বাড়িতে বাজার করে দিতেন। মুসাকে শুধু বাবুল চিনেন। মিতু হত্যার ঘটনায় উদ্ধার হওয়া ভিডিও ফুটেজ মুসাকে স্পষ্ট চেনা গেছে। কিন্তু তদন্তে ও জিজ্ঞাসাবাদে মুসার দিকে বাবুল আক্তারের সন্দেহ হচ্ছিলো না। পরে আমরা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছি যে বাবুল আক্তার ইচ্ছাকৃতভাবে তার ব্যক্তিগত সোর্স মুসাকে সন্দেহ করেনি বা সন্দেহজনক বলে পুলিশকে জানায়নি।

ঘটনায় প্রথমে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা আসেনি। মহামান্য হাইকোর্ট জানতে চেয়েছেন কতোদিন ঝুলে থাকবে এ মামলা? তদন্তে কিছু নতুন প্রশ্ন আসে, সেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে মামলা ভিন্নদিকে মোড় নেয়।
বনজ কুমার মজুমদার বলেন, মিতু হত্যার পর আপনজন হারানোর মতো বেদনা বাবুলের মধ্যে দেখা গিয়েছিল। তাই তার কথা সবাই বিশ্বাস করেছিলেন। তবে তদন্তের স্বার্থে পিবিআই বাবুল আক্তারকে ডেকে ছিল। সাক্ষাতের পর বাবুল আক্তার পিবিআইকে কিছু প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। বিষয়গুলো আইজিপিকে জানানো হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকেও জানানো হয়। এ অবস্থায় ব্যাক করার সুযোগ নেই বলে জানায় পিবিআই।

পিবিআই প্রধান বলেন, মামলার তদন্তে আমরা নড়াইলের এক লোককে পর্যবেক্ষণে নেই। তার নাম গাজী আল মামুন, তিনি বাবুল আক্তারের বন্ধু। তার অপর বন্ধু সাইফুল হককেও পিবিআই ডাকে। তারা সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এর ভিত্তিতে পুরনো মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার নতুন মামলায় পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারকে এক নম্বর আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (১২ মে) পাঁচলাইশ থানায় মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন।

এফএ

মন্তব্য করুন

daraz
  • অপরাধ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh