পরকীয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা মাজহার: অতঃপর স্ত্রীর মামলায় গ্রেপ্তার
পরকীয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর দারুস সালাম থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম মাজহার আনামের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার স্ত্রী ফিরোজা পারভীন দারুস সালাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মাজহার আনামকে। মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ১১ (গ) ধারায় দায়ের করা হয়, মামলা নং-৩৩। মামলায় অভিযোগ করা হয়- ‘যৌতুকের জন্য মারপিট করিয়া গুরুতর জখম ও সহায়তা করার অপরাধ।’
আজ মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) এই মামলাটি রুজু হয়। একই মামলায় মাজহার আনামের ভাই, বোন, ভাগিনা এবং যার সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক , সেই নাজমা আক্তার মুন্নিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, কামরুল ইসলাম (৪১), মাকসুদ আনাম (৩৮), মিলি (৪৮), ফুয়াদ (২০), সাগর সরকার (৪৫), নাজমা আক্তার মুন্নি।
মামলার বাদী এবিএম মাজহার আনামের (৫০) স্ত্রী ফিরোজা পারভীন (৪৩)
এজহারে অভিযোগ করেন, স্বামী মাজহার তার সাথে দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ ঘর সংসার করে আসছিলো, তাদের ১১ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলে সন্তান রয়েছে। সন্তান হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় আসামী মাজহার যৌতুকের জন্য বাদীর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে বাদীর পরিবার দফায় দফায় ২০ লাখ টাকা এবং বিভিন্ন আসবাবপত্র আসামী মাজহারকে প্রদান করে।
এজহারে বলা হয়, আসামী একজন লম্পট, চরিত্রহীন, পরনারী আসক্ত, বিভিন্ন মহিলাদের সাথে তার কু-রুটিপূর্ণ ছবি আছে। সে অস্ত্র মামলার আসামি, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে ধরা পড়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিলো, ওই মামলাটি এখনও চলমান। গতবছর এপ্রিল মাসের ১২ তারিখ বিকাল ৩ টায় আসামী মাজহার অন্যান্য আসামীদের কুপ্রোরচনায় বাদীর পরিবারের কাছ থেকে আরও ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। যার ফলশ্রুতিতে গতবছর ১২ ডিসেম্বর বিকেল ৩ টায় আসামী মাজহার ও অন্যান্য আসামীরা পূর্বের দাবিকৃত ১০ লাখ টাকা চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামীগণ বাদীকে শারীরিক নির্যাতন করে। পরে তাকে গুরতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা করায়। কিছুটা সুস্থ হয়ে বাদী একমাত্র শারীরিক এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আপোষ মিমাংসার উদ্দেশ্যে গত সোমবার (২৫ জানুয়ারী) সন্ধ্যা ৭ টায় আসামী এবং বাদী যে ফ্লাটে বসবাস করত সেখানে গিয়ে দেখতে পায় বাদীর আলমারির তালা ভাঙ্গা এবং বাদীর বিয়ের সময় উপহার হিসেবে পাওয়া ১৫ ভরী স্বর্নালঙ্কার, গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র বিবাদীগণ সরিয়ে ফেলেছে। এই সময় আসামী মাজহার যৌতুকের ১০লাখ টাকা ছাড়া বাদী কেন বাসায় ঢুকেছে এই বলে চুলের মুঠি ধরে কিল ঘুষি লাথি মারে এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে বাদী হাত দিয়ে ঠেকায়। যাতে তার হাত গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হয়।
এসময় মামলার অপর আসামী মিলি বাদীকে এলোপাথারি কিল ঘুষি লাথি মারে এবং বাদীর প্রতিবন্ধী সন্তানকে মারধর করে। তখন বাদীকে অন্যান্য আসামীরা মারধর করা অবস্থায় আসামী কামরুল ইসলাম বাদীর নাকে ঘুষি মেরে রক্তাক্ত করে। একপর্যায়ে আসামী মাজহার বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে অন্যান্য আসামীর সহযোগিতায় বালিশ চাপা দেয়। তখন বাদীর ডাক চিৎকারে আপোষ মীমাংসার জন্য পাশের রুমে অবস্থানরত বাদীর আত্মীয় স্বজন এগিয়ে এসে বাদীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা করায়।
কেএফ
মন্তব্য করুন