• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৬:৫৯

১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। প্রতিবাদে চুপ থাকেনি ছাত্রসমাজ। '৫২, '৬২, '৬৬, '৬৯, '৭১-এর মতো এবারও জ্বলে ওঠে তারা। ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে পোস্টার লাগাতে গিয়ে গ্রেপ্তার ও ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন ছাত্রনেতা শীবলি কাইয়ুম, হাবিবুর রহমান ও আব্দুল আলী।

এরশাদ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী মজিদ খান ক্ষমতায় এসেই প্রণয়ন করেন নতুন শিক্ষানীতি। প্রাথমিক স্তরেই বাংলার সঙ্গে ইংরেজী ও আরবি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেন। মূলত ধর্মকে রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহারই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। খর্ব করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন। খারাপ রেজাল্ট হলেও ৫০ ভাগ শিক্ষার ব্যয় দিলে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেয়ার কথা বলা হয় এতে।

মজিদ খানের শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে ১৯৮২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ঐক্যমতে পৌঁছায় ছাত্র সংগঠনগুলো। ২১ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে গঠিত হয় সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। শুরু হয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর ও জনমত তৈরির কাজ।

ছাত্রসমাজের এ আন্দোলনকে প্রতিহত করতে ১৯৮৩ সালের ২৫ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি খন্দকার মোহাম্মদ ফারুককে। প্রতিবাদে ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি ছাত্র ধর্মঘট পালন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দেয়। সেদিনই জন্ম নেয় এদেশের ইতিহাসের একটি কালো অধ্যায়ের।

ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নেন হাজারো শিক্ষার্থী। শান্তিপূর্ণ ও সুশৃংখল মিছিল যায় হাইকোর্টের গেট হয়ে কার্জন হলে। হঠাৎ বিনা উস্কানিতে পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ, ইট-পাটকেল ও বেপরোয়া গুলি ছুঁড়লে নিহত হন জয়নাল, জাফর, মোজাম্মেল, কাঞ্চন, দীপালীসহ অনেকেই। সেই থেকে এই দিনটিকে ‘স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।

শহীদ জয়নালকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ছাত্র-শিক্ষক ও ক্ষুব্ধ জনতার ঢল নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায়। জানাজায় অংশ নিতে আসা মানুষের ওপর আর্মড পুলিশ, বি.ডি.আর ও মিলিটারি সাজোয়া যান নিয়ে হিংস্রভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অপরাজেয় বাংলার সমাবেশে নির্বিচারে চলে গ্রেপ্তার, বুটের আঘাত ও লাঠিচার্জ।

গ্রেপ্তার করা হয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা খ ম জাহাঙ্গীরকে।

ছাত্র সমাজের দাবির মুখে ১৮ ফেব্রুয়ারি স্থগিত হয়ে যায় শিক্ষানীতি। মুক্তি দেয়া হয় আটক ৩ ছাত্রনেতাকে। ফিরিয়ে দেয়া হয় ঘরোয়া রাজনীতির অধিকার।

১৭ ফেব্রুয়ারি ১ হাজার ২১ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু আটকে রাখ হয় ৩শ’ ১০ জনকে।

স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে শিক্ষা অধিকার চত্ত্বরে ফুল দিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারির শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাবেক নেতারা।

এছাড়া দুপুরে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষ‌্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। এতে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশন ও বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর কর্মীরা অংশ নেন।

এইচটি/এএইচ/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh