• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

কর্মসংকটে ধুকছে রাজধানীর হরিজনরা, নিয়োগে কোটা মানছে না সিটি করপোরেশন

সিয়াম সারোয়ার জামিল, আরটিভি অনলাইন

  ১৯ অক্টোবর ২০১৯, ১৮:০৩

রাজধানী ঢাকার হরিজন জনগোষ্ঠীর সদস্যরা কর্মসংস্থান সংকটে পড়েছেন। গত কয়েক দশকে হরিজন সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী বাড়লেও সেই অনুপাতে কর্মসংস্থান বাড়েনি। নিয়োগে আশি শতাংশ কোটা থাকলেও তা মানছে না সিটি করপোরেশন। স্বাভাবিক জীবনযাপন করার জন্য ন্যূনতম যে কাজের প্রয়োজন হরিজন সম্প্রদায়ের হওয়ায় সে কাজ পাচ্ছে না তারা। ফলে বিপাকে পড়েছে এই পরিবারগুলো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশজুড়ে প্রায় ১৫ লক্ষ হরিজন সম্প্রদায়ের বসবাস। এর বড় অংশই রাজধানী ঢাকায় বসবাস করেন। এদেরও মধ্যে ভিন্ন নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে কাজ করছেন। নিজেদের যারা হরিজন নামে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন। ১৮৬৪ সালে ঢাকা মিউনিসিপালিটি'র চাকরির প্রলোভনে দেখিয়ে তাদের আগমন। সেই চাকরি এখনো হয়নি স্থায়ী। একবিংশ শতাব্দীতে, রাষ্ট্র, এ জাত পেশায় ৮০ শতাংশ কোটার প্রতিশ্রুতি দিলেও, বেকারত্ব আর দুর্নীতি তাও করেছে অধরা।

হরিজনদের সংগঠনগুলো বলছে, রাজধানীতে বর্তমানে জাত সুইপার জনগোষ্ঠী ২২ হাজার। আর, দুই সিটি করপোরেশনে কাজ করে মাত্র তাদের ২ হাজার জন। সরকার প্রতিশ্রুত ৮০ শতাংশ কোটা থাকলেও সিটি করপোরেশনে ৭,৯৫৯ জন পরিচ্ছন্ন কর্মীর পদ ৭৫ শতাংশ দখল করে নিয়েছে অন্যরা।

মিরানজিলা হরিজন সিটি কলোনী সভাপতি গগণ লাল জানান, টাকা নিয়ে কাজ দেয়। টাকা ছাড়া কাজ দেওয়া হয় না। ৫ লাখ থেকে ৬ লাখ টাকা দিতে হয়। দিতে পারেনা, এ জন্যে আমরা কাজ করতে পারি না। কাগজ দেওয়া হয়েছে, দরখাস্ত দেওয়া হয়। কাজ হয় না। তাদের একজন বলেন, আমার ঘরে পাঁচটা চাকরি ছিল। এখন একটা মাত্র চাকরি। আমলাদের কারণে আমরা দূরে সরে যাচ্ছি।

হরিজন ঐক্য পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণলাল দাস জানান, জনসংখ্যা বেড়েছে কিন্তু কর্মসংস্থান এবং বাসস্থান বাড়েনি। একজনের আয়েই বেশিরভাগ মানুষের সংসার চলছে। হরিজন সম্প্রদায়ের হওয়ার কারণে কোনো খাবার হোটেলে তাদের কাজ দেয়া হয় না। এছাড়াও এ সম্প্রদায়ের হওয়ায় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হরিজন সম্প্রদায়ভুক্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক কর্মচারী জানান, দেড়শ বছর আগের মিউনিসিপালিটির সেই চাকরি সিটি কর্পোরেশনে পরিবর্তন হলেও নেই কোন পেনশন বা গ্রাচুইটি ফান্ড। বেশিদিন না হলেও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩৪ শতাংশ পরিচ্ছন্নতা কর্মীর বেতন স্কেল অনুযায়ী দেয়া হচ্ছে। তা থেকেও বঞ্চিত এ জাত সুইপাররা।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক। তিনি আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আছে। সিটি করপোরেশনের কোনো নিয়ম নাই কোনো অস্থায়ী চাকরি স্থায়ী করার। সরকার অনুমোদন দিলে আমরা তা অবশ্যই বিবেচনা করে দেখবো।

তিনি আরও বলেন, দেশজুড়েই তো বেকার সমস্যা। হরিজনরাও যেহেতু দেশের নাগরিক। তারাও এ সমস্যার মধ্যে পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।

এসজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh