• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

কালো টাকা সাদা করার পক্ষে পিডব্লিউসির সমর্থন ‘অযৌক্তিক ও অযাচিত’: টিআইবি

আরটিভি অনলাইন

  ১৯ জুন ২০১৯, ২০:০৩
TIB -RTVONLINE
ফাইল ছবি

বহুজাতিক পরামর্শক সেবা প্রতিষ্ঠান প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারস (পিডব্লিউসি) বাংলাদেশ কালো টাকা সাদা করার পক্ষে ‘অযৌক্তিক ও অযাচিত’ সমর্থন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সেই সঙ্গে সংস্থাটি প্রস্তাবিত বাজেট পর্যবেক্ষণে পিডব্লিউসির বক্তব্য- ‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া ছাড়া সরকারের হাতে আর কোনও বিকল্প নেই’-এর কঠোর সমালোচনা করেছে। খবর ইউএনবির।

বুধবার এক বিবৃতিতে টিআইবি বলে, কালো টাকা সাদা করার মতো অনৈতিক ও দৃশ্যত অকার্যকর পদক্ষেপের পক্ষে- ‘ভারতেও এ সুবিধা দেয়া হয়েছিল’- এমন যুক্তি দেয়া রীতিমতো অনৈতিক।

টিআইবি আশা করে, সরকার বরং কালো টাকার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে, সুরক্ষা বা নতুন সুযোগ দেবেন না এবং এর মাধ্যমে দুর্নীতি বিকাশের ঝুঁকি বৃদ্ধি করবে না।

সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কালো টাকাকে প্রায় অবাধে, নামমাত্র কর দেয়া সাপেক্ষে বৈধতা দেয়া ও ২০১৯-২০ বাজেটে ঘোষিত গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে বিনিয়োগের সুযোগ করে দেয়া অসাংবিধানিক, অনৈতিক, বৈষম্যমূলক ও দুর্নীতি সহায়ক।

অথচ প্রাইসওয়াটারহাউজকুপারস সম্পূর্ণ অযাচিত, উদ্দেশ্যমূলক ও অনৈতিকভাবে এ প্রস্তাবকে সমর্থন দিচ্ছে, অভিযোগ করেন তিনি।

ড. জামান বলেন, অন্য কোনও দেশে এ ধরনের অনিয়মের চর্চা হয়ে থাকলে তা এ দেশেও অনুকরণের প্রস্তাবের পেছনে কোনও নৈতিক ভিত্তি থাকতে পারে না। সুতরাং কালো টাকা সাদা করার স্বপক্ষে প্রাইসওয়াটারহাউজকুপারস যেভাবে ভারতের উদাহরণ টেনে এনেছে সেটা একেবারেই ভিত্তিহীন, অযৌক্তিক, অযাচিত ও অগ্রহণযোগ্য।

‘ভারতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। আর তাদের অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফাইনান্স অ্যান্ড পলিসি ২০১৩ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছিল যে কালো টাকা ভারতের মোট জিডিপির ৭১ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকতে পারে, অর্থমূল্যে যার পরিমাণ ছিল ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ ভারত সরকার দুই দশকেরও বেশি সময় আগে দিয়েছিল তা কার্যত কোনও সুফলই দিতে পারেনি,’ যোগ করেন তিনি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক জানান, ভারতে বিগত বছরগুলোতে কালো টাকা নিয়ন্ত্রণে ব্ল্যাক মানি ল এবং ফিউজিটিভ ক্রিমিনাল অফেন্ডার্স অ্যাক্টের মতো কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ এবং মুদ্রা রহিতকরণের মতো পদক্ষেপের পর এক লাখ ৩০ হাজার কোটি রুপি অপ্রদর্শিত অর্থ করের আওতায় এসেছে আর জব্দ করা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি রূপির সম্পদ।

সরকার প্রধান কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়ার পেছনে যে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন সে বিষয়ে ড. জামান বলেন, সব সরকারই এ সুযোগ দিয়েছে কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাবে ১৯৭২ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ১৮ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি অপ্রদর্শিত অর্থ করের আওতায় এসেছে। যেখানে বাংলাদেশ ইকোনোমিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবেদনে দেখা গেছে ২০১৮ সাল নাগাদ ৫ থেকে ৭ লাখ কোটি টাকার অপ্রদর্শিত অর্থ দেশের অর্থনীতিতে ক্রিয়াশীল ছিল।

‘আমরা আশা করি সরকার এ বাস্তবতা বিবেচনায় নেবে এবং দুষ্টের পালন না করে বরং কঠোর আইন করে এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে। তা না হলে দেশের ভালো করদাতারা নিরুৎসাহিত হবেন নিশ্চিত ভাবেই। আমরা অবাক হব না যদি তারাও বাড়তি সুবিধা পাবেন এ নিশ্চয়তা থেকে রাতারাতি কালো টাকার মালিক হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন। আমরা তাই প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতিতেই আস্থা রাখতে চাই,’ বলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদ বিবরণী নিয়ে টিআইবির উদ্বেগ
অভিজ্ঞতা ছাড়াই টিআইবিতে চাকরি
অগ্নিকাণ্ডের দায় এড়ানোর চেষ্টা চলছে : টিআইবি
টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বিআরটিএর প্রতিবাদ
X
Fresh