• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বাংলাদেশে বিটকয়েন নিয়ে কেন হঠাৎ আলোচনা?

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৭:১২
ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ থেকে বহির্বিশ্বে অবৈধভাবে ভার্চুয়াল মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনে যুক্ত চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার হবার পর বিষয়টি এখন জোরেসোরে আলোচিত হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এ ধরনের অভিনব পদ্ধতিতে ডিজিটাল অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের গ্ৰেপ্তার হওয়ার প্রথম ঘটনা এটি।‌

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অচিরেই আরও বেশ কিছু জেলায় এ ধরনের অভিযান চলবে।

বিটকয়েন এক ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ভার্চুয়াল মুদ্রা। মুদ্রাটির দাম ওঠা-নামার মধ্যেই রয়েছে।

যদিও বাস্তবে এর অস্তিত্ব নেই। ইন্টারনেট সিস্টেমের মাধ্যমে প্রোগ্রামিং করা আছে যেটি চাইলে কেনা যায়। ইন্টারনেট সিস্টেমকে ব্যবহার করে কিছু ব্যক্তি এটি গড়ে তুলেছে।

অর্থনীতিবিদদের ভাষায় এটা এক ধরনের জুয়াখেলার মতো, যেটার ভিত্তিতে হয়তো টাকা খাটিয়ে লাভজনক কিছু করা যেতে পারে। সেজন্য অনেক মানুষ সেদিকে আকৃষ্ট হচ্ছে।

বগুড়া জেলা পুলিশের সাইবার টিম চলতি মাসের ২৪ ও ২৫ এপ্রিল হবিগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুর জেলা থেকে বিটকয়েন কেনাবেচা চক্রের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ বলছে, চক্রটি বছর দুয়েক ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভার্চুয়াল মুদ্রা বা বিটকয়েনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জুয়ার লেনদেন বা কালো টাকা সরকারের চোখ থেকে লুকানোর কাজটি করে দিতো।

বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা জানান, অনলাইনে অবৈধ পন্থায় মুদ্রা আদান-প্রদানের এই পদ্ধতির নাম ক্রিপটোগ্রাফি। এর মাধ্যমে ‘বিপিএল’ বা ‘আইপিএলে’র খেলার সময়কার জুয়া এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক জুয়ার আসরে বাংলাদেশ থেকে অর্থ লেনদেন করা হচ্ছিল বছর দুয়েক ধরেই। অবশেষে বগুড়া পুলিশের সাইবার টিম চক্রটির সন্ধানে হবিগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুর জেলায় অভিযান চালায়।

গ্রেপ্তার করা হয় চক্রের মূলহোতা আহসান হাবিব ওরফে শাহ মোহাম্মদ তানিম, সোহেল মিয়া ওরফে কাজী সোহেল এবং মারুফ হোসাইন ওরফে মারুফ বিল্লাহ।

বাংলাদেশে এই ভার্চুয়াল মুদ্রা নিয়ে আগেও অন্তত দুই দফায় সতর্ক বার্তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ওই সতর্ক বার্তা জারি করা হয়। যেখানে বলা হয়, ভার্চুয়াল মুদ্রা কোনও দেশের বৈধ কর্তৃপক্ষ ইস্যু করে না বিধায় এর বিপরীতে আর্থিক দাবির কোন স্বীকৃতিও নেই।

ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেনের দ্বারা মানি লন্ডারিং এবং সন্ত্রাসে অর্থায়ন সম্পর্কিত আইনের লঙ্ঘন হতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সতর্ক করে দেয়া হয়।

এ ধরনের লেনদেনের মাধ্যমে আর্থিক এবং আইনগত ঝুঁকি রয়েছে বলে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক উল্লেখ করে।

কিন্তু এই সতর্ক বার্তার পরও বাংলাদেশে এ ধরনের মুদ্রার ব্যবহারের ঘটনা অবাক করে দেয়ার মতো।

বগুড়া জেলা পুলিশের সাইবার টিমের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক এমরান মাহমুদ তুহিন বলছেন, বিটকয়েন বাংলাদেশে নিষিদ্ধ। কিন্তু এ ধরনের চক্র অত্যন্ত সুকৌশলে দেশের অর্থ পাচার করে আসছে। যা এদেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এছাড়াও এই চক্রের প্রলোভনে দ্রুত ধনী হবার আশায় এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে আন্তর্জাতিক জুয়ায় জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।‌ প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসছেন তারা।

বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা জানান, এই চক্রটি বাংলাদেশে বসেই দুটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিটকয়েন দিয়ে প্রায় ২৮ হাজার অবৈধ লেনদেন করে দিয়েছে।এদের সঙ্গে যুক্ত আরও কয়েকজনের অনুসন্ধানে গোয়েন্দা পুলিশ মাঠে রয়েছে।

এমরান মাহমুদ তুহিন জানান, বিটকয়েন লেনদেনের সঙ্গে জড়িত এই চক্রটি ছাড়াও আরও বেশ কিছু চক্র সক্রিয় রয়েছে। তাদের চিহ্নিত করতে সাইবার টিম কাজ করছে।

তিনি জানান, গ্ৰেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে। তারা এ সংক্রান্ত লেনদেনের বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন। সব যাচাই বাছাই চলছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলা সম্ভব হচ্ছে না ।

এস

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বিটকয়েনের বড় দরপতন
X
Fresh