এমডিকে ‘ওয়াসার সুপেয় পানির শরবত' খাওয়াতে এলো রাজধানীবাসী
দুই দিন আগেই ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খান দাবি করেছিলেন, ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়। সেই ‘সুপেয়’পানিতে তৈরি শরবত এমডিকে পান করাতে মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে ওয়াসা ভবনে হাজির হন রাজধানীর জুরাইন এলাকার বাসিন্দারা।
এদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মিজানুর রহমান। তাদের অবস্থানে আশপাশের উৎসুক মানুষের এক ধরনের জটলা তৈরি হয়। এ অবস্থায় মিজানুর রহমান তার ব্যাগ থেকে জুরাইন এলাকার পানি বের করে জগে ঢেলেছেন। এই পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে ওয়াসার এমডিকে খাওতে চান তিনি।
মিজানুর রহমান নামের জুরাইন এলাকার ওই বাসিন্দা বলেন, আমাদের এলাকায় ওয়াসার পানি ড্রেনের পানির মতো অপরিষ্কার। এটা তো খাওয়া দূরের কথা গন্ধে হাতে নেওয়াই যায় না। এ অবস্থায় ওয়াসার এমডি কিভাবে বলেন ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়, বিশুদ্ধ। তাই আমরা এই পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে খাওয়াতে এসেছি।
এদিকে জুরাইনবাসীর এমন কর্মসূচিতে ওয়াসার ভবনের গেটে অতিরিক্ত পুলিশ, আনসার সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।
মিজানুর রহমান বলেন, পূর্ব জুরাইনের দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা এ উদ্যোগ নিয়েছেন। আমাদের এলাকার পানি খুবই খারাপ, দুর্গন্ধযুক্ত ও ড্রেনের পানির মতো। ২০১২ সালে আমরা জুরাইনের সাড়ে ৩ হাজার বাসিন্দা গণস্বাক্ষর নিয়ে ওয়াসার এমডি বরাবর একটি অভিযোগ করেছিলাম। সেই অভিযোগে কোনও কাজ হয়নি। এখনও প্রতিদিন ময়লা পানি আসে। আমরা কয়েক বছর ধরে ওয়াসার পানি শুধু গোসল, কাপড় ও বাসনকোসন ধোয়ার জন্য ব্যবহার করছি। খাওয়ার জন্য মসজিদের টিউবওয়েলের পানি কিনে খাচ্ছি। প্রতি ১০ লিটার পানির জন্য ২ টাকা দিতে হয়। এ অবস্থায় ওয়াসার এমডি কী মনে করে পানিকে শতভাগ সুপেয় বললেন, তা আমাদের বোধগম্য হয়নি। আজ আমরা এসেছি এর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করবো।
কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যারা একসঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে পানি আনতে যাই, তাদের অনেকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ কর্মসূচি দিয়েছি। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমরা ওয়াসা ভবনে গিয়ে এমডির জন্য ওয়াসার বিভিন্ন কলের পানি নিয়ে এসেছি। যদি তার ডায়াবেটিস থাকে তাহলে শুধু লেবু দিয়ে শরবত তৈরি করে খাওয়াব। তিনি খেয়ে বলবেন, পানি কতটুকু সুপেয়।’
এসজে/পি
মন্তব্য করুন