• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

নৌপথে আসছে ইয়াবার বড় চালান, বিদেশ থেকে অর্থায়ন

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ০২ এপ্রিল ২০১৯, ২৩:১৭

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন(র‍্যাব) ইয়াবা ব্যবসায় এবার বিদেশ থেকে অর্থায়নের তথ্য পেয়েছে। একটি চক্র বিদেশ থেকে ইয়াবা চোরাচালানে এই বিপুল পরিমাণ অর্থের যোগান দিচ্ছে বলে র‌্যাব জানায়। তবে কোন দেশ থেকে মাদকের অর্থায়ন হচ্ছে কৌশলগত কারণে সেটা গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করেনি তারা।

মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) ভোরে রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ৮ লাখ পিস ইয়াবাসহ তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে র‌্যাব-১।

আটকরা হলেন- তুহিন হোসেন (২৫), মো. সবুজ (২৬) এবং মো. শাহজাহান (৩৫)।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় ইয়াবার চালান আনতে ক্রমাগত রুট পরিবর্তন করছে চোরাকারবারিরা। মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবার চালান গভীর সমুদ্রে হস্তান্তর করে মাছধরার ট্রলারে করে উপকূলীয় অঞ্চলে আনা হয়। এরপর সুবিধামতো নৌপথে নিয়ে আসা হচ্ছে ঢাকায়। নতুন রুটের এই ইয়াবা পাচারে যুক্ত হয়েছে নতুন মুখও।


গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে বরগুনা থেকে আসা সপ্তবর্ণা নামের একটি লঞ্চ থেকে ৫ লাখ ৫ হাজার পিস ইয়াবাসহ তুহিন হোসেন (২৫) ও সবুজকে (২৬) আটক করা হয়।

এর সূত্র ধরে দুপুরে আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে একই চক্রের শাহজাহানকে (৩৫) ৩ লাখ ৪৯ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়।

বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।

তিনি বলেন, এ চক্রে আট থেকে ১০ জনের একটি গ্রুপ ইয়াবা চালানে জড়িত, যারা প্রায় দেড় বছর ধরে এ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। র‍্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় তারা নিয়মিত ইয়াবার চালান আনতে রুট পরিবর্তন করে আসছিল। গভীর সমুদ্রে মিয়ানমার-বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় ইয়াবাগুলো হস্তান্ত করে মিয়ানমারের নাগরিকরা। এরপর মাছধরার ট্রলারে করে সেগুলো নিয়ে আসা হতো পাথরঘাটা-পটুয়াখালী-পিরোজপুরসহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায়।
সেখান থেকে চালানটি একাধিক ভাগে ভাগ করে নৌপথে কিংবা সড়কপথে নিয়ে আসা হয় ঢাকায়। একাধিক ভাগে চালান নিয়ে আসার কারণ, একভাগ ধরা পড়লেও অন্যটি যেন সুরক্ষিত থাকে।

তিনি বলেন, ইয়াবার এই চালানের জন্য চোরাচালান চক্রটি দুইটি যন্ত্রচালিত বোট ভাড়া করেছিল। তারা ভুট্টা কিংবা তরমুজের ভেতর ইয়াবা ভরে চালান করতে চেয়েছিল। কিন্তু গত দু’দিন আগের কালবৈশাখী ঝড়ে জলপথে যে ক্ষতি হয়েছে সে বিষয় বিবেচনা করে বোটে না এসে লঞ্চে ইয়াবাগুলো লঞ্চে নিয়ে আসে।

তিনি আরও বলেন, একটি আন্তদেশীয় সিন্ডিকেট এই মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। আমরা এখনো তাদের মূলহোতাকে আটক করতে পারিনি। গভীর সমুদ্রে হাজার হাজার মাছ ধরার ট্রলার থাকে, মাদক চোরাকারবারিরা এই মাছ ধরার ট্রলার ব্যবহার করে। তাই গভীর সমুদ্রে চোরাকারবারিদের প্রতিরোধ করা কষ্টসাধ্য। তবে মাদক চোরাকারবারিদের রুখতে র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর আছে।

তিনি বলেন, ইয়াবা পাচারের সাথে স্থানীয় ট্রলার মালিকদের একটি অংশ জড়িত আছে। চট্টগ্রাম-টেকনাফ রুটে র‌্যাবের বিশেষ অভিযান পরিচালিত হওয়ায় ইয়াবাকারবারি চক্রগুলো ইয়াবা চালানের বিকল্প রুট হিসেবে সাগর পথ ও অভ্যন্তরীণ নদী পথকে বেছে নিয়েছে।

র‍্যাবের ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তা বলেন, এই বড় চালানটি ঢাকার একটি অভিজাত এলাকার একজনের ভাড়া বাসায় যাওয়ার কথা ছিল। সেখান থেকে ইয়াবাগুলো বিভিন্ন স্থানে বণ্টন করে দেয়া হতো। বাসা ভাড়া নেয়ার ক্ষেত্রে তারা অভিজাত এলাকাগুলোকে বাছাই করতো এবং প্রতি চালানের পর তারা বাসা পরিবর্তন করতো। তবে তদন্তের স্বার্থে সেই এলাকা এবং বাসার মালিকের পরিচয় প্রকাশ করেননি তিনি।

গডফাদারদের তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আমাদের এ অভিযানকে তালিকায় সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। তালিকা অবশ্যই আমাদের কাছে রয়েছে, এর বাইরেও যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, সে যেই হোক তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

ইয়াবা ব্যবসায় অবশ্যই নতুন মুখ যুক্ত হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, কম সময়ে লাভজনক হওয়ায় অনেক নতুন মুখ এখানে যুক্ত হচ্ছে। হাতও বদলেছে অনেক। সবার বিরুদ্ধেই র‍্যাবের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আখাউড়ায় ১৮০০ পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক 
শ্রীপুরে পিস্তল ও ইয়াবাসহ যুবক গ্রেপ্তার 
গাঁজাগাছ-ইয়াবাসহ আটক ২
পাথরঘাটায় ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
X
Fresh