১০ বছর পর পিডিবির সাবেক স্টেনোর কাছ থেকে সরকারি গাড়ি উদ্ধার
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) অবসরপ্রাপ্ত তৃতীয় শ্রেণির এক কর্মচারীর দখল থেকে ১০ বছর ধরে অবৈধভাবে ব্যবহৃত সরকারি একটি পাজেরো গাড়ি উদ্ধার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)।
সোমবার মতিঝিলে অভিযান চালিয়ে ঢাকা মেট্রো ঘ-১১-২৮২৭ গাড়িটি আটক করে দুদক টিম।
দুদকের সহকারী পরিচালক সালাউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম এ অভিযান পরিচালনা করে।
সাবেক সরকারি এ কর্মচারীর আরেক পরিচয় তিনি সিবিএ নেতা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি পিডিবির নকশা ও পরিদর্শন পরিদপ্তরের স্টেনো টাইপিস্ট বা কাম মুদ্রাক্ষরিক আলাউদ্দীন মিয়া।
অভিযানকালে দুদক টিম জানতে পারে, প্রতিমাসে গাড়িটির জন্য ডিজেল বরাদ্দ হয় ৪৫০ লিটার, যার আর্থিক মূল্য ২৯ হাজার ২৫০ টাকা। এ হারে প্রতি বছরে জ্বালানি বাবদ ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা খরচ হয়। এভাবে সিবিএ নেতা আলাউদ্দিন ২০০৯ সাল থেকে গত ১০ বছরে গাড়িটির জন্য পিডিবি থেকে ডিজেল খরচ তুলেছেন ৩৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রতি মাসের ড্রাইভারের বেতন বাবদ ৪১ হাজার টাকা খরচ হয়। এ পর্যন্ত এ গাড়ির চালককে ৩৭ লক্ষাধিক টাকা বেতন-ভাতা প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া গাড়িটির পেছনে প্রতিমাসে ১০ লিটার মবিল এবং মেরামত ব্যয় হয়েছে। দুদক টিম আরও জানতে পারে, গাড়িটির লগ বইয়ে আলাউদ্দিন মিয়া স্বাক্ষর করেন না, করেন পিডিবির একজন কর্মচারী।
অভিযান প্রসঙ্গে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ৩য় শ্রেণির কর্মচারী হয়ে গাড়িটি ২০০৯ সাল থেকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। গাড়িটির পেছনে গত ৯ বছরে জ্বালানি তেল, মেরামত এবং গাড়িচালকের বেতন বাবদ প্রায় সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, গাড়িটি জব্দের সময় চালকের বক্তব্য রেকর্ড করে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। গাড়িটি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে বুঝিয়ে দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আইনত তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী কোনোভাবেই ফুল টাইম গাড়ি পাবেন না। এ ধরনের আইন অমান্যতা প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ধ্বংস করার শামিল, যা ছোট দুর্নীতি থেকে বড় দুর্নীতির পথ প্রশস্ত করে। দুদক শিগগিরই এ ঘটনার অনুসন্ধান শুরু করে আইনানুগ পথে অগ্রসর হবে।
এমসি/এসএস
মন্তব্য করুন