• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ভারত থেকে ১৩০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ১৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:৪২
ছবি: সংগৃহীত

গ্রেপ্তার এবং জোর করে মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেয়ার আতঙ্কে চলতি বছর ভারত থেকে এক হাজার ৩০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এদের বেশিরভাগই বর্তমানে আছেন কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) ট্রানজিট ক্যাম্পে।

ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের (আইএসসিজি) মুখপাত্র নয়না বোস এ তথ্য জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা এএফপি’র খবরে বলা হয়েছে। সংস্থাটি জাতিসংঘের এজেন্সিগুলো ও অন্যান্য বিদেশি সংগঠনের সঙ্গে কাজ করে। নয়না বলেন, ৩ জানুয়ারি থেকে এভাবে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে এক হাজারের বেশি রোহিঙ্গা এসেছে।

খবরে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে ২৩০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে ভারত। রোহিঙ্গাদেরকে এভাবে আটক ও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর আতঙ্কে তারা পালিয়ে বাংলাদেশে আসছে। তারা আশ্রয় নিচ্ছে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবিরে।

এএফপিকে নয়না বোস বলেছেন, ৩০০ পরিবারের প্রায় এক হাজার ৩০০ সদস্য ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। তাদেরকে জাতিসংঘের ট্রানজিট সেন্টারে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক এজেন্সি ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র ফিরাস আল খতিব বলেছেন, এ পরিস্থিতি সম্পর্কে তারা অবহিত রয়েছেন।

এদিকে কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম বলেছেন, আমরা শুনেছি প্রায় ৩০০টি পরিবারের এক হাজার ৩০০ রোহিঙ্গা ভয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছেন। এদের বেশিরভাগকেই উখিয়ার বালুখালীর ইউএনএইচসিআরের ট্রানজিট ক্যাম্পে আপাতত রাখা হয়েছে। কিছু কিছু হয়তো এখনও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ক্যাম্পে আছে। তবে সবাইকে ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। এখন তাদের জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে। জায়গা পেলে অন্যত্র সরানো হবে।

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে একটি রোহিঙ্গা পরিবারকে ভারত থেকে জোর করে মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। আর এ থেকে স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ভয়ে রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশে চলে আসা শুরু করেছেন। আমরা এ রকম শুনেছি। বর্তমানে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গার চাপে আমাদের হিমশিম খাওয়ার অবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে আবার ভারত থেকে রোহিঙ্গারা আসছেন, এটি আমাদের জন্য মোটেও ইতিবাচক নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ইকবাল হোসেন বলেন, ভারত থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা ৪৮ জন রোহিঙ্গাকে কুমিল্লা জেলা পুলিশ জব্দ করে। গত ৩ জানুয়ারি এদের কক্সবাজার জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলে উখিয়া থানা পুলিশের মাধ্যমে এদের ঘুমধুম বালুখালী ইউএনএইচসিআর-এর ট্রানজিট ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়। এদের মধ্যে ১০ জন নারী, ১১ জন পুরুষ এবং ২৭ জন শিশু রয়েছেন। এসব ছাড়াও আরও অনেক রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নভাবে বাংলাদেশে চলে এসেছেন বলে আমরা শুনেছি। তবে সঠিক সংখ্যা বলা যাচ্ছে না।

মিয়ানমারে গণহত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে গত বছরের ২৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাড়ে আট লাখ রোহিঙ্গা। এর আগে বিভিন্ন সময়ে আসাসহ বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩২টি অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।

উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-৪ এর হেডমাঝি আব্দুর রহিম বলেন, ভারতে নাকি থাকা-খাওয়ার খুব সমস্যা। দিনমজুরি বা অন্যান্য কাজ করে যা পাওয়া যায়, তা দিয়ে সংসার চলে না। তাছাড়া ওখান থেকে জোর করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। যে কারণে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে চলে আসছেন।

ভারতে ৪০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী আছে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। যাদের মধ্যে সাড়ে ১৬ হাজার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তালিকাভুক্ত। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গত বছরের জুন মাসে জম্মু-কাশ্মীরসহ বিভিন্ন রাজ্যকে এই মর্মে নির্দেশ পাঠিয়েছিল যে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা’দের রাখতে হবে রাজ্যগুলোর এখতিয়ারভুক্ত পূর্বনির্ধারিত শিবিরে। তাদের বায়োমেট্রিক তথ্যসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য তালিকাভুক্ত করতে এবং তাদের কোনও ধরনের পরিচয়পত্র না দেয়ার জন্য বলা হয়েছিল।

এসব পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আপত্তি উঠেছিল এই কারণে যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ব্যাপারে এসব নির্দেশ ছিল বৈষম্যমূলক। কেননা ভারতে অন্য যেসব শরণার্থী আছে, যেমন তিব্বত থেকে পালিয়ে আসা বৌদ্ধ শরণার্থী, তাদের ব্যাপারে এই ধরনের কোনও নির্দেশ দেয়া হয়নি।

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বায়ুদূষণে ২০২৩ সালে শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ 
যোগগুরু রামদেবকে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের তলব
‘ভারতের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব এখন নির্বাচন কমিশনের হাতে’
৮ দিনেও দস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি
X
Fresh