• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ভয়াল ২১ আগস্ট আজ

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ২০ আগস্ট ২০১৮, ২৩:২১

আজ ভয়াল ২১ আগস্ট। ২০০৪ সালের এ দিনে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ১৪তম বার্ষিকী। এদিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ‘সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী’ সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ দলের ২৪ নেতা-কর্মী নিহত হন। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান সে সময়ের বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।

শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই এ সিরিজ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ঢাকার তখনকার মেয়র মোহাম্মদ হানিফ এবং শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী তাৎক্ষণিকভাবে মানব ঢাল তৈরি করে তাকে গ্রেনেডের হাত থেকে রক্ষা করেন। এ ঘটনায় আহত হন আওয়ামী লীগের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী, যাদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন, কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি।


-------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : সরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে ঈদের ছুটি দুই দিন
-------------------------------------------------------

বর্বরোচিত এ গ্রেনেড হামলায় নিহতরা হলেন- আইভি রহমান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব:) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারি, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মোহাম্মদ হানিফ, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন এবং ইসাহাক মিয়া।

হামলায় গুরুতর আহত হন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি (তৎকালীন প্রেসিডিয়াম সদস্য) জিল্লুর রহমান, প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক, ঢাকার সাবেক মেয়র (প্রয়াত) মো. হানিফ, আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর, কাজী জাফর উল্লাহ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নজরুল ইসলাম বাবু, আওলাদ হোসেন, সাঈদ খোকন, মাহবুবা আখতার, অ্যাডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, নাসিমা ফেরদৌস, শাহিদা তারেক দীপ্তি, রাশেদা আখতার রুমা, হামিদা খানম মনি, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম, রুমা ইসলাম, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেইন, মামুন মল্লিকসহ পাঁচ শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ।


-------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : নরসিংদীতে বাস-লেগুনা সংঘর্ষে নিহত ১১
-------------------------------------------------------

পরে শরীরে গ্রেনেডের সেল নিয়ে ব্যাংকক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মেয়র মোহাম্মদ হানিফ। আর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা হামলা থেকে বেঁচে গেলেও গুরুতর আঘাত পান তার শ্রবণ শক্তিতে।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়- এ ভয়াবহ হামলার বিষয়ে নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করেছিল তখনকার বিএনপি জামায়াত জোট সরকার। শুধু তাই নয় হামলার সঙ্গে জড়িতদের বাঁচাতে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়। আলামত নষ্ট করতে ধ্বংস করা হয় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া ৫টি গ্রেনেড।

ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় জজ মিয়া নামে এক ভবঘুরে, এক ছাত্র ও আওয়ামী লীগ কর্মীসহ ২০ জনকে। পরবর্তী তদন্তে তাদের কারো বিরুদ্ধেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

দিবসটিকে ঘিরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাণীতে বলেন, শোকাবহ ২১ আগস্টের মর্মান্তিক ঘটনায় সকল শহিদের স্মৃতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা। গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে হলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহমর্মিতার পাশাপাশি পরমতসহিষ্ণুতা অপরিহার্য। আমার দৃঢ় বিশ্বাস দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে সকল রাজনৈতিক দল নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখবে।

২০০৪ সালের ২১শে আগস্টের সকল শহিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, আমি আশা করি, ২১শে আগস্টের শোককে শক্তিতে পরিণত করে সন্ত্রাস ও জঙ্গিমুক্ত একটি শান্তিপূর্ণ, উদার, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের সকল নাগরিক ঐক্যবদ্ধ হবেন।

তিনি আরও বলেন, ২১শে আগস্টের হামলাকারী, পরিকল্পনাকারী, নির্দেশদাতা এবং মদদদাতাদের সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে দেশ থেকে হত্যা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের চির অবসান এবং দেশে আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দুটি মামলায় আসামি ৫২ জন।

এরমধ্যে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, সাবেক এমপি শাহ মোফাজ্জল কায়কোবাদ, বিএনপি নেতা হারিস চৌধুরী, সাবেক তিন আইজিপি আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী, সাবেক সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা এটিএম আমিন, সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার ও জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক রেজাকুল হায়দার এবং হরকাতুল জিহাদের বেশ কজন নেতা রয়েছেন।

২০১৭ সালের ২৩শে আগস্ট দুটি মামলার যুক্তি উপস্থাপন শুরু করে রাষ্ট্রপক্ষ। এখন পর্যন্ত ১০৯ দিনে ৪৫ জন আসামির পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়েছে। ৫১১ জনের মধ্যে ২২৫ জন সাক্ষ্য দেন। সাফাই সাক্ষী দিয়েছেন ২০ জন। পরবর্তী যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন ২৭, ২৮, ২৯শে আগস্ট।


-------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : গাইবান্ধায় বাসচাপায় বাবা-ছেলেসহ নিহত ৪
-------------------------------------------------------

এদিকে গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিদেশ থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দ্রুত বিচার’ দাবিতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হত্যা মামলার বিচারিক আদালতের রায় দেওয়া সম্ভব হবে। রায়টি হলে দেশ আরও একটি দায় থেকে মুক্তি পাবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি ৫২ জন। এর মধ্যে ১৮ জন পলাতক। এ মামলায় আদালতে ২২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। এছাড়া মামলার এজাহারে অভিযুক্ত আসামিদের প্রত্যেককে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ আদালতে চলা মামলায় এখন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের যুক্তিতর্ক চলছে, এ মাসেই তার যুক্তিতর্ক শেষ হবে। এরপরই তা রায়ের জন্য রাখা হবে। এ হামলায় দায়েরকৃত মামলার পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার আইনি এবং কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করবে। এছাড়া দলের ভ্রাতৃপ্রতিম ও সহযোগী সংগঠনগুলো শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। একই স্থানে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

পাশাপাশি মর্যাদা ও ভাব-গম্ভীর পরিবেশে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে দলের জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়নসহ সব শাখা কমিটি দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করবে।

আরও পড়ুন :

এমসি/ এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
‘অকৃতজ্ঞরা ভুলে যায় জিয়াকে মেজর জেনারেল বানিয়েছিল আওয়ামী লীগ’
বিশ্বের মহিলা প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে শেখ হাসিনা এখন শ্রেষ্ঠ : মোরশেদ আলম
যুদ্ধাহত ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে ফল-মিষ্টি পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর নিষ্ঠা থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান পরশের
X
Fresh