• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

খালেদাই মূল আসামি, তবু সাজা কমলো কেন?

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৭:৪৩

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে দুর্নীতি মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৫ জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে তারেক রহমানের মা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৫ বছর জেল হয়। প্রশ্ন উঠেছে, একই অপরাধে তারেকসহ অন্য সবার তুলনায় কেন কম শাস্তি হলো খালেদা জিয়ার?

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই ঢাকার রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, সরকারি এতিম তহবিলের আর্থিক দায়িত্ববান বা জিম্মাদার হয়ে বা তহবিল পরিচালনার ভারপ্রাপ্ত হয়ে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে পরস্পর যোগসাজশে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা করেছেন, যা দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ১০৯ ধারার অপরাধ৷

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: দেশবাসীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান খালেদার
--------------------------------------------------------

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিলে ইউনাইটেড সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে ১২ দশমিক ৫৫ লাখ মার্কিন ডলার আসে যা বাংলাদেশি টাকায় তৎকালীন ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ২১৬ টাকা৷

তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় ১৯৯১ সালের ৯ জুন থেকে ১৯৯৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই অর্থ দেশের প্রতিষ্ঠিত কোনো এতিমখানায় না দিয়ে অস্তিত্ববিহীন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট গঠন করেন৷ অথচ কোনো নীতিমালা তিনি তৈরি করেননি, করেননি কোনো জবাবদিহিতার ব্যবস্থাও৷

অথচ খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল থেকে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা অস্তিত্ববিহীন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে পাঠান৷ পরে ওই টাকা আত্মসাত করেন যার জন্য তিনি দায়ী৷

তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে বলেন, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় থেকে নিজের পদমর্যাদা বলে সরকারি এতিম তহবিলের আর্থিক দায়িত্ববান বা জিম্মাদার হয়ে বা তহবিল পরিচালনার ভারপ্রাপ্ত হয়ে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে দণ্ডবিধির ৪০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারার অপরাধ করেছেন৷

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে। তবে অন্য ৫ আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ জরিমানা করা হয়।

বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছেন, বিশেষ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। তিনি আদালতের রায়ে বলেছেন, বয়স, স্বাস্থ্য, সামাজিক অবস্থান ও মর্যাদা বিবেচনায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে সাজা কম দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত কিছু বিষয় বিবেচনায় নিয়েছি। সেগুলো হলো ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে হিসাব খুলেছিল কি না।

দ্বিতীয়ত, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চার কোটি ৪৪ লাখ টাকা জমা হয়েছে কি না; এ ট্রাস্টের নামে টাকা আনা হয়েছে কি না। প্রাইম ব্যাংকের মাধ্যমে আত্মসাতের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে কি না।’

বিচারক আরো বলেন, আসামি শরফুদ্দিন আহমেদ ও কাজী সলিমুল হক কামাল এফডিআরের মাধ্যমে এসব টাকা উত্তোলন করেছেন কি না। এসব বিবেচনায় নেওয়ার পর আদালত দেখেছেন আসামিপক্ষ তাদের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করতে পারেনি।

অপরপক্ষে, প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ) তাদের অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছে।

আদালত অপরাধ হিসেবে আমলে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, তারেক রহমানসহ পাঁচজনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন।

এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছি। তার বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণের পর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছিলাম। কিন্তু আদালত বলেছেন, বেগম জিয়ার বয়স, স্বাস্থ্য, সামাজিক অবস্থান ও মর্যাদা বিবেচনায় মামলার মূল আসামী সত্ত্বেও তাঁকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন৷

আরও পড়ুন:

এসজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ল
‘খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে ২৫ মার্চের মধ্যে সিদ্ধান্ত’
বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া
হাসপাতালের পথে খালেদা জিয়া
X
Fresh