রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বঙ্গভবনে গিয়ে সেনাপ্রধান রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এ সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সেনাবাহিনীর সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। এ ছাড়া তিনি দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা ও শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় রাখতে সেনাবাহিনীর কার্যক্রমও তুলে ধরেন।
দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা প্রদানে সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন রাষ্ট্রপতি।
এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যায় বানভাসিদের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো এবং দুর্গত এলাকায় উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডেরও প্রশংসা করেন।
আরটিভি/এমএ/এসএ
মন্তব্য করুন
ক্ষমা চাচ্ছি, ভারতে ইলিশ পাঠাতে পারব না: মৎস্য উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ‘আমরা ক্ষমা চাচ্ছি, কিন্তু ভারতে কোনো ইলিশ পাঠাতে পারব না।’
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা দেখেছি আমাদের দেশের মানুষই ইলিশ খেতে পারেন না। কারণ, সব ভারতে পাঠানো হয়। যেগুলো থাকে সেগুলো অনেক দামে খেতে হয়। আমরাও দুর্গোৎসব পালন করি। আমাদের জনগণও এটি উপভোগ (খেতে) করবে।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, এবারের দুর্গোৎসবে বাংলাদেশের হিন্দুধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্য নাগরিকরা যেন ইলিশ খেতে পারেন সেটি নিশ্চিত করা হবে। ভারতের চেয়ে দেশের জনগণকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।
প্রতিবছর দুর্গাপূজার সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার হাজার টন ইলিশ ভারতে পাঠাতেন। তার সেই উদ্যোগের সমালোচনা করে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ভারতে মাছ পাঠানোর কোনো প্রয়োজনীয়তা ছিল না। ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্কের কথা বলে তার মাছ পাঠানো ঠিক হয়নি। তিনি বাংলাদেশের মানুষের প্রয়োজনীয়তাকে উপেক্ষা করেছেন।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, ইলিশ নিয়ে ভারতের কোনো ইস্যু সৃষ্টি করার দরকার নেই। যদি তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় তাহলে তাদের তিস্তার পানি বণ্টনের সমস্যার সমাধান করা উচিত।
এর আগে, গত ৩ সেপ্টেম্বর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্ট ফোরামের (এফএলজেএফ) সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে ফরিদা আখতার বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে এবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে কোনো ইলিশ মাছ যাবে না। এ ছাড়া আমরা কোনো মাংস আমদানি করতে চাচ্ছি না। এখন লাখ লাখ খামারি গবাদিপশু লালন-পালনের সঙ্গে জড়িত।
উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে তারপর ইলিশ বিদেশে রফতানি করা হবে। দেশের মানুষ ইলিশ পাবে না, আর রফতানি হবে, সেটা হতে পারে না। ফলে এবার দুর্গাপূজায়ও ভারতে যাতে কোনো ইলিশ না যায়, তার জন্য আমি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলেছি।’
আরটিভি /এএ-টি
মুরগি ও ডিমের নতুন মূল্য নির্ধারণ
মুরগি ও ডিমের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ডিম উৎপাদক পর্যায়ে প্রতি পিস ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি ১১ টাকা ০১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সোনালি মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে কেজিপ্রতি ২৬০ টাকা ৭৮ পয়সা, পাইকারি ২৬৪ টাকা ৫৭ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে কেজিপ্রতি ১৬৮ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারি ১৭২ টাকা ৬১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সব বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ছাড়া বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল, বাংলাদেশ পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ, অ্যানিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো ফিড ইনগ্রেডিয়েটস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ট্রেডিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি/সাধারণকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং পোল্ট্রি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের মতামতের ভিত্তিতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর মুরগি (সোনালি ও ব্রয়লার) ও ডিমের এ যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করেছে।
আরটিভি/আইএম/এআর
‘আমি তোমাকে ছাড়বো না, শেখ হাসিনা কাউকে ছাড়ে না’
দায়িত্ব নেওয়ার পাঁচ মাস পরেই ২০০৯ সালে পদত্যাগ করেছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তিনি নিজের পদত্যাগ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন।
সোহেল তাজ বলেন, আমি যেদিন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলাম, সেদিন কেঁদেছিলাম। আমি সেদিন অনুধাবন করতে পেরেছিলাম যে, আমি বড় একটি দায়িত্ব নিতে যাচ্ছি। আমি বাংলাদেশকে পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে খুবই উৎসাহী ছিলাম। কিন্তু আমার সঙ্গে, দেশের সঙ্গে ও দলের সঙ্গে শত্রুতা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাস করি না। মাঠ পর্যায় থেকে রাজনীতি শুরু করেছি। আমি যাতে রাজনীতিতে না আসতে পারি সে জন্য ওপর থেকে অনেকেই বাধা দিয়েছিল। প্রথম টার্মে যখন নির্বাচিত হয়, সেবার আমার দল মাত্র ৫৮টা আসন পায়। বিরোধী দলের রাজনীতি করতে অনেক জুলুম সহ্য করতে হয়েছে। আন্দোলনে-মিটিং-মিছিলে সক্রিয় ছিলাম। দলে আমার কন্ট্রিবিউশন ছিল। আমি কারও পরিচয়ে মন্ত্রিত্ব চাইনি। আমি মনে করি, নিজের যোগ্যতায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলাম।
মন্ত্রিত্ব কেন ছেড়েছিলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে সোহেল তাজ বলেন, আমি দুর্নীতি দেখেছি, অনিয়ম দেখেছি। বিডিআর বিদ্রোহের তদন্তকাজ আমার ভালো লাগেনি, সেখানে অনিয়ম হয়েছে। আমি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছিলাম না। একটা পর্যায়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কথা না শুনতে। তারা আমার কথা শুনবে না কিন্তু আমাকে আবার ওই পদে থাকতে হবে! সুতরাং আমার মনে হয়েছিল, আমাকে এবং আমার পরিবারকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হচ্ছিল না। এরপরও পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চলে যাই। পরে সেখান থেকে তার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। আমি বারবার বলেছি, আমাকে ছেড়ে দেন। কিন্তু তিনি আমাকে ছাড়বেন না। ওটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বিস্ময়কর ফোনালাপ। আমি তাকে (শেখ হাসিনা) বারবার বলেছি আমাকে ছেড়ে দেন। কিন্তু তিনি (শেখ হাসিনা) বলেন, না তোমাকে থাকতে হবে। তোমার কী লাগবে? দলের পদ, যুগ্ম সম্পাদক? কিন্তু আমি বারবার বলেছি থাকব না।
সোহেল তাজ বলেন, সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল- তিনি (শেখ হাসিনা) ফোনকলে গান গাওয়া শুরু করলেন। তিনি গাইলেন, ‘আমি তোমাকে ছাড়ব না, আমি কাউকে ছাড়ি না’। আমি শুনে অবাক হয়ে গেলাম। এটার মানে কি? প্রধানমন্ত্রী কি আমাকে হুমকি দিলেন, নাকি স্নেহ দেখালেন! অনেকেই বলেন, এটা স্নেহের একটা বিষয় ছিল। এরকম অনেকগুলো কারণে আমি পদত্যাগ করেছি।
তিনি বলেন, পদত্যাগের পর আমাকে নাজেহাল হতে হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অনেক অপপ্রচার চালানো হয়েছে। বাংলাদেশে আসলে গোয়েন্দারা আমাকে অনুসরণ করত। ওই সময় আবার অনেকের গুম হওয়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল। একটা আতঙ্কের পরিবেশ ছিল। আমার এক ভাগিনাকে তার ব্যক্তিগত কারণে গুম করা হয়েছিল।
ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার: কী কী করতে পারবে সেনাবাহিনী
রাজধানীসহ সারাদেশে সেনাবাহিনীকে বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে পরবর্তী ৬০ দিন পর্যন্ত তারা সারাদেশে এ ক্ষমতা কাজে লাগাতে পারবেন সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১৮৯৮ এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হলো।
এতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬টি ধারায় সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ধারাগুলো হলো- ১৮৯৮- এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২। এসব ধারা অনুযায়ী সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন। তবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে দায়িত্ব পালন করবেন।
আইনের এসব ধারা অনুযায়ী একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের যেসব ক্ষমতা রয়েছে-
ধারা ৬৪
নির্বাহী বা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে তিনি গ্রেপ্তার ও জামিন দিতে পারবেন। অর্থাৎ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পাওয়ায় এখন দায়িত্ব পালনের সময় সেনা কর্মকর্তাদের সামনে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে অপরাধীদের সরাসরি গ্রেপ্তার করতে পারবেন।
ধারা ৬৫
অধিক্ষেত্র এলাকায় কাউকে গ্রেপ্তার বা গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিতে পারবেন বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারবেন। অর্থাৎ, সেনা কর্মকর্তাদের সামনে অপরাধ সংঘটিত না হলেও, সন্দেহভাজন অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে পারবেন।
ধারা ৮৩
অধিক্ষেত্রের বাইরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে পারবেন। অর্থাৎ, বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে পারবেন সেনা কর্মকর্তারা। আর ৮৪ ধারা অনুযায়ী, অধিক্ষেত্রের বাইরে পরোয়ানা কার্যকর করতে পুলিশকে নির্দেশও দিতে পারবেন। আর ৯৫ ধারা অনুযায়ী, পরোয়ানা বা ডকুমেন্টস বা চিঠিপত্র আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে পোস্টাল বা টেলিগ্রাফ কর্তৃপক্ষকে ব্যবহার করতে পারবেন।
ধারা ১০০
বেআইনিভাবে আটক ব্যক্তিকে উদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা যেকোনো স্থানে তল্লাশি করতে পারবেন। অর্থাৎ, কাউকে অপহরণ বা জোর করে কোথাও আটকে রাখার খবর পেলে সেনা কর্মকর্তারা সেখানে তল্লাশি করতে পারবেন।
ধারা ১০৫
সরাসরি তল্লাশি করার ক্ষমতা, তার (ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি) উপস্থিতিতে যেকোনো স্থানে অনুসন্ধানের জন্য তিনি সার্চ ওয়ারেন্ট জারি করতে পারেন।
ধারা ১০৭
শান্তি বজায় রাখার জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ক্ষমতা।
ধারা ১০৯
ভবঘুরে এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তির ভালো আচরণের জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ক্ষমতা।
ধারা ১১০
অভ্যাসগত অপরাধীর কাছ থেকে সদাচরণের জন্য মুচলেকা গ্রহণ করতে পারবেন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা।
ধারা ১২৬
সদাচরণের নিশ্চয়তা প্রদান করা ব্যক্তির মুচলেকা বাতিল করে সমন বা গ্রেপ্তারি ওয়ারেন্ট জারি করতে পারবেন।
ধারা ১২৭
সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার নির্দেশ দিতে পারবেন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা। ফৌজদারি কার্যবিধির এই ধারা অনুযায়ী একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পাঁচ বা তার অধিক ব্যক্তির বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি। এই ধারা অনুযায়ী সেনা কর্মকর্তারাও যেকোনো ধরনের বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে পারবেন।
ধারা ১২৮
সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে বেসামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করতে পারবেন। অর্থাৎ, চাইলে তারা পুলিশ বা অন্যান্য বেসামরিক বাহিনীর সহায়তা নিতে বা নির্দেশ দিতে পারবেন।
ধারা ১৩০
সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে প্রয়োজনীয় সেনা কমান্ডিং অফিসারদের দায়িত্ব দিতে পারবেন।
ধারা ১৩৩
স্থানীয় উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে ক্ষেত্রবিশেষে ব্যবস্থা হিসেবে আদেশ জারি করতে পারবেন।
ধারা ১৪২
এই ধারার আওতায় জনসাধারণের উপদ্রবের ক্ষেত্রে অবিলম্বে ব্যবস্থা হিসেবে আদেশ জারি করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে সেনা কর্মকর্তাদের।
উল্লিখিত ধারাগুলোর ক্ষমতা ছাড়াও যেকোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর অধীনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার জন্য সরকার এবং সেই সঙ্গে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা সংশ্লিষ্ট এখতিয়ারের মধ্যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
এই আইনের অধীনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তার উপস্থিতিতে সংঘটিত অপরাধ বা ঘটনাস্থলে তার বা তার সামনে উন্মোচিত হওয়া অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারেন। অভিযুক্তের স্বীকারোক্তির পর ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী অপরাধীকে সাজা দিতে পারেন। তবে কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে তা ২ বছরের বেশি হবে না।
আরটিভি/এসএপি
ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেল সেনাবাহিনী, যা বললেন আসিফ নজরুল
রাজধানীসহ সারা দেশে সেনাবাহিনীকে বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। আগামী দুই মাস বাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এই দায়িত্ব পালন করবেন। বিষয়টি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, প্রবাসীকল্যাণ ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল গণমাধ্যমে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে কিছু কিছু অঞ্চলে বিশেষ করে শিল্পাঞ্চলগুলোতে নাশকতা, অরাজকতা এবং দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করার মতো কিছু কর্মকাণ্ড ঘটছে বলে আমরা লক্ষ্য করেছি। উদ্ভূত পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে।
আসিফ নজরুল আরও বলেছেন, এই ক্ষমতা সীমিত সময়ের জন্য দেওয়া হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে এর কোনো অপপ্রয়োগ ঘটবে না। আশা করছি পরিস্থিতির উন্নয়ন হলে সেনাবাহিনীর এই দায়িত্ব পালনের প্রয়োজনীয়তা থাকবে না।
এর আগে গতকাল (১৭ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১৮৯৮ এর ১২ (১) ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হলো।
এতে আরও বলা হয়, ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩, ১৪২ অনুযায়ী এ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।
এর ফলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পাওয়া সেনা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে তারা অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে বা গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিতে পারবেন। একইসঙ্গে নিতে পারবেন প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যবস্থাও।
আরটিভি/আইএম/এআর
স্বামী-সন্তানসহ হেনরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বামী-সন্তানসহ সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন।
দুদকের সহকারী প্রসিকিউটর (সার্বিক) আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, জান্নাত আরা হেনরী, তার স্বামী শামীম তালুকদার ও মেয়ে মুনতাহা রিদায়ী লামের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আদালতে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ।
আবেদনে বলা হয়, জান্নাত আরা হেনরী তার পোষ্যরা জ্ঞাত আয়বর্হিভূত টাকা বা অন্য স্থাবর, অস্থাবর সম্পদসহ আত্মগোপন করেছেন। অনুসন্ধানকালে পাওয়া তথ্যাদি এবং সংশ্লিষ্টরা গুরুত্বপূর্ণ আলামত এবং অবৈধ টাকাসহ যেকোনও মুহূর্তে দেশত্যাগ করতে পারে। এজন্য তাদের বিদেশ যাওয়া থামানো আবশ্যক।
এ ছাড়া একইদিনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বৃহৎ করদাতা ইউনিটের সাবেক কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরীরকেও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
দুদকের সহকারী পরিচালক শাহ আলম শেখের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন।
ঢাবিতে তোফাজ্জল হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন গ্রেপ্তার ৬ শিক্ষার্থী
চোর সন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ছয় শিক্ষার্থী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন এই ছয় শিক্ষার্থীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে রাত ৯টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়া ছয় শিক্ষার্থী হলেন, মো. জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, মো. মোত্তাকিন সাকিন, আল হুসাইন সাজ্জাদ, আহসানউল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম। এরা সবাই ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ছয় শিক্ষার্থীর জবানবন্দি অনুযায়ী তোফাজ্জল হোসেন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন ১৫ থেকে ২০ জন। তারা সবার নাম প্রকাশ করেছেন। শিক্ষার্থীরা বলেছেন, চোর সন্দেহে তিন দফায় তোফাজ্জলকে মারধর করা হয়। তারা বলেছেন, ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে ছাত্রদের ছয়টি মুঠোফোন ও মানিব্যাগ চুরি হয়েছিল। তোফাজ্জল সেদিন রাত ৮টার দিকে হলের ফটক দিয়ে মাঠের ভেতরে যান। তখন কয়েকজন শিক্ষার্থী চোর সন্দেহে তাকে আটক করে হলের অতিথিকক্ষে নিয়ে যান। পরে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাকে স্টাম্প দিয়ে মারধর করা হয়। এরপর তাকে হলের ক্যানটিনে নিয়ে রাতের খাবার খাওয়ানো হয়। খাওয়া শেষে আবার তাকে হলের অতিথিকক্ষে এনে ব্যাপক মারধর করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। তিন ধাপে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী তোফাজ্জলকে মারধরে যুক্ত হয়।
আসামিরা বলেন, সেদিন অতিথিকক্ষে মারধরের পর রাত ১২টার দিকে হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক তোফাজ্জলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তারা জানতে পারেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় তোফাজ্জল মারা গেছেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। পরে বিকেলে ঢাবির প্রক্টরিয়াল টিম ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় অভিযুক্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকলে কিছু ছাত্র তাকে আটক করেন। প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্টরুমে নিয়ে তিনি মোবাইল চুরি করেছেন অভিযোগ তুলে এলোপাতাড়ি চর-থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসা করলে তার নাম তোফাজ্জল বলে জানান। মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাওয়ানো হয়। পরে ফজলুল হক মুসলিম হলের দক্ষিণ ভবনে গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পেছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে তোফাজ্জল অচেতন হয়ে পড়েন।
বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানালে তাদের সহায়তায় তোফাজ্জলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে ১২টা ৪৫ মিনিটের সময় তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরটিভি/এমএ/এআর