সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন ও শহীদুল হক গ্রেপ্তার
পুলিশের সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন ও এ কে এম শহিদুল হককে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) দিবাগত রাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো একটি খুদে বার্তায় দুই সাবেক পুলিশপ্রধানকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আটক করেছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তাদের কি ভূমিকা ছিল এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে।
শহীদুল হক ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। আর আবদুল্লাহ আল মামুন আইজিপি ছিলেন ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ থেকে ৬ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত।
মন্তব্য করুন
জানা গেল শেখ পরিবারের কে কোথায়
জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দেশ। শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে এই প্রথা বাতিলের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে আসে। কিন্তু তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তাদের দাবি না মেনে বল প্রয়োগ করতে থাকে। এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করে। এতে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এরপর তৎকালীন সরকার তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলেও শিক্ষার্থীরা নয় দফা দাবি জানায়। এরপর সরকারের বল প্রয়োগ অব্যাহত থাকলে শিক্ষার্থীদের দাবি আস্তে আস্তে সরকার পতনের এক দফায় রূপান্তরিত হয়। অবশেষে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রোষানলে পদত্যাগ করে দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। এর পর দলের মন্ত্রী-এমপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা কেউ দেশ ছেড়েছেন কেউ আছেন আত্মগোপনে।
এমন অবস্থায় আওয়ামী লীগের দলীয় মন্ত্রী-এমপি এবং শেখ পরিবারের সদস্যরা কে কোথায় আছেন এই জিজ্ঞাসা অনেকের।
জানা গেছে, রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শেখ পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যই এখন আর দেশে নেই। ৫ আগস্টের আগে-পরে তারা দেশ ছেড়ে গেছেন। গত ৫ আগস্ট সামরিক বিমানে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা। ওই দিন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছাড়া পরিবারের আর কোনো সদস্য দেশে ছিলেন না। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দিল্লিতে কর্মরত। সরকারের পতনের সময় তিনি দিল্লিতেই ছিলেন। দিল্লিতে যাওয়ার পর তার মা এবং খালার সঙ্গে সায়মার সাক্ষাৎ হয়। শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক বৃটিশ মন্ত্রী, তিনি লন্ডনে বসবাস করা। শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান সিদ্দিক সরকার পতনের সময় দেশে ছিলেন না।
গত ৩ আগস্ট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশ ছাড়েন বঙ্গবন্ধু পরিবারের আরেক সদস্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস। শেখ ফজলে নূর তাপসের বড়ভাই শেখ ফজলে শামস পরশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান। তিনি দেশে আছেন নাকি বিদেশে এ নিয়ে সংগঠনের কারও কাছে তথ্য নেই। যুবলীগের একজন নেতা জানিয়েছেন, ফজলে শামস পরশ আন্দোলন চলাকালে কোনো এক সময় তিনি বিদেশে গেছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম দেশ ছাড়তে পারেনি বলে জানা গেছে। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য হিসেবে বরিশালে প্রভাবশালী নেতা আবদুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ছোট ছেলেকে নিয়ে ভারতে চলে গেছেন। তার আরেক ছেলে বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এবং আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছোট ভাই সিটির বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ দেশেই আত্মগোপনে আছেন।
বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক এমপি শেখ হেলাল সরকার পতনের আগেই দেশ ছেড়ে গেছেন। তবে তার ছেলে বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক এমপি শেখ সারহান নাসের তন্ময় দেশ ছাড়তে পারেননি। তিনি দেশেই আত্মগোপনে আছেন। শেখ হেলালের ভাই খুলনা-২ আসনের সাবেক এমপি শেখ সালাউদ্দীন জুয়েলকে সরকার পতনের পর টুঙ্গিপাড়ায় আছেন বলে জানা গেছে।
রাজনীতিবিদ-পুলিশসহ ৬২৬ জন সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন: আইএসপিআর
গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর প্রাণ রক্ষার্থে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিচারক, পুলিশ সদস্যসহ ৬২৬ জন সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
রোববার (১৮ জুলাই) এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর)।
এতে বলা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। এ সময় প্রাণনাশের আশঙ্কায় কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিবিধ নাগরিকগণ সেনানিবাসে আশ্রয় প্রার্থনা করেন।
এ প্রেক্ষিতে বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড রোধ, জীবন রক্ষা ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে জীবন বিপন্ন ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ৫ জন বিচারক, ১৯ জন অসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ২৮ জন পুলিশ অফিসার, ৪৮৭ জন পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ বিবিধ ১২ জন ও ৫১ জন পরিবার-পরিজনসহ (স্ত্রী ও শিশু) সর্বমোট ৬২৬ জনকে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় প্রদান করা হয়।
আইএসপিআর জানায়, পরিস্থিতির উন্নতি সাপেক্ষে ৬১৫ জন স্ব-উদ্যোগে সেনানিবাস ত্যাগ করে। আশ্রয় প্রদানকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে এ পর্যন্ত ৪ জনকে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বা মামলার ভিত্তিতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বর্তমানে আশ্রয়প্রাপ্ত ৩ জন তাদের পরিবারের ৪ জন সদস্যসহ মোট ৭ জন সেনানিবাসে অবস্থান করছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সব তথ্য দেওয়া হয়েছে।
প্রথম ধাপে যেসব পণ্যের দাম কমবে, জানালেন প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমের দাম কমিয়ে আনার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে। এজন্য উৎপাদন খরচ কমানোর দিকেও নজর দেওয়া হবে।
রোববার (১৮ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘এসব পণ্যের দাম কীভাবে কমানো যায়, কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে বিষয়ে বাণিজ্যসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে উৎপাদকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এছাড়া উৎপাদন খরচ কমানোর দিকেও কাজ করা যেতে পারে।’
এদিকে বাজার সিন্ডিকেট, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য উৎপাদন নিরাপদ রাখা, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং তাদেরকে ১০ দিনের মধ্যে কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবিসহ ১৫ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদা আখতার বলেন, ‘গণ অধিকার পরিষদের প্রস্তাবনায় আমরা খুশি। কর্মকর্রতাদের সম্পদের হিসাব প্রকাশের বিষয়ে গণ অধিকার পরিষদের দাবির বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদে তুলব। উপদেষ্টা পরিষদে সবাই মিলে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সেটাই করা হবে।’
শেখ হাসিনার পদত্যাগের আগে যেভাবে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান
গত ২ আগস্ট সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে একটি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। ওই দিন এক বৈঠকে তরুণ সেনা কর্মকর্তারা দেশের পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠক সম্পর্কে অবগত একটি সূত্র থেকে এ তথ্য পেয়েছে ভারতের সাপ্তাহিক সংবাদ সাময়িকী দ্য উইক।
বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য সেনাপ্রধান বৈঠকটি ডেকেছিলেন। সূত্রটি জানায়, সেনা কর্মকর্তাদের ক্ষোভ প্রশমনে সেনাপ্রধান এ বিষয়টি তুলে ধরেন যে যদি অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়, তাহলে বাংলাদেশ কেনিয়া বা আফ্রিকার অন্যান্য দেশের মতো হয়ে যেতে পারে।
কর্মকর্তাদের সংযত থাকার পরামর্শ দিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, আমাদের দেশে ১৯৭০ সালের পর এমন গণবিক্ষোভ আর কখনো হয়নি। তাই এটি একটি ব্যতিক্রম ঘটনা। আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে।
তরুণ সেনা কর্মকর্তাদের ক্ষোভ প্রকাশের মধ্য দিয়ে বৈঠকটি শেষ হয়। এর ৩ দিন পর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা একটি সামরিক হেলিকপ্টারে চড়তে বাধ্য হন, যেটা তাকে ভারতীয় সীমান্ত পেরিয়ে আগরতলায় নিয়ে যায়। সেখানে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি সি১৩০ পরিবহন উড়োজাহাজ অপেক্ষমাণ ছিল, সেটা তাকে (শেখ হাসিনা) দিল্লির উপকণ্ঠের হিন্দন বিমানঘাঁটিতে নিয়ে যায়।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের অবস্থা ছিল অস্বস্তিকর। কারণ, তাকে শেখ হাসিনা নিয়োগ দিয়েছিলেন। তা ছাড়া বৈবাহিক সূত্রে তিনি শেখ হাসিনার আত্মীয়। বিষয়টি সম্ভবত তাকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও সতর্ক করে তুলেছিল। বিশৃঙ্খলার মধ্যে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড মোকাবিলা ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সেনা মোতায়েনকে যৌক্তিক হিসেবে তুলে ধরতে সেনাপ্রধান বলেছিলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভালোভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। তারা ১ হাজার ৭১৯টি গুলি ছুড়েছে, ১৪ হাজার ফাঁকা গুলি ছুড়েছে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংস জনতার মুখোমুখি হয়ে ৩১টি উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।
মতবিনিময়ে সেনাপ্রধানের পদক্ষেপের বৈধতা নিয়ে তদন্তের আহ্বান আসে। তরুণ মেজর মো. আলী হায়দার ভূঁইয়া সেনা মোতায়েনকালে সেনাবাহিনী যে ভূমিকা রেখেছে, তার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। নিজের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি পবিত্র কোরআন থেকে উদ্ধৃত করেন, তিনি দমনপীড়নের বিরুদ্ধে আল্লাহর করুণা ভিক্ষা করেন এবং এতে যুক্ত না হওয়ার কথা বলেন। একজন কনিষ্ঠ কর্মকর্তার এই আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শুধু বলেন, ‘আমিন’।
নারী কর্মকর্তা মেজর হাজেরা জাহান এই ঘটনায় শিশুদের প্রাণহানি ও এর ন্যায্য বিচার হওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর ওপর জনগণের অসন্তোষ বাড়তে থাকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেনাপ্রধান তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির এক কর্মকর্তা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কয়েকজন কর্মকর্তার ‘অগ্রহণযোগ্য’ কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন। জবাবে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, পরিস্থিতি ঠিক হলে এগুলো দেখা হবে।
সেনাবাহিনীর ওপর জনগণের সমর্থন কমে যাওয়ার কথা তুলে ধরে সেনাসদস্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন ৫ এয়ার ডিফেন্স রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব। চট্টগ্রামের আরেক কর্মকর্তা আহত শিক্ষার্থীদের সহায়তার মাধ্যমে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে কাজ করার পরামর্শ দেন।
সব শেষে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান যে সামাজিক চাপের মুখোমুখি হচ্ছেন, তা তুলে ধরেন এবং নিজের হতাশা প্রকাশে আইয়ুব বাচ্চুর একটি গানের কথা তুলে ধরেন।
সূত্র: দ্য উইক
রিমান্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছেন সালমান-পলক-জিয়াউল
ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর দলটির অনেক মন্ত্রী-এমপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা আত্মগোপনে চলে যায়। কেউ আবার সুযোগ বুঝে দেশ ছেড়েছেন। তবে, আন্দোলনে গুলি করে ছাত্র-জনতা হত্যা মামলায় অনেককে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এবং এনটিএমসির সাবেক ডিজি বরখাস্তকৃত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান। তারা রিমান্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছেন।
জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতরা দেশের বড় বড় দুর্নীতির জন্য শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠজনদের দায়ী করছেন। অনেক কর্তাব্যক্তি আবার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের কথা বলে নিজেরাই বাগিয়ে নিতেন বড় বড় কাজ।
সূত্র বলছে, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির বিষয়ে সালমান এফ রহমান এখনও মুখ খোলেননি। তবে, মোহাম্মদ আলী আরাফাত নির্বাচনের বিষয়ে যাবতীয় নীলনকশা করেছিলেন বলে দাবি করেন তিনি। কেবল নির্বাচনের জন্যই তারা কয়েকজন শত কোটি টাকা নিজেদের পকেটে ভরেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদে সালমান আরও জানান, জ্বালানি সেক্টরের সবকিছুই নিজে ডিজাইন করতেন সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। একইসঙ্গে বাপেক্সকে দেশের কল্যাণের বাইরে নিজের কল্যাণে ব্যবহার করতেন তিনি।
এদিকে, সরকারের নির্দেশেই অপরাধে জড়িয়েছেন বলে জানান জুনায়েদ আহমেদ পলক। ইন্টারনেট শাটডাউনের বিষয়েও দায় অস্বীকার করেছেন। তার ভাষ্য, ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে তার একক কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের নির্দেশনা মেনে তিনি ইন্টারনেট শাটডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এছাড়া ইন্টারনেট শাটডাউনের ক্ষেত্রে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সায় ছিল।
এ ছাড়া সাবেক এনটিএমসির ডিজি জিয়াউল আহসানও তার সব অপরাধের জন্য শেখ হাসিনা এবং তার সাবেক সামরিক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিককে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, তাদের নির্দেশেই তিনি সবকিছুই করেছেন। এনটিএমসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে হলেও তা চলত তারিকের ইশারায়।
জিয়াউল আহসানের বিরেুদ্ধে খুন, গুম ও অসংখ্য ব্যক্তির ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ রয়েছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আসামিদের সব তথ্য এখনই আমলে নেওয়া হচ্ছে না। এগুলো যাচাইবাছাইয়ের কাজ চলছে। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সম্পর্কে আগে আসা অভিযোগগুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
হারুনের ‘অবৈধ সম্পদ’ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি
সাবেক ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এ ঘটনা অনুসন্ধানে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে, রোববার (১৮ আগস্ট) দুদক সূত্রে জানা যায়, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ২৭ জুন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার সম্পদের অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে চিঠি পাঠিয়ে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
৬০ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ৪৯৫ উপজেলা চেয়ারম্যানকে অপসারণ
দেশের ৬০ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়, অপসারণকৃত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের স্থলে জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) এবং উপজেলা চেয়ারম্যানদের স্থলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) দায়িত্ব পালন করবেন।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচিত ৩২৩ পৌরসভার মেয়রকে অপসারণ করেও প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪ এর ধারা ৩২(ক) প্রয়োগ করে বাংলাদেশের নিম্নবর্ণিত পৌরসভার মেয়রদেরকে স্ব স্ব পদ থেকে অপসারণ করা হলো।
এর আগে, গত শনিবার বিশেষ পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ এবং প্রশাসক নিয়োগের ক্ষমতা সরকারের হাতে রেখে পৌরসভা, উপজেলা, জেলা ও সিটি করপোরেশনের আইন সংশোধনের আলাদা আলাদা অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় আওয়ামী লীগ সমর্থক চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মেয়র, কাউন্সিলররা অনুপস্থিত থাকায় নাগরিক সেবা ব্যাহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে আইন সংশোধনের এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।