সারাদেশে ১১৫ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
ঢাকাসহ দেশের সব বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে নকল ও ভেজাল পণ্যের ওপর তদারকিসহ বন্যার ত্রাণসামগ্রী (মুড়ি, চিরা, গুড়) ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তদারকির লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এ তদারকি অভিযান পরিচালনা করে।
এরমধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অধিদপ্তরের ৬ জন কর্মকর্তার নেতৃত্বে ছয়টি টিম ঢাকা মহানগরীর বনানী বাজার, কল্যাণপুর, কলাবাগান ও মোহাম্মদপুর টাউন হল এলাকায় তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করে।
সবমিলে সারাদেশের ৫২টি জেলায় অধিদপ্তরের ৫৭টি টিম অভিযানে ১১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৬ লাখ ২১ হাজার টাকা জরিমানা করে।
মন্তব্য করুন
স্বরাষ্ট্র থেকে সরানোর প্রতিক্রিয়ায় যা জানালেন এম সাখাওয়াত হোসেন
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) অন্তর্বর্তী সরকারে যুক্ত হয়েছেন আরও চার উপদেষ্টা। বর্তমানে এই সরকারে উপদেষ্টার সংখ্যা মোট ২১ জন।
শুক্রবার নতুন উপদেষ্টাদের দপ্তর বণ্টন করা হয়। এ সময় পুরাতন উপদেষ্টাদের মধ্য থেকে ৮ জনের দপ্তর পুর্নবণ্টন করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনকে দেওয়া হয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
বিষয়টি নিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এতে মন খারাপের কিছু নেই। আলহামদুলিল্লাহ, আমার যতটুকু করার সাধ্য ছিলো, করে আসছি।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা করা প্রসঙ্গে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এখন যেখানে দিয়েছে, সেখানে কাজ করতে পারলে করবো, আর অপারগ হলে চলে যাবো।
প্রসঙ্গত, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারে নতুন যোগ দেওয়া উপদেষ্টারা হলেন- অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক বিদ্যুৎ সচিব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রিমান্ডের তৃতীয় দিন, প্রশ্ন করলেই হাসেন আনিসুল হক
সরকারের ব্যর্থতায় পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর দলের মন্ত্রী-এমপিরা কেউ পালিয়ে গেছেন আবার কেউ আছেন আত্মগোপনে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রিমান্ডে আছেন। তাদেরই একজন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ডিবি পুলিশ কার্যালয়ে ১০ দিনের রিমান্ডে আছেন তিনি। তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচ্ছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) আনিসুল হকের রিমান্ডের তৃতীয় দিন ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে কোন প্রশ্নেরই উত্তর দেননি তিনি।
জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে শুনে মুচকি হেসেছেন তিনি। এ সময় সুপ্রিম কোর্টের অবস্থা জানতে চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে। কারা নতুন করে বিচারক হিসাবে নিয়োগ পেলেন সে বিষয়েও জানতে চান আনিসুল হক। জিজ্ঞাসাবাদে একেবারেই স্বাভাবিক ছিলেন তিনি। পুলিশের কোনো প্রশ্নের উত্তরই দেননি সাবেক এই আইনমন্ত্রী। প্রশ্ন করা হলে শুধু হেসেছেন।
ডিএমপি নিউমার্কেট থানায় দায়ের হওয়া হকার শাহজাহান আলী হত্যা মামলায় মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা হয় সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হককে। বুধবার তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তারা এখন ডিবি হেফাজতে আছেন। যে মামলায় তারা রিমান্ডে আছেন ওই মামলায় কোনো আসামির নাম নেই। তবে অজ্ঞাতনামা হিসাবে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
সদ্য বিদায়ী সরকার আমলে গত ১৬ জুলাই করা মামলায় গ্রেপ্তার হন সদ্য বিদায়ী সরকারের প্রভাবশালী এই উপদেষ্টা ও মন্ত্রী। জিজ্ঞাসাবাদে তারা দেশে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরির জন্য দায় চাপিয়েছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামাল ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ওপর।
ডিএমপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গ্রেপ্তাররকৃতদের অপরাধ শুধু পুলিশ কেইসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। শেয়ারবাজারসহ অনেক অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত সালমান এফ রহমান। সরকারের অনেক অপকর্মকে আইনি বৈধতা দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছেন আনিসুল হক। তাই তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে হত্যা মামলার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও আইনগত বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
গ্রেপ্তার সালমান ও আনিসুলকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে ডিএমপির (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মহা. আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। যদি কিছু থাকে-আমার যেটা বলার আপনাদের আমি দাওয়াত দিয়ে বলব।’
জানা গেল শেখ পরিবারের কে কোথায়
জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দেশ। শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে এই প্রথা বাতিলের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে আসে। কিন্তু তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তাদের দাবি না মেনে বল প্রয়োগ করতে থাকে। এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করে। এতে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এরপর তৎকালীন সরকার তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলেও শিক্ষার্থীরা নয় দফা দাবি জানায়। এরপর সরকারের বল প্রয়োগ অব্যাহত থাকলে শিক্ষার্থীদের দাবি আস্তে আস্তে সরকার পতনের এক দফায় রূপান্তরিত হয়। অবশেষে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রোষানলে পদত্যাগ করে দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। এর পর দলের মন্ত্রী-এমপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা কেউ দেশ ছেড়েছেন কেউ আছেন আত্মগোপনে।
এমন অবস্থায় আওয়ামী লীগের দলীয় মন্ত্রী-এমপি এবং শেখ পরিবারের সদস্যরা কে কোথায় আছেন এই জিজ্ঞাসা অনেকের।
জানা গেছে, রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শেখ পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যই এখন আর দেশে নেই। ৫ আগস্টের আগে-পরে তারা দেশ ছেড়ে গেছেন। গত ৫ আগস্ট সামরিক বিমানে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা। ওই দিন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছাড়া পরিবারের আর কোনো সদস্য দেশে ছিলেন না। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দিল্লিতে কর্মরত। সরকারের পতনের সময় তিনি দিল্লিতেই ছিলেন। দিল্লিতে যাওয়ার পর তার মা এবং খালার সঙ্গে সায়মার সাক্ষাৎ হয়। শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক বৃটিশ মন্ত্রী, তিনি লন্ডনে বসবাস করা। শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান সিদ্দিক সরকার পতনের সময় দেশে ছিলেন না।
গত ৩ আগস্ট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশ ছাড়েন বঙ্গবন্ধু পরিবারের আরেক সদস্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস। শেখ ফজলে নূর তাপসের বড়ভাই শেখ ফজলে শামস পরশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান। তিনি দেশে আছেন নাকি বিদেশে এ নিয়ে সংগঠনের কারও কাছে তথ্য নেই। যুবলীগের একজন নেতা জানিয়েছেন, ফজলে শামস পরশ আন্দোলন চলাকালে কোনো এক সময় তিনি বিদেশে গেছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম দেশ ছাড়তে পারেনি বলে জানা গেছে। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য হিসেবে বরিশালে প্রভাবশালী নেতা আবদুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ছোট ছেলেকে নিয়ে ভারতে চলে গেছেন। তার আরেক ছেলে বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এবং আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছোট ভাই সিটির বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ দেশেই আত্মগোপনে আছেন।
বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক এমপি শেখ হেলাল সরকার পতনের আগেই দেশ ছেড়ে গেছেন। তবে তার ছেলে বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক এমপি শেখ সারহান নাসের তন্ময় দেশ ছাড়তে পারেননি। তিনি দেশেই আত্মগোপনে আছেন। শেখ হেলালের ভাই খুলনা-২ আসনের সাবেক এমপি শেখ সালাউদ্দীন জুয়েলকে সরকার পতনের পর টুঙ্গিপাড়ায় আছেন বলে জানা গেছে।
রাজনীতিবিদ-পুলিশসহ ৬২৬ জন সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন: আইএসপিআর
গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর প্রাণ রক্ষার্থে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিচারক, পুলিশ সদস্যসহ ৬২৬ জন সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
রোববার (১৮ জুলাই) এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর)।
এতে বলা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। এ সময় প্রাণনাশের আশঙ্কায় কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিবিধ নাগরিকগণ সেনানিবাসে আশ্রয় প্রার্থনা করেন।
এ প্রেক্ষিতে বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড রোধ, জীবন রক্ষা ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে জীবন বিপন্ন ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ৫ জন বিচারক, ১৯ জন অসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ২৮ জন পুলিশ অফিসার, ৪৮৭ জন পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ বিবিধ ১২ জন ও ৫১ জন পরিবার-পরিজনসহ (স্ত্রী ও শিশু) সর্বমোট ৬২৬ জনকে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় প্রদান করা হয়।
আইএসপিআর জানায়, পরিস্থিতির উন্নতি সাপেক্ষে ৬১৫ জন স্ব-উদ্যোগে সেনানিবাস ত্যাগ করে। আশ্রয় প্রদানকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে এ পর্যন্ত ৪ জনকে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বা মামলার ভিত্তিতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বর্তমানে আশ্রয়প্রাপ্ত ৩ জন তাদের পরিবারের ৪ জন সদস্যসহ মোট ৭ জন সেনানিবাসে অবস্থান করছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সব তথ্য দেওয়া হয়েছে।
প্রথম ধাপে যেসব পণ্যের দাম কমবে, জানালেন প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমের দাম কমিয়ে আনার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে। এজন্য উৎপাদন খরচ কমানোর দিকেও নজর দেওয়া হবে।
রোববার (১৮ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘এসব পণ্যের দাম কীভাবে কমানো যায়, কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে বিষয়ে বাণিজ্যসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে উৎপাদকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এছাড়া উৎপাদন খরচ কমানোর দিকেও কাজ করা যেতে পারে।’
এদিকে বাজার সিন্ডিকেট, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য উৎপাদন নিরাপদ রাখা, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং তাদেরকে ১০ দিনের মধ্যে কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবিসহ ১৫ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদা আখতার বলেন, ‘গণ অধিকার পরিষদের প্রস্তাবনায় আমরা খুশি। কর্মকর্রতাদের সম্পদের হিসাব প্রকাশের বিষয়ে গণ অধিকার পরিষদের দাবির বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদে তুলব। উপদেষ্টা পরিষদে সবাই মিলে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সেটাই করা হবে।’
শেখ হাসিনার পদত্যাগের আগে যেভাবে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান
গত ২ আগস্ট সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে একটি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। ওই দিন এক বৈঠকে তরুণ সেনা কর্মকর্তারা দেশের পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠক সম্পর্কে অবগত একটি সূত্র থেকে এ তথ্য পেয়েছে ভারতের সাপ্তাহিক সংবাদ সাময়িকী দ্য উইক।
বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য সেনাপ্রধান বৈঠকটি ডেকেছিলেন। সূত্রটি জানায়, সেনা কর্মকর্তাদের ক্ষোভ প্রশমনে সেনাপ্রধান এ বিষয়টি তুলে ধরেন যে যদি অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়, তাহলে বাংলাদেশ কেনিয়া বা আফ্রিকার অন্যান্য দেশের মতো হয়ে যেতে পারে।
কর্মকর্তাদের সংযত থাকার পরামর্শ দিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, আমাদের দেশে ১৯৭০ সালের পর এমন গণবিক্ষোভ আর কখনো হয়নি। তাই এটি একটি ব্যতিক্রম ঘটনা। আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে।
তরুণ সেনা কর্মকর্তাদের ক্ষোভ প্রকাশের মধ্য দিয়ে বৈঠকটি শেষ হয়। এর ৩ দিন পর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা একটি সামরিক হেলিকপ্টারে চড়তে বাধ্য হন, যেটা তাকে ভারতীয় সীমান্ত পেরিয়ে আগরতলায় নিয়ে যায়। সেখানে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি সি১৩০ পরিবহন উড়োজাহাজ অপেক্ষমাণ ছিল, সেটা তাকে (শেখ হাসিনা) দিল্লির উপকণ্ঠের হিন্দন বিমানঘাঁটিতে নিয়ে যায়।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের অবস্থা ছিল অস্বস্তিকর। কারণ, তাকে শেখ হাসিনা নিয়োগ দিয়েছিলেন। তা ছাড়া বৈবাহিক সূত্রে তিনি শেখ হাসিনার আত্মীয়। বিষয়টি সম্ভবত তাকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও সতর্ক করে তুলেছিল। বিশৃঙ্খলার মধ্যে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড মোকাবিলা ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সেনা মোতায়েনকে যৌক্তিক হিসেবে তুলে ধরতে সেনাপ্রধান বলেছিলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভালোভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। তারা ১ হাজার ৭১৯টি গুলি ছুড়েছে, ১৪ হাজার ফাঁকা গুলি ছুড়েছে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংস জনতার মুখোমুখি হয়ে ৩১টি উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।
মতবিনিময়ে সেনাপ্রধানের পদক্ষেপের বৈধতা নিয়ে তদন্তের আহ্বান আসে। তরুণ মেজর মো. আলী হায়দার ভূঁইয়া সেনা মোতায়েনকালে সেনাবাহিনী যে ভূমিকা রেখেছে, তার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। নিজের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি পবিত্র কোরআন থেকে উদ্ধৃত করেন, তিনি দমনপীড়নের বিরুদ্ধে আল্লাহর করুণা ভিক্ষা করেন এবং এতে যুক্ত না হওয়ার কথা বলেন। একজন কনিষ্ঠ কর্মকর্তার এই আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শুধু বলেন, ‘আমিন’।
নারী কর্মকর্তা মেজর হাজেরা জাহান এই ঘটনায় শিশুদের প্রাণহানি ও এর ন্যায্য বিচার হওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর ওপর জনগণের অসন্তোষ বাড়তে থাকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেনাপ্রধান তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির এক কর্মকর্তা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কয়েকজন কর্মকর্তার ‘অগ্রহণযোগ্য’ কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন। জবাবে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, পরিস্থিতি ঠিক হলে এগুলো দেখা হবে।
সেনাবাহিনীর ওপর জনগণের সমর্থন কমে যাওয়ার কথা তুলে ধরে সেনাসদস্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন ৫ এয়ার ডিফেন্স রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব। চট্টগ্রামের আরেক কর্মকর্তা আহত শিক্ষার্থীদের সহায়তার মাধ্যমে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে কাজ করার পরামর্শ দেন।
সব শেষে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান যে সামাজিক চাপের মুখোমুখি হচ্ছেন, তা তুলে ধরেন এবং নিজের হতাশা প্রকাশে আইয়ুব বাচ্চুর একটি গানের কথা তুলে ধরেন।
সূত্র: দ্য উইক
হারুনের ‘অবৈধ সম্পদ’ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি
সাবেক ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এ ঘটনা অনুসন্ধানে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে, রোববার (১৮ আগস্ট) দুদক সূত্রে জানা যায়, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ২৭ জুন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার সম্পদের অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে চিঠি পাঠিয়ে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।