এনবিআরের নতুন চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খানকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আলমগীর কবির সই করা প্রজ্ঞাপন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমেন সঙ্গে সরকারের সম্পাদিত চুক্তিপত্রের অনুচ্ছেদ-৭ অনুযায়ী সিনিয়র সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান পদে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করা হলো।
মন্তব্য করুন
লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি কমবে কবে, জানালেন বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুতের বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) ফোরাম ফর অ্যানার্জি রিপোটার্স বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ আশা প্রকাশ করেন।
চলমান লোডশেডিং সম্পর্কে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, বড়পুকুরিয়ায় কারিগরি সমস্যা হয়েছে যা দ্রুত মেরামত করা হচ্ছে; রামপাল পুনরায় চালু হয়েছে; আদানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং দ্রুত গ্যাস আমদানি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুতের বর্তমান অবস্থার উন্নতি হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সঙ্গে অন্য সরকারের পার্থক্য হলো, বর্তমান সরকার কোনো পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত নয়, এই সরকার বহু ছাত্র-জনতার রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে গঠিত সরকার।
দায়িত্ব গ্রহণের পর অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন জানিয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, ২০১০ সালের বিশেষ আইন স্থগিত ও বিআরসি আইনের ‘৩৪ ক’ ধারা বাতিল, তেলের দাম কমানো, কোম্পানির চেয়ারম্যান থেকে সচিবদের অপসারণ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের লুটপাটের কাঠামো ভেঙে দেওয়া, বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধের জন্য বদলি ও নিয়োগের নির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সব ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যাতে কাজ পায় সেটা নিশ্চিত করারও নির্দেশনা দিয়েছি। ওপেন টেন্ডারে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
উপদেষ্টা জানান, তার কোনো পছন্দের লোক নেই। তিনি কোনো পরিসংখ্যানে বিশ্বাস করেন না, মানুষের সত্যিকারের কী উপকার হলো তার মাধ্যমে কাজের বিচার করা হবে। উন্নয়ন বিচার করা হবে বাস্তব অবস্থা দিয়ে। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
ইলিশ চেয়ে ভারতের চিঠি, যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ভারতে আর ইলিশ না পাঠানোর সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। বাংলাদেশের এমন সিদ্ধান্তে কিছুটা বিপাকে ভারত। এ অবস্থায় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ইলিশ চেয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন ভারতের মৎস্য ব্যবসায়ীরা। সেই চিঠি ইতোমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে।
এ বিষয়ে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, আমি কিছুক্ষণ আগে কাগজটা দেখেছি। এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা তো আর মাছ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিই না।
এর আগে, ‘ফিশ ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি ভারতীয় রপ্তানি প্রতিষ্ঠান চিঠিতে লিখেছে, অত্যন্ত বিনয় এবং শ্রদ্ধার সঙ্গে আপনাকে (পররাষ্ট্র উপদেষ্টা) জানানো যাচ্ছে যে, আমরা ১৯৯৬ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ আমদানি করে আসছি। প্রতি বছর আমরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশনের মাধ্যমে প্রায় ৫ হাজার টন ইলিশ আমদানি করি।
এতে আরও বলা হয়েছে, দুর্ভাগ্যবশত, ২০১২ সালের জুলাইয়ে হঠাৎ করেই বাংলাদেশ সরকার ইলিশ মাছের রপ্তানি নিষিদ্ধ করে। এরপর থেকে আমরা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার জন্য তাদের কাছে চিঠি দিয়েছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
ভারতীয় রপ্তানি প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, তবে গত ৫ বছর (সেপ্টেম্বর ২০১৯ থেকে শুরু করে সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত), বাংলাদেশ সরকার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ এবং সময়ের জন্য শুধুমাত্র দুর্গাপূজার সময় ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দেয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে আমরা আপনার (পররাষ্ট্র উপদেষ্টা) সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি এবং দুর্গাপূজার জন্য ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। কারণ পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং ত্রিপুরায় বাংলাদেশের ইলিশের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
চিঠিতে সফলভাবে বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দনও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
যে তিন কারণে দেশে বিদ্যুৎ সংকট
তীব্র লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ দেশের মানুষ। শহরের মানুষ বিদ্যুৎ পেলেও গ্রামগুলোতে ১২ ঘণ্টার বেশিও লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে। ডলার সংকটের কারণে জ্বালানি সরবরাহ না থাকায় উৎপাদন কমেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে। একইসঙ্গে জ্বালানির আমদানি নির্ভর এ খাতে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কাছে সরকারের বকেয়াও বাড়ছে। ফলে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না।
দেশে বর্তমানে উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ২৭ হাজার মেগাওয়াটের বেশি হলেও চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াটের কম। শেখ হাসিনা সরকার গত পনের বছরে দেশে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে। জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত না করে অপরিকল্পিতভাবে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অনেক ক্ষেত্রে চাহিদাও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেখ হাসিনার সরকার অর্থনৈতিক যে বিপর্যয় রেখে গেছে তারই ফলে এই পুরো খাত মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই খাতে অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। সম্পূর্ণ টাকা দেওয়া সম্ভব না হলেও যতটুকু টাকা দিয়ে সরবরাহ বজায় রাখা যায় ততটুকু দিতে হবে।
এ খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকটের মূল সমস্যা ডলার সংকট। একে কেন্দ্র করেই অন্য সমস্যাগুলো প্রকট আকার ধারণ করেছে এই মুহূর্তে। একইসঙ্গে বিগত সরকারের অপরিকল্পিত প্রকল্প বাস্তবায়নের খেসারত দিতে হচ্ছে জনগণকে।
ডলার সংকট
দেশে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ আসে গ্যাস-ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা আছে প্রায় বারো হাজার মেগাওয়াট। আগে সাড়ে ছয় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। অথচ এখন পাঁচ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না।
বিদ্যুৎ খাত দিনে ১২০ থেকে ১৩০ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ পেয়েছে। এখন ৮০ থেকে ৮৫ কোটি ঘনফুট সরবরাহ হচ্ছে বলে জানিয়েছে পিডিবি।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে দিনে গ্যাস আসে একশ দশ কোটি ঘনফুট। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল গত ২৭ মে থেকে বন্ধ। ফলে এখন সরবরাহ হচ্ছে ৬০ কোটি ঘনফুট।
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের সব ইউনিট। ফলে গত মঙ্গলবার তিন হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি লোডশেডিং ছিল।
ভারতের ঝাড়খণ্ডে নির্মিত আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। দিনে দেড় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল। কিন্তু বকেয়া পরিশোধ না করায় এখন এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে তারা।
শেখ হাসিনার সরকার ব্যাংক থেকে বন্ড ছেড়ে বেসরকারি খাতের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল কিছুটা কমাতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাদের এখনও অনেক বকেয়া রয়েছে।
গ্যাস বিল, সরকারি–বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল, ভারতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল সব কিছু মিলিয়ে পিডিবির বকেয়া টাকার পরিমাণ ৩৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
এরই মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বকেয়া অর্থ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন ভারতের আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি।
ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, ‘এখন অন্যতম প্রধান সমস্যাই অর্থ সংকট। তাই অন্য খাতে কমিয়ে এখানে গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে হবে। তেল-চালিত কেন্দ্রগুলো বেশি চালাতে হবে। ডলার জোগাড় করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে। ১৫ শতাংশ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য গ্যাস রেশনিং করতে হবে। তবেই লোডশেডিং এর সংকট সমাধান হতে পারে।’
জ্বালানিতে আমদানি নির্ভরতা
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ খাতে পলিসিগত যে ভুল সবচেয়ে ভয়াবহ হয়েছে সেটা হলো পুরো বিদ্যুৎ ব্যবস্থা শক্তিশালী অর্থনীতির বিবেচনায় আমদানি নির্ভর করা হয়েছিল। শেখ হাসিনার সরকার অর্থনীতির একটি ভ্রান্ত ধারণার ওপর ভিত্তি করে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে। এসব কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গ্যাসের পাশাপাশি তেল ও কয়লার ব্যবহার বেড়েছে। এই জ্বালানির বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এর আগে সরকার কখনো নিজেরা প্রাথমিক জ্বালানির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। অথবা বিকল্প জ্বালানি হিসেবে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসের দিকে গুরুত্ব দেয়নি।
তারা বলছেন, জ্বালানির এই আমদানি নির্ভরতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। যা সরাসরি ডলারের ওপর চাপ তৈরি করেছে। আমদানি নির্ভরতার সংকটের দৃষ্টান্ত হিসেবে ২০২২-২৩ সাল। জ্বালানি আমদানির জন্য অতিরিক্ত ১৩ বিলিয়ন ডলার খরচ হয় ওই বছর।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, ‘বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বাকিতে দিচ্ছে। তারা নিজের খরচে জ্বালানি ক্রয় করছে। কিন্তু ফুয়েল এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের টাকা তো তাদের বাকি পড়ছে। এ খাতের সংকট নিরসনে সরকারকে অগ্রাধিকার-ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। যতটুকু অর্থ দিয়ে সরবরাহ বজায় রাখা যায় তা দিতে হবে।’
অপরিকল্পিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও সরবরাহ লাইন না থাকা
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা এ খাতকে চরম অব্যবস্থাপনার খাত হিসেবে অভিহিত করেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের হিড়িক পড়ে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইন পাস করে এগুলোকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়। এ আইনের অধীনে দরপত্র ছাড়াই একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। ব্যবসায়ীরা ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতারাও বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকানা নেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অনেক পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করা হলেও সেগুলো থেকে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ, অর্থের অভাবে গ্যাস ও তেল কেনা যাচ্ছে না। এরকম বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর চুক্তি স্থগিত বা রিনিউ করা হয়নি।
দেশের দক্ষিণে চারটি বড় বড় কয়লা-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এগুলো হলো পায়রা, রামপাল, এস আলম এবং মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র। এগুলোর মোট উৎপাদন সক্ষমতা পাঁচ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ লাইন না থাকার কারণে এগুলো থেকে বিদ্যুৎ ঢাকার দিকে আনা যাচ্ছে না। অথচ তাদের ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হয়।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন ক্যাপাসিটির অসুবিধা নেই। কিন্তু সরবরাহ লাইনের সীমাবদ্ধতা আছে। ফলে উৎপাদন সক্ষমতা থাকলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ৬০ শতাংশ জ্বালানি আমদানি করার কারণে এই সেক্টর বেশি প্রভাবিত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘চুক্তিটা নিয়ে অনেক কথা হতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে আদানির সরবরাহ যদি বন্ধ হয়ে যায় তবে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। কথা হচ্ছে যে আদানি আটশ মিলিয়ন ডলার পাবে এটাতো তার চুক্তি অনুযায়ী প্রাপ্য। এখন আমরা যদি না দিতে পারি টাকাটা, ওরা কতদিন বাকিতে বিদ্যুৎ দেবে?’
তিনি বলেন, ‘আদানিরা বলেছে পাঁচশ মিলিয়ন ডলারের উপরে বকেয়া হলে এটা সাসটেইনেবল না। তারা পাঁচশ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত রানিং বিল বাকি রাখতে রাজি আছে। আসলে চুক্তি অনুযায়ী সেটাও থাকতে পারে না। কিন্তু তারা এগ্রি করেছে। এর ওপরে হলেতো, তাদেরও কয়লা আমদানি করতে হয়, লজিস্টিক, মেইনটেনেন্স কস্ট আছে। তাই না?।’
এদিকে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, সাময়িক সংকট সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ডলার পেমেন্ট করা হচ্ছে।-বিবিসি।
আরটিভি/এসএপি/এ
সেনাবাহিনীর আরও দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরও দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহম্মদ তাবরেজ শামস চৌধুরী ও মেজর জেনারেল হামিদুল হক।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, তাদের আর্মি অ্যাক্ট সেকশন-১৮, আর্মি অ্যাক্ট (রুলস) ১২ (১), আর্মি রেগুলেশন্স (রুলস) ৭৮ (সি), ২৫৩ (সি) (ii), ২৬১, সংশোধিত আর্মি রেগুলেশন্স (রুলস) ২৬২ (৪) ও ২৬৯ (এ), আর্মি রেগুলেশন্স (ইনস্ট্রাকশন্স) ১৬৮ (বি) এবং কমপেনডিয়াম অব মিলিটারি পেনশন-১৯৮১ এর বিধি-৯ (কে) অনুসারে প্রশাসনিক ব্যবস্থার আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে ‘অকালীন (বাধ্যতামূলক) অবসর’ প্রদান করা হলো।
এই আদেশ জারির তারিখ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে তাদের অবসর কার্যকর হবে বলে জানানো হয়।
আরটিভি/এফএ/এআর
ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস, ৮ জেলায় বন্যার শঙ্কা
আগস্টের ভয়াবহ বন্যার ক্ষত না শুকাতেই ফের বন্যার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ভারী বর্ষণের ফলে আগামী সপ্তাহে দেশের আট জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এ তথ্য জানায়।
এতে বলা হয়, আবহাওয়া সংস্থাসমূহের পূর্বাভাস অনুযায়ী দেশে এবং উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতার প্রেক্ষিতে, আগামী তিনদিন চট্টগ্রাম বিভাগের নদীসমূহের পানি সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরও জানায়, দেশের সকল প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সমতল বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে, চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী, মুহুরী, হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরি নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ ছাড়া দেশে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতার প্রেক্ষিতে আগামী তিনদিন বরিশাল ও খুলনা বিভাগের নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর বর্ষার শুরুতে জুনের দ্বিতীয়ার্ধে দেশে ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে বন্যার কবলে পড়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চল। এতে প্রায় দুই সপ্তাহ দুর্ভোগে কাটে সিলেট, সুনামগঞ্জসহ আশপাশের জেলার বাসিন্দাদের। পরের মাসেও (জুলাই) উজানের ঢলে প্লাবিত হয় দেশের উত্তর ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের অনেক গ্রাম। কিন্তু বন্যার ভয়াবহ রূপ ধারণ করে আগস্ট মাসে। অতি ভারী বৃষ্টির মধ্যে ভারত থেকে নেমে আসা তীব্র ঢলে গত ২০ আগস্ট থেকে দেশের ১১ জেলায় (নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার) বন্যায় তলিয় যায়।
হঠাৎ এমন বন্যায় ভেসে যায় ঘরবাড়ি, স্কুল, গ্রাম, মাছের ঘের, ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট। অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দেখা দেয় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৭১ জনের।
আরটিভি/আরএ
মুরগি ও ডিমের নতুন মূল্য নির্ধারণ
মুরগি ও ডিমের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ডিম উৎপাদক পর্যায়ে প্রতি পিস ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি ১১ টাকা ০১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সোনালি মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে কেজিপ্রতি ২৬০ টাকা ৭৮ পয়সা, পাইকারি ২৬৪ টাকা ৫৭ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে কেজিপ্রতি ১৬৮ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারি ১৭২ টাকা ৬১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সব বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ছাড়া বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল, বাংলাদেশ পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ, অ্যানিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো ফিড ইনগ্রেডিয়েটস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ট্রেডিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি/সাধারণকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং পোল্ট্রি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের মতামতের ভিত্তিতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর মুরগি (সোনালি ও ব্রয়লার) ও ডিমের এ যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করেছে।
আরটিভি/আইএম/এআর
‘আমি তোমাকে ছাড়বো না, শেখ হাসিনা কাউকে ছাড়ে না’
দায়িত্ব নেওয়ার পাঁচ মাস পরেই ২০০৯ সালে পদত্যাগ করেছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তিনি নিজের পদত্যাগ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন।
সোহেল তাজ বলেন, আমি যেদিন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলাম, সেদিন কেঁদেছিলাম। আমি সেদিন অনুধাবন করতে পেরেছিলাম যে, আমি বড় একটি দায়িত্ব নিতে যাচ্ছি। আমি বাংলাদেশকে পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে খুবই উৎসাহী ছিলাম। কিন্তু আমার সঙ্গে, দেশের সঙ্গে ও দলের সঙ্গে শত্রুতা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাস করি না। মাঠ পর্যায় থেকে রাজনীতি শুরু করেছি। আমি যাতে রাজনীতিতে না আসতে পারি সে জন্য ওপর থেকে অনেকেই বাধা দিয়েছিল। প্রথম টার্মে যখন নির্বাচিত হয়, সেবার আমার দল মাত্র ৫৮টা আসন পায়। বিরোধী দলের রাজনীতি করতে অনেক জুলুম সহ্য করতে হয়েছে। আন্দোলনে-মিটিং-মিছিলে সক্রিয় ছিলাম। দলে আমার কন্ট্রিবিউশন ছিল। আমি কারও পরিচয়ে মন্ত্রিত্ব চাইনি। আমি মনে করি, নিজের যোগ্যতায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলাম।
মন্ত্রিত্ব কেন ছেড়েছিলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে সোহেল তাজ বলেন, আমি দুর্নীতি দেখেছি, অনিয়ম দেখেছি। বিডিআর বিদ্রোহের তদন্তকাজ আমার ভালো লাগেনি, সেখানে অনিয়ম হয়েছে। আমি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছিলাম না। একটা পর্যায়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কথা না শুনতে। তারা আমার কথা শুনবে না কিন্তু আমাকে আবার ওই পদে থাকতে হবে! সুতরাং আমার মনে হয়েছিল, আমাকে এবং আমার পরিবারকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হচ্ছিল না। এরপরও পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চলে যাই। পরে সেখান থেকে তার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। আমি বারবার বলেছি, আমাকে ছেড়ে দেন। কিন্তু তিনি আমাকে ছাড়বেন না। ওটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বিস্ময়কর ফোনালাপ। আমি তাকে (শেখ হাসিনা) বারবার বলেছি আমাকে ছেড়ে দেন। কিন্তু তিনি (শেখ হাসিনা) বলেন, না তোমাকে থাকতে হবে। তোমার কী লাগবে? দলের পদ, যুগ্ম সম্পাদক? কিন্তু আমি বারবার বলেছি থাকব না।
সোহেল তাজ বলেন, সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল- তিনি (শেখ হাসিনা) ফোনকলে গান গাওয়া শুরু করলেন। তিনি গাইলেন, ‘আমি তোমাকে ছাড়ব না, আমি কাউকে ছাড়ি না’। আমি শুনে অবাক হয়ে গেলাম। এটার মানে কি? প্রধানমন্ত্রী কি আমাকে হুমকি দিলেন, নাকি স্নেহ দেখালেন! অনেকেই বলেন, এটা স্নেহের একটা বিষয় ছিল। এরকম অনেকগুলো কারণে আমি পদত্যাগ করেছি।
তিনি বলেন, পদত্যাগের পর আমাকে নাজেহাল হতে হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অনেক অপপ্রচার চালানো হয়েছে। বাংলাদেশে আসলে গোয়েন্দারা আমাকে অনুসরণ করত। ওই সময় আবার অনেকের গুম হওয়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল। একটা আতঙ্কের পরিবেশ ছিল। আমার এক ভাগিনাকে তার ব্যক্তিগত কারণে গুম করা হয়েছিল।