• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বাংলাদেশ সফর শেষে মার্কিন কর্মকর্তা

‘রোহিঙ্গা সংকটের মাত্রা খুবই তীব্র ’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০৯ নভেম্বর ২০১৭, ১৩:০৪

রোহিঙ্গা সংকটের মাত্রা খুবই তীব্র । বাংলাদেশ সফর শেষে এমন মন্তব্য করেন আমেরিকার জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত সহকারী মন্ত্রী সাইমন হেনশ। বুধবার তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখে আমি খুবই বিস্মিত এবং এই ভয়াবহতার মাত্রা খুবই তীব্র। সম্প্রতি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফর শেষে তিনি এমন মন্তব্য করেন। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

হেনশ বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের অবস্থা খুবই করুণ। আমরা শরণার্থী শিবিরে যা দেখতে পেয়েছি তা খুবই ভয়াবহ।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই পরিস্থিতি খুবই কঠিন। তারা অনেক দুর্দশায় রয়েছেন। অনেক শরণার্থী তাদের গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার গল্প বলতে বলতে কেঁদে ফেলেছেন। তাদের মুখে আমরা জানতে পারি, কিভাবে তাদের সামনে কাছের মানুষদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অনেকে পালিয়ে আসার সময়ও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।’

এই বিভীষিকার পরও অনেকে দেশে ফিরে যেতে চেয়েছেন। তবে সেজন্য নিরাপত্তা ও তাদের অধিকার নিশ্চিত করার কথাও বলেছেন।

হেনশ জানান, তিনি এবং হেদার নরেট রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোয় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র হেদার নরেট প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসেছিলেন। সাবেক এই সাংবাদিক নিজ চোখে দেখে গেলেন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভয়াবহতা। তিনি বলেন, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসা এই শরণার্থীদের কথা শুনে আমরা নিজেরাই সীমান্তে যাই। আমরা যেদিন ছিলাম সেদিনই ২ হাজার শরণার্থী আসে। তাদের সবাই শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।’

এরপর শরণার্থীদের ছোট একটি ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। নরেট বলেন, ‘আমি অনেক নারী, বৃদ্ধ ও শিশুকে বাস থেকে নামতে দেখি। তাদের কারও পায়ে জুতাও ছিল না, কারও কাছে শুধু পানি রাখার একটি পাত্র ছিল।’ তিনি বলেন, একজন নারীর খুবই অল্পবয়সী শিশু দেখলাম, হয়তো একমাস বয়স হবে। যাত্রাপথে প্রায় মারাই গিয়েছিলেন তিনি। অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে বাস থেকে কোলে করে নামাতে হয়েছে। আমরা দেখলাম রেডক্রস সহ অন্যান্য ত্রাণ সংস্থাগুলো খুবই নিবিড়ভাবে তাদের যত্ন নিচ্ছে। ছোট শিশুদের অস্থায়ী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো।’

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, তিনি বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন। বাংলাদেশ তাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে দারুণ আচরণ করছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ তাদের হৃদয়ের দুয়ার খুলে দিয়েছে। ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে তারা। তারা হয়তো বাড়িতে নেই। তবে তারা নিরাপদে আছে।’

হেনশ বলেন, সফরের সময় তিনি ক্যাম্পগুলোতে ঘুরে হত্যাযজ্ঞের আলামত পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিশেষজ্ঞ নই। কিন্তু আমি যা দেখেছি তাতে বিস্মিত। হত্যাযজ্ঞের কথা শুনেছি আমি।’ তার দেওয়া প্রতিবেদন পর্যালোচনা করবে পররাষ্ট্র দপ্তর। এরপর মিয়ানমারের নিধনযজ্ঞ নিয়ে ব্যবস্থা নেবে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার রেড ক্রস, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, ইউনিসেফসহ সব সহযোগীদের সাথে নিয়ে এই সংকট মোকাবিলা করা হচ্ছে।

এপি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh