মিয়ানমারের সেনাদের ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নিধনযজ্ঞের মধ্যে দেশটির সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাদের ওপর আরো অবরোধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার নুয়ের্ট স্থানীয় সময় সোমবার লিখিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
‘অ্যাকাউন্টিবিলিটি ফর হিউম্যান রাইটস অ্যাবিউসেস ইন রাখাইন, বার্মা’ শীর্ষক ওই বিবৃতিতে এসব অবরোধের কথা বলা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি এবং পাহারা দেয়ায় নিযুক্ত সদস্যসহ, নৃশংসতার জন্য কেউ দায়ী হলে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা অপরিহার্য। তাই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমাদের সীমিত পরিসরে কাজ করা এবং দীর্ঘকালীন সময়ের জন্য সকল রকম সেনা সরঞ্জামাদি বিক্রির ক্ষেত্রে চলমান নিষেধাজ্ঞাসহ, জবাবদিহিতা এবং সহিংসতা বন্ধের জন্য আমেরিকা এসব পদক্ষেপ নিয়েছে।
মিয়ানমারের সেনাদের ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র আরটিভি অনলাইনের পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।
• গেলো ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সাবেক ও বর্তমান জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাদের আর্থিক সুবিধা দিয়ে যে ‘জেড অ্যাক্ট’ রয়েছে তা স্থগিত করেছে।
• এই নৃশংসতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিবর্গ যারা জেড অ্যাক্টের সুবিধা পেয়ে থাকেন এমন ব্যক্তিদের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বিবেচনাধীন রয়েছে।
• লেহি আইন অনুসারে, বার্মার উত্তরে রাখাইন রাজ্যের সামরিক কর্মকাণ্ডে যেসব কর্মকর্তা ও ইউনিট জড়িত তাদের কেউ যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা প্রাপ্ত কোন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য হবে না ।
• বার্মিজ নিরাপত্তা বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা যাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তাপ্রাপ্ত যে কোন অনুষ্ঠানে যোগদানের আমন্ত্রণ বাতিল করা হয়েছে।
• আন্তর্জাতিক অংশীদারের সঙ্গে মিলে আহ্বান জানাচ্ছি বার্মা যেন জাতিসংঘের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন’, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমকে প্রয়োজনীয় এলাকায় প্রবেশাধিকার দেয়।
• যুক্তরাষ্ট্র তার বন্ধু ও সহযোগীদের সঙ্গে জাতিসংঘ, মানবাধিকার কাউন্সিল ও অন্যান্য যথাযথ অবস্থানে বার্মার জবাবদিহিতার বিষয়ে আলোচনা করছি।
• যুক্তরাষ্ট্রের আইনের অধীনে আমরা জবাবদিহিতার পদ্ধতি খুঁজে দেখছি, যার মধ্যে রয়েছে গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কির নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বার্মার গণতন্ত্রের উত্তরণের যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কাজ করে যাবে দেশটি। একই সঙ্গে মিয়ানমারে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশটির সরকার ও সামরিক বাহিনীকে আহ্বান জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানবিক সহায়তা এবং রাখাইন থেকে বাস্তুহারাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যেতে সহযোগিতা করা। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত বৈষম্যের মূল খুঁজে বের করা ও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার ব্যাপারে বিশ্বাসযোগ্য পথ খুঁজে বের করা। এ ধরনের বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করে যেতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত বলেও ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
এ/এসএস
মন্তব্য করুন