• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে সরকারের ব্যাপক কর্মসূচি

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২২:৪৯

মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষের পুনর্বাসন এবং ত্রাণ তৎপরতা সমন্বয়ে সরকার ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক সভায় এ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি সংস্থা, উন্নয়ন অংশীদার এবং এনজিওগুলোর ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকাণ্ডের সুষ্ঠু সমন্বয়ের লক্ষ্যে এ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ১৪ হাজার আশ্রয়স্থল নির্মাণে কুতুপালংয়ের কাছে ২ হাজার একর জমি ব্যবহার করা হবে। প্রত্যেক আশ্রয়স্থলে ৬টি পরিবারের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। এএফডি, বিজিবি, বিআরআরসি, ডিসি কক্সবাজার, ইউএনএইচসিআর, আইওএম, ডব্লিউএফপি এবং অন্যান্য সংস্থা আজ থেকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে এসব আশ্রয়স্থল নির্মাণ করবে। এমওডিএমআর এ কাজের সমন্বয় করবে।

ত্রাণসামগ্রী মজুত ও রক্ষণাবেক্ষণে আশ্রয়স্থলের কাছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) ১৪টি ওয়্যারহাউজ নির্মাণ করবে। ওয়্যারহাউজের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। এমওডিএমআর এবং স্থানীয় জেলা প্রশাসন এ কাজে সমন্বয় করবে।

বিদেশ থেকে পাঠানো ত্রাণসামগ্রী গ্রহণ করবে এএফডি। তারা ত্রাণসামগ্রী কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের নির্ধারিত গুদামে পৌঁছে দেবে। আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ত্রাণসামগ্রী গ্রহণ, পরিবহন ও গুদামজাতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। যথাযথভাবে বিতরণের জন্য নতুন আশ্রয়স্থলগুলো পৃথক ব্লকে বিভক্ত হবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয, ডব্লিউএফপি অন্যান্য অংশীদার ও সংস্থার সহযোগিতায় আগামী ৪ মাসে ৪ লাখ শরণার্থীর খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করবে। কোন এলাকায় খাদ্য সরবরাহ করা না হলে আরআরআরসি তা তাৎক্ষণিকভাবে ডব্লিউএফপি’কে জানাবে। খাদ্য বিতরণের সময় নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে।

এতে বলা হয়, এনজিও, বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তিকে ত্রাণসামগ্রী সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। পরে জেলা প্রশাসক এসব ত্রাণসামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা করবে। ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য এনজিওগুলোকে এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর অনুমতি নিতে হবে।

সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়, ডব্লিউএফপি অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সহযোগিতায় যথাযথভাবে ত্রাণ বিতরণে চাহিদা ও দৈনিক প্রাপ্তি নিশ্চিতের ভিত্তিতে আগামী দিনের জন্য স্বল্প ও মধ্য মেয়াদী পরিকল্পনা তৈরী করবে।

বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য আবশ্যক ত্রাণসামগ্রীর পরিমাণ এবং এ মুহূর্তের জন্য প্রয়োজনীয় তাঁবুর সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ডিপিএইচই জরুরি ভিত্তিতে ৫শ’ অস্থায়ী এবং ইউএনএইচসিআর ৮ হাজার স্যানিটারি ল্যাট্রিন তৈরী করবে। স্থানীয় সরকার বিভাগ এ এলাকায় স্যানিটেশন ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ দেবে।

সভায় বলা হয়, তথ্য মন্ত্রণালয় শরণার্থীদর সহায়তার জন্য আগ্রহী ব্যক্তি ও সংস্থাকে তাদের অর্থ বা ত্রাণসামগ্রী কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর সম্পর্কিত প্রচারণা টিভি স্ক্রল ও দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশের ব্যবস্থা করবে।

মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় প্রচারণার জন্য এমওডিএমআর/ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে সমন্বিত ও সর্বশেষ ত্রাণ তৎপরতার তথ্য সংগ্রহ করে তা প্রচারের ব্যবস্থা করবে।

সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও সংস্থা শরণার্থী সংক্রান্ত বিষয় সমন্বয়ের জন্য সমন্বয়কারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যুৎ বিভাগ নবনির্মিত আশ্রয়স্থল এবং শরণার্থীদের অস্থায়ী অবস্থানসমূহে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহে দ্রুত যথাযথ জরিপ পরিচালনা করবে। খাদ্য বিতরণ ব্লক অনুযায়ী আইন-শৃংখলার দায়িত্বে নিয়োজিত সংস্থাগুলোর সহায়তায় শরণার্থীদের অবশ্যই দ্রুততার সঙ্গে নবনির্মিত আশ্রয়স্থল অস্থায়ী তাঁবুতে স্থানান্তর করতে হবে।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড মেম্বার ও সংশ্লিষ্ট স্টাফদের যথাযথ নির্দেশনা প্রদান করবে, যাতে তারা জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদানকালে সাবধানতা অবলম্বন করে। নির্বাচন কমিশনও নতুন এনআইডি প্রদানকালে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করবে। পাসপোর্ট বিভাগের ডিজি দ্রুততার সঙ্গে নতুন আশ্রয় প্রার্থীদের নাম নিবন্ধন করবেন।

পরিবার পরিকল্পনা বিভাগকে অবশ্যই অবিলম্বে ক্যাম্প এলাকায় কাজ শুরু করতে হবে। ২০টি অতিরিক্ত মেডিকেল ক্যাম্প অবিলম্বে আশ্রয় এলাকায় অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের কাজ শুরু করবে। অবশ্য ইপিআই কার্যক্রম শুরু করতে হবে। স্তন্যদায়ী মায়েদের জন্য বিশেষ টিম গঠন করা হবে।

সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়, সমাজসেবা বিভাগ অবশ্যই এতিমদের তালিকা প্রস্তুত ও একটি পরিকল্পনা তৈরী করবে এবং তাদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

অব্যবহৃত সিএসডি ও এলএসডিগুলো সাময়িকভাবে ত্রাণসামগ্রী মজুদের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বান্দরবানে আসা লোকদের অবশ্যই দ্রুততার সঙ্গে উখিয়া ক্যাম্পে পাঠাতে হবে।

আগত লোকদের নিকটবর্তী নতুন আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানোর কাজ সমন্বয় করবে আরআরআরসি। আশ্রয় প্রার্থীরা যাতে ক্যাম্পের বাইরে যেতে না পারে তাও মনিটর এবং দেখভাল করবে আরআরআরসি।

ত্রাণ কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনায় এলজিইডি ও এএফডি সড়ক মেরামত এবং নির্মাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের ডিজি পর্যাপ্ত পরিমাণ কলেরার টিকা ও খাবার স্যালাইন সরবরাহ করবে। যে কোনো প্রকার জরুরি চিকিৎসার চাহিদা পূরণে তাদের প্রস্তুতি থাকতে হবে।

এসজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
৫ মাসের শিশু চুরির ৫ দিন পর উদ্ধার, ২ রোহিঙ্গা গ্রেপ্তার
জাতিসংঘে ফের রোহিঙ্গা সংকট উত্থাপন বাংলাদেশের
ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের মাঝে পুলিশের ইফতার বিতরণ
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন সুইডেনের রাজকুমারী
X
Fresh