• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ভবিষ্যৎ মহামারি মোকাবিলায় বৈশ্বিক চুক্তিতে পৌঁছনোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

আরটিভি নিউজ

  ২২ মে ২০২২, ২২:০৩
ভবিষ্যৎ, মহামারি, মোকাবিলায়, বৈশ্বিক, চুক্তিতে, পৌঁছার, আহ্বান, প্রধানমন্ত্রীর,
ছবি: সংগৃহীত

ভবিষ্যৎ মহামারি মোকাবিলায় একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত সাড়া প্রদানের জন্য ‘মহামারি চুক্তি’তে পৌঁছার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (২২ মে) ৭৫তম বিশ্ব স্বাস্থ্য অ্যাসেম্বলি’র উচ্চ পর্যায়ের অধিবেশনে সম্প্রচারিত একটি ভিডিও বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ২২-২৮ মে পর্যন্ত এ অ্যাসেম্বলি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর এটিই প্রথম ইন-পারসন স্বাস্থ্য বিষয়ক সমাবেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যৎ মহামারিগুলো মেকাবিলার লক্ষ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত সাড়া প্রদানের জন্য আমাদের অবশ্যই মহামারি চুক্তিতে পৌঁছাতে কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, লাখ লাখ মানুষকে টিকাদানের প্রচেষ্টার বাইরে রেখে তারা টেকসইভাবে পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা নিশ্চিত করতে পারেনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন বাড়াতে প্রযুক্তি এবং কারিগরি জ্ঞান শেয়ার করা দরকার।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি এখনও সারা বিশ্বে জীবন ও জীবিকার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে তার সরকার স্বাস্থ্যসেবা, আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার সমন্বয়ের মাধ্যমে মহামারির হুমকি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় সাপেক্ষ ২৮টি উদ্দীপনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি, যা আমাদের জিডিপির প্রায় ৬.৩ শতাংশ। আমরা প্রায় ৪০ মিলিয়ন ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে নগদ ও অন্যান্য সহায়তা দিয়েছি। আমরা আমাদের জনগণকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী পুনর্ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ আশ্রয় শিবিরে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমার সরকার আমাদের জাতীয় বাজেট থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী কোভ্যাক্সের মাধ্যমে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দান করার জন্য বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের লক্ষ্য অনুযায়ী জনসংখ্যার শতভাগেরও বেশি লোককে ইতোমধ্যে টিকা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের ফ্রন্টলাইন পরিসেবা প্রদানকারীদের নিবেদিত কাজের জন্য কৃতজ্ঞ।’

বাংলাদেশ ওষুধ, পিপিই ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের পাঠিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে, ভ্যাকসিনকে বিশ্বব্যাপী গণসামগ্রী হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়কে অবশ্যই ব্যাধির চাপের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের বিষয়ে বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে।

অবহেলিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগসহ চিকিৎসা গবেষণায় সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সকে সমন্বিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অসংক্রামক রোগের বিস্তারের বিষয়ে আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ক্যানসার ও ডায়াবেটিস রোগের বিষয়ে গবেষণা ও চিকিৎসার লাভের সুবিধার জন্য সকলকে আরও বিনিয়োগ করতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোকে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় জরুরি সাড়া প্রদানের অংশ হিসাবে সমাধান করা উচিত।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সড়ক দুর্ঘটনা, ডুবে মারা যাওয়া এবং অন্যান্য জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সহায়তা চাই।’

প্রথাগত ওষুধের গবেষণা ও মান বজায় রাখার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ভারত সরকার এবং ডব্লিউএইচও-কে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সব বয়সের মানুষের জন্য সুস্থ জীবনযাপনের লক্ষ্যে এসডিজি-৩ অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ১৮ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে আমাদের জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা সেবা নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার সক্রিয়ভাবে শিশু পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে এবং ২০০৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে স্টান্টিং এবং অপচয় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের লক্ষ্য ২০২২ সালের শেষ নাগাদ দক্ষ ধাত্রীদের দ্বারা ৬৫ শতাংশ প্রসব এবং ২০২২ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ প্রসবপূর্ব-সেবা নিশ্চিত করা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য শাসনের ক্ষেত্রে ডব্লিউএইচও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাপালন করছে বলে উল্লেখ করে, তিনি বলেন, আমাদেরক অবশ্যই ডব্লিওএইচওকে টেকসই অর্থায়ন করতে হবে এবং একে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সহায়তা দিতে এটিকে সক্ষম করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য এবং কূটনীতির জন্য আমাদের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তার ভূমিকা পালন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, কেনিয়া, বতসোয়ানা ও ক্রোয়াশিয়ার প্রেসিডেন্ট, ইকুয়েডরের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং জাতিসংঘ মহাসচিব এ সময় বক্তৃতা করেন। সূত্র : বাসস

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
২৪ ঘণ্টায় ১৬ জনের করোনা শনাক্ত
জাতীয় পতাকার নকশাকারের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
‘মানুষ এখন ডাল-ভাত নয়, মাছ-মাংস নিয়ে চিন্তা করে’
২৪ ঘণ্টায় করোনায় একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৬
X
Fresh