এম.এন.এইচ. বুলুর বিরুদ্ধে দুদকের মামলার শ্যোন অ্যারেস্ট খারিজ
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের প্রকাশক এম.এন.এইচ. বুলুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ কে. এম. ইমরুল কায়েশ বৃহস্পতিবার ( ১৩ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন।
গত ১৬ নভেম্বর বনানী থানায় দায়ের হওয়া সিআইডির এক মামলায় জামিন চাইতে গেলে ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলুকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদলাত। এরপর একই ঘটনায় দুদক মামলা দায়ের করে ব্যবসায়ী এম. এন. এইচ. বুলুকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর আবেদন করেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) দুদকের আবেদনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। আদালতে এম.এন.এইচ. বুলুর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী। শুনানিতে আদালত একই বিষয়ে একধিক মামলা থাকায় ব্যবসায়ী এম. এন. এইচ. বুলুর বিরুদ্ধে দুদকের মামলার শ্যোন অ্যারেস্ট খারিজের নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, এম.এন.এইচ. বুলু বিএনএস গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান। এ ছাড়াও তিনি বিএনএস গ্রুপের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠানের দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার প্রকাশক, চ্যানেল-২১ এর চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক নিযুক্ত ছিলেন এবং স্পনসর শেয়ার হোল্ডার হিসাবে মালিকানা বিদ্যমান, প্রাইম এশিয়া ইনিভার্সিটি এবং অস্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ঢাকার একজন সম্মানিত ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র গুলশান, বনানী ও উত্তরা এলাকায় ৩টি বাণিজ্যিক বহুতল ভবনের মালিক। বিএনএস গ্রুপ অব কোম্পানিজের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন শিল্প কারখানায় শতশত শ্রমিক কর্মচারী কর্মরত আছেন।
বনানী থানায় সিআইডি কর্তৃক একটি এজাহার দায়ের করা হয় যাতে ৩নং আসামি হিসাবে ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলুর নাম এজাহারভুক্ত করা হয়। এজাহারে উল্লেখিত বিষয়ে কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা নেই ব্যবসায়ী এম. এন. এইচ. বুলুর। ২০২০ সালে ১৩ আগস্ট এজাহারে ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলুকে উক্ত এজাহারে ৩নং আসামি উল্লেখ করা হয়। সিআইডি কর্তৃক দায়েরকৃত মামলায় আমির ফুড নামীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রপ্তানির বিপরীতে সরকারি প্রণোদনার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আমির হোসেন।
তৎকালীন সময়ে আমীর হোসেন একটি ব্যাংক হিসাব খোলার সময় ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলুর অজান্তে তার একটি পাসপোর্ট সাইজ ছবি সংগ্রহ করে ব্যাংক হিসাবে নমিনি অন্তর্ভূক্ত করে। যা রপ্তানির বিপরীতে আত্মসাৎকৃত অর্থের বিষয়ে পরবর্তী সময়ে ইউনাইটেড কামর্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের গত ২০১৫ সালের ৪ মার্চ তারিখে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করে, যাতে ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলুকে ৩নং আসামি হিসাবে উল্লেখ কর হয়।
এ বিষয়ে জানার পর ইউনাইডে কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের নিকট ওই বিষয়ে অভিযোগ করেন এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের দালিলিক কাগজপত্রাদি যাচাই-বাছাই করে বনানী থানায় লিখিতপত্রের মারফতে অবহিত করে যে, তাদের দায়েরকৃত এজাহারের সহিত ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলু কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা নেই এবং এজাহার থেকে ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলুর নাম বাতিল করার জন্য অবহিত করেন। যেহেতু ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক কর্তৃক পত্রদাখিলের পূর্বেই এজাহারটি চিফ মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেট আদালত নং-১, ঢাকাতে প্রেরণ করা হয় সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলু ওই মামলা শুনানির জন্য বিচারকের সম্মুখীন হয়। পরে চিফ মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেট আদালত নং-১ এর বিচারক উক্ত মামলার চার্জশিট শুনানি অন্তে তার রায় প্রকাশ করেন। যাতে তিনি উল্লেখ করেন ‘উক্ত পর্যালোচনায় দেখা যায় আসামি এম.এন.এইচ. বুলু অত্র মামলার ঘটনার সাথে মৌখিক বা দালিলিক কোনো সম্পৃক্ততা নেই, সুতরাং তার পক্ষে দাখিলীয় অব্যাহতির আবেদন মঞ্জুর করা হলো এবং আসামি এম.এন.এইচ. বুলুকে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪১(এ) ধারায় অব্যাহতি দেওয়া হলো।
এসকে
মন্তব্য করুন