• ঢাকা বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বাড়লে বাংলাদেশের ৩ কোটি মানুষ ঘর হারাবে 

মো. গোলাম মোস্তফা (দুঃখু)

  ২৯ এপ্রিল ২০২১, ১২:৪৮
সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বাড়লে বাংলাদেশর ৩ কোটি মানুষ ঘর হারাবে 
সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বাড়লে বাংলাদেশর ৩ কোটি মানুষ ঘর হারাবে 

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। অথচ এর জন্য বাংলাদেশ দায়ী নয়। এদিকে সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওর এলাকা জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বেড়ে গেলে বাংলাদেশের ১৭ ভাগ ভূমি পানিতে তলিয়ে যাবে। এতে প্রায় ৩ কোটি মানুষ উদ্বাস্তু হতে পারে। হারাতে পারে তাদের আজন্মের পরিচিত গ্রাম। এখন পর্যন্ত জলবায়ুর প্রভাবে ৬০ লক্ষ বাংলাদেশি বাস্তুহারা হয়েছে। অথচ এই দরিদ্র ও নিরীহ মানুষগুলো নিজেরা কোনোভাবেই জলবায়ু-সংকট সৃষ্টির জন্য দায়ী নয়।

বুধবার (২৮ এপ্রিল) ধরিত্রী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংলাপে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এসব কথা বলেন।

পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন নেদারল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ অনুবিভাগ) মো. মনিরুজ্জামান, একশন এইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, জেন্ডার ও মানবাধিকার কর্মী শীপা হাফিজা, ক্লাইমেট ফিন্যান্স এন্ড ক্লাইমেট ইন্ডিউসড মাইগ্রেশন প্রকাশ, ব্রিটিশ কাউন্সিলের আইবিপি ম্যানেজার আবুল বাশার, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা প্রমুখ।

আরও পড়ুনঃ

শুনানি হচ্ছে না আনভীরের জামিন আবেদন

আমেরিকায় দেহ দান করেছেন এস আই টুটুল

বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আরও বলেন, 'পরিবেশের জন্য দায়ী অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণকারী উন্নত দেশ সমূহ। এর দায় তাদের নিতে হবে। একা বাংলাদেশের পক্ষে এই সংকট মোকাবিলা করা সম্ভবও নয়। প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা। যেসব দেশ বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য মূলত দায়ী, বাংলাদেশ ও অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত দেশের পাশে এসে তাদের দাঁড়ানো উচিত।’

পরিবেশ নিয়ে কাজ করেন উপকূলীয় অঞ্চলের ১২১ জন তরুণ-তরুণী এই সংলাপে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। মন্ত্রীকে লিখিতভাবে তারা কিছু দাবি ও প্রস্তাব পেশ করেন।

তাদের দাবী সমূহ-
১. দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করতে হবে।
২. উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।
৩. জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ পুন:নির্মাণ করতে হবে।
৫. বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরুরী তহবিল গঠন ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
৬. উপকূলীয় মানুষের খাবার পানির স্থায়ী সমাধান করতে হবে।
৭. বিশ্ব জলবায়ু তহবিল থেকে পাওয়া অর্থ কোন কাজে ব্যবহার হয় তার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৮. দুর্যোগ প্রবণ দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল, চর ও দ্বীপাঞ্চলবাসীর জানমাল সুরক্ষায় কার্যকর অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে।
৯. প্রতিটি জাতীয় দিবসে গাছ লাগানো কর্মসূচি বাধ্যতামূলক করতে হবে।
১০. ক্লাইমেট মাইগ্রেন্ডদের নিয়ে সরকারিভাবে সমীক্ষা চালাতে হবে।
১১. পাঠ্যসূচীতে ক্লাইমেট এডপশন, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের বিষয়গুলো যুক্ত করতে হবে।

ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস এবং পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত 'রোড টু গ্লাসগো 'পৃথিবী পুনরুদ্ধার ও জলবায়ু সুরক্ষা' শিরোনামের ভার্চুয়াল সংলাপে পরিবেশ মন্ত্রী আরও বলেন, 'আমরা যতই অর্থ-সম্পদে বিত্তশালী হই না কেন প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে থাকা যায় না। পৃথিবীকে বাসযোগ্য করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। অভিযোজন ও গ্রিন হাউস নির্গমন কমিয়ে আনতে ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ বিশ্ব গড়তে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এখনই উদ্যোগী হতে হবে।’

আরও পড়ুনঃ মুনিয়ার সুরতহাল রিপোর্টে যেসব বর্ণনা দিয়েছে পুলিশ

পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, 'একটি দেশের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য ভূখন্ডের অন্তত ২৫ শতাংশ বনাঞ্চল থাকা প্রয়োজন। বাংলাদেশে আছে মাত্র ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। এটিকে আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ২৪ শতাংশ করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে সরকার।

এ সমস্যা বিষয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী বলেন, প্যারিস চুক্তির অঙ্গীকারের অংশ হিসাবে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশের জন্য ২০২০ সাল থেকে প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার তহবিল উত্তোলনের একটি বিধান রাখা হয়েছিল তবে এখনো এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি। প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসার পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্যোগ জলবায়ু পরিবর্তন-জনিত ঝুঁকি প্রশমনে বিশ্বনেতাবৃন্দকে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ গ্রেনেড ভেবে পুলিশে ফোন, পরে জানা গেলো সেক্স টয়!

জিএম

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh