জনকণ্ঠ সম্পাদকের স্মরণসভায় বক্তারা
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবিচল ছিলেন আতিকউল্লাহ খান মাসুদ
দেশে বর্তমানে অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করার ব্যক্তি ও সাহসী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা খুবই কম। যেমন আমৃত্যু মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন জনকণ্ঠের প্রয়াত সম্পাদক, প্রকাশক আতিকউল্লাহ খান মাসুদ। তিনি ছিলেন চেতনার বাতিঘর। আর বঞ্চিত মানুষের আশ্রয়স্থল ছিল জনকণ্ঠ। তার অকালমৃত্যুতে জাতি একজন লড়াকু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষ হারাল। আগামীদিনে বাংলাদেশের অস্তিত্বেও লড়াইয়ে তাঁর মতো মানুষের খুবই প্রয়োজন ছিল।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জনকণ্ঠ ইউনিট ও দৈনিক জনকণ্ঠ সাংবাদিক কর্মচারী ঐক্যপরিষদের উদ্যোগে জনকণ্ঠের প্রয়াত সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিকউল্লাহ খান মাসুদ স্মরণে আয়োজিত সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সাহসি ভূমিকা পালন করায় জনকণ্ঠ সম্পাদকের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান। সকল ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে বাইরে থাকা অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষগুলোকে নিয়ে আগামী দিনগুলোতে এগিয়ে চলার আহ্বান জানান তারা।
স্মরণসভার শুরুতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিকউল্লাহ খান মাসুদ স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অন্যতম প্রতিষ্ঠান দৈনিক জনকণ্ঠ। এই প্রতিষ্ঠানে মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী মানুষের প্রাণ খুলে লেখা ও বলার জায়গা করে দিয়েছেন সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদ। তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবিচল ছিলেন। অথচ দুঃখের বিষয় হলো তাকে ভুল বুঝিয়ে ভেতরে থাকা একটি দুষ্টুচক্র অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী গণমাধ্যমকর্মীদের পরিকল্পিতভাবে ছাঁটাই করেছে। মূলত এ কারণে আমরা জাতির জনকের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জনকণ্ঠ যেভাবে ভূমিকা পালনের কথা ছিল তা দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, পত্রিকার ভেতরে ষড়যন্ত্রকারীরা যতোদিন থাকবে ততোদিন এই পত্রিকাটি আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। তারা দৈনিক জনকণ্ঠকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ছাঁটাইকৃত কর্মীদের পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, পত্রিকা কর্তৃপক্ষের কাছে আমার আহ্বান তারা ছাঁটাইকৃত সাংবাদিকদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়টি আন্তরিকভাবে বিবেচনা করবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, সাংবাদিকতায় এখন নিরপেক্ষতায় জায়গা থেকে কাজ করা কঠিন। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ড, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, হেফাজতের তাণ্ডব সব মিলিয়ে একটি আদর্শিক ধারায় থাকা ছাড়া কোন উপায় নেই। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ ছাড়া ভারসাম্যের সাংবাদিকতার সুযোগ কমে গেছে। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা আক্রান্ত, তাই সঠিক ধারায় আমাদের চলতে হবে। যেমন চলেছিলেন জনকণ্ঠের সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদ। তিনি অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ ইস্যুতে কোন আপোস করেননি।
পি
মন্তব্য করুন