রাতে ডেকে নিয়ে রোকেয়া হলের এজিএসকে পেটালো ছাত্রলীগের ২ নেত্রী
গভীর রাতে ডেকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ও হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনী দাস তন্বীকে বেধড়ক পিটিয়েছে একই সংগঠনের ২ নেত্রী।
গত সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাবি বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশি ও শামসুন নাহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জেসমিন শান্তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠেছে।
তন্বী জানান, নিশি এবং শান্তা সোমবার রাত ১২টার দিকে তাকে ফোন দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে ডেকে নেয়। তিনি সেখানে যাওয়ার পর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা মারতে উদ্যত হলে সেখান থেকে দৌড়ে পালান তিনি। তারা ধাওয়া করে পিছু নেয়। পরে বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের সামনে তাকে ধরে ফেলে।
এ সময় ধাওয়াকারীরা তাকে বেধড়ক মারতে থাকে। তাদের সঙ্গে থাকা দুই যুবক তাকে ঘিরে ধরে।
তন্বীর অভিযোগ, মারধরের একপর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে শান্তা তার পায়ে জোরে চাপ দিয়ে ধরে রাখে আর নিশি এক পা দিয়ে চাপা দিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি মারতে থাকে। তারা গলায় পাড়া দেয়। একপর্যায়ে গলা দিয়ে রক্ত বের হয়।
ফাল্গুনী দাস তন্বীর ভাষ্য, এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও দায়িত্বরত পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন তিনি। বর্তমানে তিনি শক্ত খাবার খেতে পারছেন না। রাস্তায় পড়ে যাওয়ায় হাত, পা ও মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি।
তন্বীর অভিযোগ, দুই ছাত্রলীগ নেত্রী তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন নেতাদের জানিয়েছেন বলে জানান তন্বী। নেতারা ব্যবস্থা না নিলে আইনি ব্যবস্থা নেবেন তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশি এবং শামসুন নাহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জেসমিন শান্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, আমরা জানতাম তাদের মধ্যে এমন উত্তেজনা ছিল। কিন্তু তারা যে মারামারি করেছে তা জানি না। যদি এমন কিছু করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী আজ বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমকে বলেন, এখন তো বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। তার মধ্যে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। প্রক্টরিয়াল টিম তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দাখিল করেননি।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ কলেজ অধিভুক্তি বাতিলের আন্দোলনের সময় একাধিক আন্দোলনকারীকে মারধর করার অভিযোগ রয়েছে বেনজির হোসেন নিশি ও জেসমিন শান্তার বিরুদ্ধে।
কেএফ
মন্তব্য করুন