সলিমুল্লাহ এতিমখানার শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার অভিযোগে বিক্ষোভ
রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ এতিমখানার হোস্টেল সংস্কার করা, শিক্ষার্থীদের থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা ও পাঠ্য উপকরণ নিয়মিত সরবরাহ করাসহ মৌলিক দাবি জানাতে গিয়ে পুলিশি হামলার শিকার হয়েছেন এতিমখানার শিক্ষার্থীরা। হামলার প্রতিবাদে রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে শতাধিক শিক্ষার্থী এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। আধঘণ্টা অবস্থানের পর শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে সরে যান। পরে সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় এতিমখানায় যাওয়ার সময় পলাশী এলাকায় তাদের উপর পুলিশ আবার হামলা করেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের দাবি জানাতে গিয়ে তাদের দুই শিক্ষক ও তিন সহপাঠীকে লালবাগ থানা পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। আটককৃতরা হলেন- হোস্টেলের হাউস টিউটর ইউসুফ মোল্লা, ক্রীড়া শিক্ষক হারুন অর রশীদ এবং নয়ন, রানা ও রাকিব নামের তিন শিক্ষার্থী।
এর আগে, রোববার বিকেলে শতাধিক শিক্ষার্থীর একটি মিছিল রাজু ভাস্কর্যের দিকে আসে। সেখানে প্রায় আধঘণ্টা অবস্থান নিয়ে আটককৃত শিক্ষক ও সহপাঠীদের মুক্তির দাবি জানায় তারা।
এতিমখানার উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থী ফরহাদ বিশ্বাস সবুজ বলেন, আজকে সকালে আমরা আমাদের কিছু দাবি দাওয়া নিয়ে প্রশাসনের কাছে গিয়েছিলাম। আমাদের দাবি ছিল, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা ভালো করা, পড়ালেখার জন্য সময়মতো বই দেওয়া। কিন্তু দুপুর একটা পর্যন্ত বসে থাকলেও তারা আমাদের সাথে কথা বলেননি। এরপর পুলিশ নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে। আটকেও রেখেছে। এরপর পুলিশ আমাদের দুইজন স্যার ও তিন সহপাঠীকে ধরে নিয়ে গেছে। মেয়েদের উপরও পুরুষ পুলিশ দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে বের হওয়ার পথে পলাশীর মোড়ে আবারও পুলিশের হামলার শিকার হয় বলে অভিযোগ জানায় শিক্ষার্থীরা। তারা জানায়, টিএসসি থেকে মিছিল নিয়ে এতিমখানার দিকে যাওয়ার সময় পলাশী এলাকায় পুলিশ তাদের উপর হামলা চালায়। সেখান থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যায়।
এতিমখানার দশম শ্রেণির ছাত্রী মুক্তা জানান, হোস্টেলে আমাদের অনেক মানসিক নির্যাতন করা হয়। এতিমখানায় তো কম দান করা হয় না। কিন্তু আমাদের ঠিক মতো খাবারই দেওয়া হয় না। কেউ অসুস্থ হলে তার সাথে খুবই খারাপ ব্যবহার করা হয়। বলা হয়, আমরা কেন অসুস্থ হইছি।
অভিযোগের বিষয়ে শহর সমাজসেবা কার্যালয়-৫ এর সমাজসেবা অফিসার জহির উদ্দীন বলেন, একজন শিক্ষার্থীর গায়েও হাত তোলাও হয়নি। আজকে ওরা যখন আন্দোলন শুরু করে, তখন একটা তদন্ত কমিটি গিয়েছিল। ওরা তদন্ত কমিটির কাজে বাধা দেওয়ায় তাদের ভিতরে যেতে বলা হয়েছে।
আটককৃতদের বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির কাজে বাধা দেওয়ায় কমিটি পুলিশ ডেকে নিয়ে এসে তাদের পুলিশের হেফাজতে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে।
অভিযোগের বিষয় জানতে লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আশরাফ উদ্দিনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, স্যার সলিমুল্লাহ এতিমখানায় ছেলে মেয়ে মিলিয়ে প্রায় দুইশত শিক্ষার্থী থাকেন। আলাদা দুটি হোস্টেলে তাদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
পি
মন্তব্য করুন