পুলিশে কোনোভাবেই দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না: আইজিপি
দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স। পুলিশে কোনোভাবেই দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না। যারা দুর্নীতি করে বড় লোক হতে চায়, তাদের জন্য পুলিশের চাকরি নয়। সেবাপ্রার্থী বা জনগণকে কোনও প্রকার হয়রানি বা নির্যাতন করা যাবে না। মানুষকে ভালোবেসে হাসিমুখে সেবা দিতে হবে। করোনাকালে মানবিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে পুলিশ যেভাবে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদের প্রতি সেবার হাত বাড়িয়েছে, যেভাবে সহযোগিতা দিয়েছে, তা দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। মানুষও অকুণ্ঠচিত্তে এর প্রতিদান দিয়েছে। মানুষ তাদের মনের মণিকোঠায় পুলিশকে স্থান দিয়েছে। জনগণের প্রতি পুলিশের এ ধরনের মানবিক আচরণ ও সেবা অব্যাহত রাখতে হবে। আজ রোববার (১৫ নভেম্বর) রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের পুলিশ অডিটোরিয়ামে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) কর্মরত কনস্টেবল, নায়েক ও এএসআইদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজি ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, এসবি প্রধান মীর শহীদুল ইসলাম, সিআইডি প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আইজিপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুকূল্যে গত ১০ বছরে পুলিশ অনেক দূর এগিয়েছে। আমাদেরকে যেতে হবে আরও বহুদূর। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ সড়ক-মহাসড়কে, শিল্প কারখানায় নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হয়েছে। বিদেশিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে, ব্যবসা করছে, দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে বাংলাদেশ পুলিশের সবচেয়ে বড় ইউনিট ও ‘ফেস অব পুলিশ’ আখ্যায়িত করে আইজিপি বলেন, ডিএমপিতে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের কর্মদক্ষতা ও আচরণের ওপর পুলিশের ভাবমূর্তি অনেকাংশে নির্ভর করে। পুলিশের কোনও সদস্য ড্রাগ গ্রহণ করবে না, ড্রাগের ব্যবসা করবে না, ড্রাগ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না। আমরা জনগণের কাছে যেতে চাই। সারাদেশকে ৬ হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে বিট পুলিশিং চালু করা হয়েছে। এতে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে এবং সংশ্লিষ্ট বিটের আইন-শৃঙ্খলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
আইজিপি বলেন, পুলিশের নিয়োগ ও বদলির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনা হয়েছে। তাই পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা বেড়েছে, পাশাপাশি তাদের প্রত্যাশাও অনেক। জনগণের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে হবে। মানবিক আচরণ করতে হবে। পাশাপাশি দৃঢ়তার সঙ্গে আইন প্রয়োগ করতে হবে। পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালকে বিশেষায়িত হাসপাতালে পরিণত করা হচ্ছে। ঢাকায় আরেকটি পুলিশ হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালগুলো আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। পুলিশ সদস্যদের সন্তানদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে ৮টি বিভাগীয় সদর দফতরে মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা এবং ইংরেজি উভয় মাধ্যমে পড়াশোনার ব্যবস্থা থাকবে।
পুলিশ প্রধান বলেন, দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করা একটি বিরল সুযোগ ও সম্মানের বিষয়। জনগণের জন্য আমরা যত বেশি কাজ করবো, তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক তত বেশি সুসংহত হবে। শৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে পুলিশকে শৃঙ্খলার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। কল্যাণের সঙ্গে শৃঙ্খলাকে মিশানো যাবে না। আইজিপি তার বক্তব্যে ৫টি মূল লক্ষ্যকে বিশদভাবে তুলে ধরে এ লক্ষ্য অর্জনে সবাইকে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে নির্দেশ দেন।
কেএফ
মন্তব্য করুন