ধর্ষণ নিয়ে পুলিশের কঠোর হুঁশিয়ারি
এই প্রথম বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে ঢাকাসহ সারাদেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনবিরোধী সমাবেশ হয়েছে৷ আজ শনিবার (১৭ অক্টোবর) সারাদেশে ৬ হাজারেরও বেশি সমাবেশ হয়৷ সেখানে পুলিশ কর্মকর্তারা ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন৷
বাংলাদেশে পুলিশের মোট ৬৪৭টি থানা আছে৷ এই থানাগুলোতে পুলিশের মোট বিট ৬ হাজার ৯১২টি৷ পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, সবগুলো বিটেই আজ ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনবিরোধী সমাবেশ হয়েছে৷ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে অনুষ্ঠিত সমাবেশগুলোতে ধর্ষণের বিরুদ্ধে নানা প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ অনেকেই অংশ নেন৷
এসব সমাবেশ থেকে ভুক্তভোগীদের নির্ভয়ে থানায় অভিযোগ করা আহ্বান জানানো হয়৷ সাধারণ মানুষ যেন ধর্ষকদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং পুলিশকে ধর্ষণ প্রতিরোধে সহায়তা করেন, সে আহ্বানও জানানো হয়৷
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান আজ শাহবাগ থানার সমাবেশে বলেন, আমরা সারাদেশে এই সমাবেশের মাধ্যমে ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছি। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, ধর্ষণ করে কোনোভাবেই রেহাই পাওয়া যাবে না৷ ধর্ষককে শাস্তির আওতায় আসতেই হবে। ধর্ষণ এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনায়৷ মানুষ ধর্ষণের বিরুদ্ধে সচেতন হচ্ছে৷ আমরা ধর্ষণের শিকার নারীদের পাশে আাছি৷ আমাদের কথা হলো কোনো নারী ধর্ষণের শিকার হবে না৷ আর কোনো মায়ের সন্তান যেনো ধর্ষক না হয়৷
এই সমাবেশে অংশ নেয়া সাজেদা বেগম বলেন, ধর্ষণের শিকার যারা হন তারা যথাযথভাবে পুলিশের সহযোগিতা পান না৷ সহযোগিতা পেলে অবশ্যই ধর্ষণ কমে আসবে বলে মনে করছি৷ তবে কিছু নারী শত্রুতাবশত হয়রানির উদ্দেশ্যে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে থাকেন। যে কারণে মামলার সংখ্যা বেড়ে যায় এবং মামলাজটে প্রকৃত ধর্ষণের ঘটনাগুলো বিচার প্রক্রিয়ায় গিয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। আমি মনে করছি, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান করায় এখন ধর্ষকরা ভয় পাবে৷ এর পাশাপাশি মানসিকতায়ও পরিবর্তন আনতে হবে।
আরও পড়ুনঃ
অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ৩ ভারতীয় আটক
সিলেটে ভাতিজিকে ধর্ষণের অভিযোগে চাচা গ্রেপ্তার
সাভারে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার গৃহকর্মী
দলবেঁধে ধর্ষণের পর টাকা-স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে চলে গেল দুর্বৃত্তরা
সমাবেশে উপস্থিত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নারীদের প্রতি সহনশীল হতে হবে৷ তাদের শুভাকাঙ্খী হিসেবে পাশে থাকতে হবে৷ তাদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে৷
রমনা জোনের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, আসলে ধর্ষণের ঘটনা বাড়েনি। বরং আগের তুলনায় সংবাদমাধ্যমে এর প্রচার বেশি হচ্ছে৷ যে কারণে সম্প্রতি এর মাত্রাটা বেশি মনে হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমে কখনও ছেলেধরা, কখনও গণপিটুনির রিপোর্ট বেশি হয়৷ ধর্ষণের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে৷ আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা সংবাদমাধ্যমে যখন যে টপিক আলোচনায় আসে তখনই আমরা সক্রিয় হই, এই অভিযোগটিও সঠিক নয়, আমরা সব সময়ই যে কোনো অপরাধের বিরুদ্ধে সক্রিয় আছি৷
কেএফ/পি
মন্তব্য করুন