• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

নতুন একটি কৃষি পদ্ধতির প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন তরুণরা

আরটিভি নিউজ

  ১৫ অক্টোবর ২০২০, ১৭:৫১
Cultivation in aquaponics method
অ্যাকোয়াপনিকস পদ্ধতিতে চাষাবাদ

অল্প জায়গায় একটি অবকাঠামো ব্যবহার করে মাছ এবং সবজি চাষের আধুনিক একটি পদ্ধতি অ্যাকোয়াপনিকস। এই পদ্ধতিতে মাটি ছাড়াই সবজি উৎপাদন হয়। মাছ ও সবজি চাষের সমন্বিত পদ্ধতি এটি। আর এই পদ্ধতির প্রতি তরুণরা বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

বাংলাদেশ এই পদ্ধতিটা প্রথম দিকে শুরু করেছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য চাষ বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এম এ সালাম। তিনি ২০১০ সালে নিজের বাড়ির ছাদে সবজি চাষ শুরু করেছিলেন, আর ২০১১ সালে শুরু করেন মাছ চাষ। এই অবদানের জন্য কৃষিক্ষেত্রে পদকও পেয়েছেন তিনি।

কৃষি তথ্য সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, অ্যাকোয়াপনিকস হলো টেকসই একটি খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা। এতে মাছ চাষ থেকে আসা দূষিত পানি গাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং সেখান থেকে স্বচ্ছ পরিষ্কার পানি পুনরায় মাছের ট্যাংকে ফিরে যায়।

এ বিষয়ে অধ্যাপক এম এ সালাম বলেন, এই পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া অনুঘটক হিসেবে কাজ করে মাছের বর্জ্য থেকে গাছকে নিজের খাদ্য উৎপাদনে সহায়তা করে থাকে। একবার সিস্টেম দাড়িয়ে গেলে পরে আর খরচ নেই। এটা বেশি রক্ষণাবেক্ষণের দরকার হয় না। একদিকে মাছ যেমন ব্যাকটেরিয়ার জন্য পুষ্টি সরবরাহ করে, অন্যদিকে ব্যাকটেরিয়া মাছের বর্জ্য ভেঙ্গে নাইট্রেট তৈরি করে গাছের খাদ্যের যোগান দেয়। গাছ আবার পানি পরিষ্কার করে মাছের বসবাস নিরাপদ করে তোলে।

অ্যাকোয়াপনিকস পদ্ধতিতে মাছ ও সবজি চাষের সুবিধাগুলো-

বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি সহজ প্রযুক্তি ও সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব, কোন বর্জ্য উৎপাদন করে না। এতে জৈব খাদ্য উৎপাদন পদ্ধতি হওয়ায় পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদনের সুযোগ আছে। এর মাধ্যমে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সবজি উৎপাদন সম্ভব। পলিথিন দিয়ে ঘর তৈরি করে সারা বছরই মাছ ও সবজি চাষ করা যায় ও পানি কম লাগে। অনুর্বর এবং পতিত জমির সদ্ব্যবহার করা যায়। পদ্ধতিটি প্রাকৃতিক এবং সারের উৎসস্থল। খাদ্য পরিবহনজনিত দূষণ হ্রাস করে এই পদ্ধতি। যে কোনো এলাকায় ও যে কোনো আবহাওয়ায় এটি করা সম্ভব।

অ্যাকোয়াপনিকসের ক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে-

সাফল্য পেতে হলে নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। প্রযুক্তি-নির্ভর পদ্ধতি হওয়ায় এ সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। সময়মত রক্ষণাবেক্ষণ ও পরীক্ষা করা ও মাছকে ঠিক মতো খাবার দিতে হবে। মাছ ও সবজি দ্রুততম সময়ে বাজারজাতের ব্যবস্থা করতে হবে।

কৃষি তথ্য সার্ভিস বলছে, দুই হাজার লিটারের একটি ট্যাংক থেকে আট মাসে ১০০-১২০ কেজি তেলাপিয়া উৎপাদন সম্ভব। এর সাথে টমেটো, লেটুস, কচু ও পুদিনা ইত্যাদি ফসল উৎপাদন করাও সম্ভব।

অধ্যাপক এম এ সালাম বলেন, তেলাপিয়া মাছ চাষের সাথে সবজি হিসেবে ধুন্ধুল, চিচিঙ্গা, লাউ, ঢেঁড়স, শিম, কচুশাক, পালংশাক ও কলমিশাক আবাদ করা যায়।

অ্যাকোয়াপনিকসের বেশ কিছু পদ্ধতিতে করা যায়।

পুকুরে মাচা পদ্ধতি: এ পদ্ধতিতে বাঁশের চটি দিয়ে মাচা তৈরি করা হয়। মাচায় আধা লিটার পানি ভর্তি চল্লিশটি বোতল দিয়ে ভাসিয়ে রাখতে হয়। প্রতিটি মাচায় চারটি করে কচু, পুদিনা, কলমিশাক, ঢেঁড়স ও টমেটোর সর্বমোট ২০টি চারা ব্যবহার করা যায়। এভাবে বোতলের তলায় অনেক ছিদ্র করে তার মধ্যে নারিকেলের ছোবড়া ও নুড়ি পাথর স্তরে স্তরে সাজিয়ে তাতে সবজির চারা লাগিয়ে মাছের পুকুরে স্থাপন করতে হয়।

গ্যালভানাইজড পদ্ধতি: এ পদ্ধতিতে গ্যালভানাইজড পাত দ্বারা ৫''x২"-৫''x১০" আকারের ট্রে তৈরি করে সেখানে পানি নির্গমনের জন্য একটি ৪ ইঞ্চি লম্বা পাইপ স্থাপন করা হয়। এরপর পানিভর্তি একটি ট্রের সাহায্যে ভাসমান মাচা পদ্ধতিতে এবং অপর একটিতে নুড়ি পাথর সাজিয়ে সবজি চাষ করা হয়।

প্লাস্টিকের ড্রাম পদ্ধতি: এ পদ্ধতিতে প্লাস্টিকের ড্রাম লম্বালম্বিভাবে কেটে অর্ধেক করে নুড়ি পাথর ও মাটি স্তরে স্তরে সাজিয়ে কচু, পেঁপে ও বেগুনের চারা রোপণ করা হয়।

আলনা পদ্ধতি: এ পদ্ধতিতে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক বোতল ভবনের ছাদে আলনায় স্থাপন করা হয়।

সূত্র- বিবিসি বাংলা

জিএ

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
হাবিপ্রবিতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপে নিয়োগ, পাবেন যেসব সুবিধা
অ্যাপেক্সে চাকরির সুযোগ, থাকছে ডে-কেয়ার সুবিধা
২০৩২ সাল পর্যন্ত জিএসপি সুবিধা পেতে আয়ারল্যান্ডের সমর্থন চান প্রধানমন্ত্রী
X
Fresh