পাঁচ বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি না পেলে সৌদি যাওয়া হবে না অনেকের
করোনাভাইরাসের কারণে গত ২৫ মার্চ থেকে সৌদি আরব সরকার সব দেশের সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এ কারণে বাংলাদেশে আটকা পড়েন ছুটি কাটাতে আসা বহু প্রবাসী কর্মী। অন্যদিকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত শুধু সৌদি আরবের ৭৭ হাজার ৪০০ নতুন ভিসার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছিল। এসব ভিসার মেয়াদ তিন মাস হওয়ার কারণে ইতোমধ্যে সব ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে। এ নিয়েও বিপাকে অনেকে।
সম্প্রতি লকডাউন উঠে যাওয়ার পর সৌদি আরবে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হতেই নানা ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হন প্রবাসে গমনেচ্ছুরা।
সৌদি আরবে যেতে ইচ্ছুক এমন কয়েকজন প্রবাসী জানিয়েছেন তাদের প্রধান পাঁচ সংকটের কথা। এগুলোর মধ্যে আছে- ভিসার মেয়াদ নবায়নে জটিলতা, পাসপোর্ট নবায়নে অতিরিক্ত টাকা দাবি, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পুলিশ ভেরিফিকেশন , টিকিট বিড়ম্বনা।
দেশে থাকা অনেকেই নতুন করে ভিসার সংগ্রহ করতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন। পাসপোর্টের সাথে নিয়োগকর্তা বা কফিলের রিক্রুটিং এজেন্সির নামে আসা পাওয়ার অব অ্যাটর্নির সনদ, বিএমইটি থেকে নিবন্ধন পত্র জমা দেয়া তাদের জন্য বিড়ম্বনার। সৌদি যেতে হলে ঢাকার অনুমোদিত কেন্দ্র থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকার পরেও আলাদা করে পুলিশের ছাড়পত্র দিতে হবে। এ কারণে অল্প সময়ে এত কাগজপত্র জোগাড় করতে পারছেন না অনেকেই। ওদিকে কফিল ভিসা রিনিউ করতে চাচ্ছেন না। যদিও দেশীয় কিছু দালাল অল্প সময়ে কাগজপত্রের ব্যবস্থা করার জন্য প্রস্তাব করছেন, কিন্তু তাদের চাহিদা অনেক টাকা।
অনেকেই আবার পাসপোর্টের মেয়াদ না থাকায় ভিসা নিতে পারছেন না। এক্ষেত্রে নবায়নে অনেক টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা।
অন্যদিকে বিদেশ যাত্রীদের বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ নিতে হয় ঢাকার মহাখালীর একমাত্র অনুমোদিত কেন্দ্র থেকে। কিন্তু দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে পর পর লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও সেখান থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে পারছেন না অনেকেই। বরিশালের বাসিন্দা এমদাদ হোসেন নামের একজন সম্প্রতি এমনই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন।
এছাড়া বাংলাদেশের পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ নতুন নিয়ম বেঁধে দিয়েছে। দেশটিতে যেতে হলে এখন প্রত্যেক যাত্রীকে পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট বা পুলিশের ছাড়পত্র সনদ জমা দিতে হবে। যেখানে বাংলাদেশে পাসপোর্ট করার সময় পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় সেখানে আলাদাভাবে এই ছাড়পত্র জমা দেয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই বলে জানিয়েছে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন-বায়রা। এই পুলিশ ভেরিফিকেশন মানেই অতিরিক্ত খরচ বলে জানাচ্ছেন প্রবাসীরা।
আর টিকেট বিড়ম্বনা তো বেড়েই চলেছে। শুক্রবার ছুটির দিনেও ঢাকার কারওয়ান বাজারে সৌদিয়া এয়ারলাইন্সে ও মতিঝিলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অফিসের বাইরে ভিড় করতে দেখা যায় টোকেন ও টিকেট নিতে আসা অনেক সৌদি প্রবাসী কর্মীর। তবে সেখানে শুধু তারাই এসেছেন যারা তাদের ভিসার মেয়াদ ২০ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত বাড়াতে পেরেছেন। বাকিরা এখন মেয়াদ বাড়ানোর অপেক্ষায় আছেন।
তবে কর্মীদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাপারে পররাষ্ট্র, প্রবাসী কল্যাণসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে বলে জানান বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল হাসান বাদল।
জিএ
মন্তব্য করুন