দলবেঁধে ধর্ষণে এমসি কলেজ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের হোস্টেলে স্বামীকে আটকে রেখে নববধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার বিষয়ে জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সংশ্লিষ্ট ঘটনায় করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিঞা ও বিচারপতি মো. মহিউদ্দিন শামিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে আইনজীবী হাফিজ মোহাম্মদ মিজবাহ উদ্দিন এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন।
অপরদিকে গতকাল সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই গণধর্ষণের ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) মো. শাহেদুল কবীর চৌধুরীর নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের এ কমিটি গঠন করা হয়।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজে প্রাইভেট গাড়িতে করে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক নববধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসের সামনে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। এসময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখে দু’জন।
এ ঘটনায় সিএমপি’র শাহপরান থানায় ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ছাত্রলীগের ৬ নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত আরও ৩ জনকে আসামি করা হয়। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় গত রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেট মহানগর হাকিম তৃতীয় আদালতের বিচারক শারমিন খানম নিলার কাছে সেই রাতের ঘটনার জবানবন্দি দেন নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ। এ সময় তিনি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। আদালত গৃহবধূর জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেন।
চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এখন পর্যন্ত এজাহারনামীয় ৫ আসামিসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিলেট রেঞ্জ পুলিশ ও র্যাব-৯। এদের মধ্যে ৬ জনের ৫ দিন করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
তারা হলেন- মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, ৪ নম্বর আসামি অর্জুন লস্কর ও ৫ নম্বর আসামি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এমসি কলেজ শাখার সভাপতি রবিউল হাসান, এজাহারভুক্ত আসামি মাহবুবুর রহমান রনি, সন্দেহভাজন আসামি আইনুদ্দিন এবং রাজন।
আরও পড়ুন: এমসি কলেজে ধর্ষণ: তিন আসামি ৫ দিনের রিমান্ডে (ভিডিও)
কেএফ/এসএস/এম
মন্তব্য করুন