• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

এই নারী কখনও ম্যাজিস্ট্রেট, কখনও মানবাধিকারকর্মী! (ভিডিও)

আরটিভি নিউজ

  ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:৪৩
Parveen Akhter arrested with RAB
র‍্যাবের সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত পারভীন আক্তার

চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানাধীন ডিটি রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে পারভীন আক্তার নামের এক ভয়ঙ্কর প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আজ (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানায় র‍্যাব।

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত পারভীন নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট, কখনও সাংবাদিক, কখনও মানবাধিকারকর্মী, কখনোবা ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক, কখনো ক্যাব সভাপতি, কখনো এনজিও বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী, কখনো দেশি বিদেশি নিয়োগকারী সংস্থার মহাব্যবস্থাপক, কখনও আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী, কখনো পরিবেশবিদ হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতো।

র‍্যাব- ৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়) মো. মাহমুদুল হাসান মামুন জানান, গতকাল শনিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানাধীন ডিটি রোড এলাকায় অবস্থিত ঢাকা ভবনের ১০ম তলায় অবস্থিত "স্বীকৃতি" নামক ভুয়া সংস্থার অফিসে অভিযান চালিয়ে পারভীন আক্তার নামে একজন প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাংব-৭। আসামী পারভীন আক্তার ওই কথিত সংস্থার প্রধান। এর আগে কয়েকজন ভুক্তভোগী গ্রাহক ও কর্মচারী র‍্যাব-৭ এ সংস্থাটি ও তার প্রধানের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে অভিযোগ করে।

র‍্যাব জানায়, নিম্ন আয়ের এসব মানুষ অভিযোগ করেছে, তারা সংস্থা প্রধান ও তার নিয়োগ করা বিভিন্ন কর্মচারীর মিষ্টি কথায় ভুলে ও বিভিন্ন সুযোগসুবিধার আশায় দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং মাসিক ভিত্তিতে সংস্থাটিতে সঞ্চয় করেন। কিন্তু সঞ্চয়ের সীমা শেষ হয়ে গেলেও পারভীন আক্তার তাদেরকে মূল টাকা বা লাভ দিতে অস্বীকৃতি জানান। পারভীন আক্তারের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য তার কর্মচারীরা চাকরি ছেড়ে দিতে চাইলেও তাদেরকে চুরির মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে চাকরি করতে বাধ্য করতেন। এছাড়াও তিনি প্রত্যেক কর্মচারীর কাছ থেকে জামানত হিসেবে ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করতেন। কিন্তু সেগুলো আর ফেরত দিতেন না।

র‍্যাব ওই নারীর অফিস এবং তার বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণে সঞ্চয় ও ঋণ পাসবই, পূরণ করা চেক, স্বাক্ষর করা ফাঁকা চেক, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই ও জমা বই, চুক্তিনামা, স্বাক্ষর করা ফাঁকা স্ট্যাম্প, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের জরিমানা আদায়ের রশিদ, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তার সিল, স্বীকৃতি নামক সংস্থার ডেবিট ও ক্রেডিট ভাউচার বই, ফিক্সড ডিপোজিট রশিদ বই, অনুদান আদায়ের রশিদ বই, ক্যাশ পজিশন বই, প্যাড, বিদেশগমনের লিফলেট, বাংলাদেশ সরকারের মনোগ্রাম সম্বলিত ভিজিটিং কার্ড, নিয়োগপত্র, লেজার বই, অঙ্গীকারনামা বই, মাসিক চাঁদা আদায়ের রশিদ, মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচির বই, হিসাব খোলার বই, সাপ্তাহিক টপশিট, মাসিক সঞ্চয় আবেদন বই, প্রকল্প প্রস্তাব, আইডি কার্ড, ৪টি পাসপোর্ট, গ্রেপ্তারকৃত আসামীর একটি ভুয়া এনআইডি কার্ডসহ আরও বিপুল পরিমাণ কাগজপত্র জব্দ করে।

আসামী পারভীন আক্তারের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় এবং কোর্টে ১০টিরও বেশি প্রতারণা মামলা আছে। ২০১৪ সালে তার প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে সমবায় অধিদপ্তর স্বীকৃতি সংস্থাটির লাইসেন্স বাতিল করে। সে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটিতে লাইসেন্সের আবেদন করলেও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য লাইসেন্স অনুমোদিত হয়নি। এরপরেও সে তার প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিলো। গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে বিভিন্ন পরিচয়ে তার প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড যেমন গ্রাহকের কাছ থেকে সঞ্চয় আদায়, ভুয়া মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, হুমকি প্রদান করে চাঁদা আদায়, আইনি সহায়তা দেয়া, চাকরি দেয়া বা বিদেশ পাঠানোর নাম করে টাকা আদায় ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের কথা স্বীকার করে।

কেএফ/জিএ

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh