• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সান্ত্বনা পুরস্কারের অপর নাম গোল্ডেন বল!

স্পোর্টস ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ১৭ জুলাই ২০১৮, ১৭:০৮

গত ১৫ জুলাই ফ্রান্সের শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে পর্দা নামলো বিশ্বকাপ ফুটবলের ২১তম আসরের। অপেক্ষা ২২তম আসরের। যা আগামী চার বছর পর নভেম্বর-ডিসেম্বরে কাতারে অনুষ্ঠিত হবে। এবারের বিশ্বকাপ অনেকটা আক্ষেপ নিয়ে শেষ করলো ক্রোয়েশিয়া। নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে অংশ নেয় ক্রোয়েটরা। আশা ছিল শিরোপাই ঘরে তুলবে। কিন্তু তারুণ্যে গড়া দলের কাছে ফাইনালে খেই হারিয়ে ফেলে মদ্রিচ-রাকিটিচরা। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গোল্ডেন বলের ট্রফি পান লুকা মদ্রিচ।

ফাইনালের আগেই এক প্রকার ঠিক ছিল গোল্ডেন বল মদ্রিচের হাতে উঠছে। কিন্তু মদ্রিচ আগেই বলেছিলেন আমি গোল্ডেন বল নয় চাই বিশ্বকাপ শিরোপা। কিন্তু চাইলেই তো হয় না। কপালে থাকতে হয়। যেমনটা আগের বিশ্বকাপে মিস করেছিলেন লিওনেল মেসি। পুরো দলকে এককভাবে বিশ্বকাপের ফাইনালে তুললেও শেষ মিনিটের গোলে শিরোপা হারান জার্মানির কাছে।

মদ্রিচের শিরোপা না পাওয়ার মধ্য দিয়ে গত কয়েক বছর ধরে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায় টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়রা শিরোপা ছুঁয়ে দেখতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে কী বলা যায় না যে গোল্ডেন বল পুরস্কারটা একটি সান্ত্বনা পুরস্কার মাত্র? আসুন ফিরে যাই পিছনের দিকে।

গোল্ডেন বলের পুরস্কার পেয়েছেন পাশাপাশি শিরোপায় চুমু খেয়েছেন এটা সবশেষ ফুটবল বিশ্ব দেখেছিল ১৯৯৪ সালে। সেবার ফাইনালে টাইব্রেকারে ইতালিকে হারিয়ে চতুর্থবারের মতো শিরোপা ঘরে তোলে ব্রাজিল। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফর্মের কল্যাণে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বল সিদ্ধহস্ত করেন ব্রাজিলের রোমারিও।

এরপর কেটে গেছে ২৪ বছর। এ পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়রা আর বিশ্বকাপের শিরোপা ছুঁয়ে দেখতে পারেনি। আসুন দেখে নিই সেই হতভাগা ফুটবলাররা কারা।

১৯৯৮ বিশ্বকাপ (রোনাল্ডো)
এ বিশ্বকাপটি অনুষ্ঠিত হয় ফ্রান্সে। এটি ছিল বিশ্বকাপের ১৬তম আসর। ১০ জুন শুরু হয়ে ১২ জুলাই ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হয় মহাযজ্ঞ। এ বিশ্বকাপে ৪টি গোলে করেন রোনাল্ডো। ৬টি গোল করে গোল্ডেন বুট পান প্রথমবারের মতো খেলতে আসা ক্রোয়েশিয়ার অধিনায়ক ডেভর সুকার। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলে প্রাক প্রদীপে ছিলেন রোনাল্ডো। কিন্তু ফাইনালে স্বাগতিক ফ্রান্সের কাছে ৩-০ গোলের ব্যবধানে বিধ্বস্ত হয় সাম্বার দেশ। কিন্তু গোল্ডেন বলের ট্রফি যায় রোনাল্ডোর হাতে।

২০০২ বিশ্বকাপ (অলিভার কান)
দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের যৌথ আয়োজনে ৩১মে শুরু হয়ে ৩০জুন ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এক মাসের ফুটবল যুদ্ধ। এটি ছিল বিশ্বকাপের ১৭তম আসর। আগের আসরে শিরোপা না আক্ষেপ ছিল কী না সেটা ভালো জানেন রোনাল্ডো। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলে করেছিলেন ৮টি গোল। যার কল্যাণে হাতে উঠেছিল গোল্ডেন বুট। অপরদিকে গোলবারের অতন্দ্রপ্রহরী হিসেবে পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ সব সেভ করে দলকে ফাইনালে তোলেন জার্মানির অলিভার কান। যার কারণে সেবার একমাত্র গোলরক্ষক হিসেবে গোল্ডেন বল পান কান। সঙ্গে গোল্ডেন গ্লাভসের ট্রফিও শোকেসে ভরেন তিনি। কিন্তু ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত হয় জার্মানি। ফাইনালে গোল দুটি করেন রোনাল্ডো। সেই সঙ্গে আগের বিশ্বকাপে শিরোপা না পাওয়ার আক্ষেপ পূরণ করে নেন রোনাল্ডো।

২০০৬ বিশ্বকাপ (জিনেদিন জিদান)
বিশ্বকাপের ১৮তম আসর বসে জার্মানিতে। ৯ জুন শুরু হয়ে ৯ জুলাই ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ফুটবলের এ আসর। জিনেদিন জিদানের ছিল শেষ বিশ্বকাপ। কিন্তু পুরো টুর্নামেন্টে তার খেলা দেখে একবারের জন্যও মনে হয়নি জিদান শেষ বিশ্বকাপ খেলছেন। অসাধারণ পারফর্ম করে দলকে ফাইনালে নিয়ে যান। ১৯৯৮ বিশ্বকাপ নিজেদের ঘরে রেখে দেয়ার পর সকলের আশা ছিল এবার বুঝি দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তুলছে লস ব্লুজরা। কিন্তু ফাইনালে মারকো মাতারাজ্জিকে মাথা দিয়ে ঠুস দিয়ে মূলত বিশ্বকাপটাই ফেলে দেন জিদান। আর তখনই নির্ধারিত হয়ে যায় শিরোপা যাচ্ছে ইতালির ঘরে। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ খেলে গোল্ডেন বল পান জিনেদিন জিদান। কিন্তু দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা ছুঁয়ে দেখার আক্ষেপ নিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান এ তারকা খেলোয়াড়।

২০১০ বিশ্বকাপ (দিয়াগো ফোরলান)
বিশ্বকাপের ১৯তম আসর বসে দক্ষিণ আফ্রিকায়। ১১ জুন শুরু হয়ে ১১ জুলাই ফাইনালের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে এ আসরের। পুরো আসরে দারুণ খেলে আলোচনায় চলে আসেন উরুগুয়ের অধিনায়ক দিয়াগো ফোরলান। কিন্তু দুর্ভাগ্য সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডের কাছে ৩-২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়ে শিরোপা রেস থেকে ছিটকে পড়ে দল। ফাইনালে স্পেন ১-০ গোলে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে প্রথম শিরোপা ঘরে তোলে। আর এ বিশ্বকাপ দিয়েই নিজের আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ারকে বিদায় জানান ফোরলান।

২০১৪ বিশ্বকাপ (লিওনেল মেসি)
বিশ্বকাপের ২০তম আসরের আয়োজক হয় সাম্বার দেশ ব্রাজিল। ১২ জুন শুরু হয়ে ১৩ জুলাই মারাকানা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ আসরের। এ আসর মূলত মনে থাকবে লিওনেল মেসির জন্য। এ আসরে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তোলার মূল কারিগর আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। দুর্দান্ত স্কিল, ড্রিবলিং দেখে ফুটবল বিশ্ব। ফাইনালে শেষ মুহূর্তে মারিও গোৎসের গোলে শিরোপার স্বপ্নভঙ্গ হয় আলবেসিলেস্তেদের। দুর্দান্ত পারফর্ম করে টুর্নামেন্টের সেরা পুরস্কার গোল্ডেন বল হস্তগত হয় ক্ষুদে জাদুকরের।

২০১৮ বিশ্বকাপ (লুকা মদ্রিচ)
রাশিয়া বিশ্বকাপ ছিল বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে ২১তম আসর। ১৪ জুন শুরু হয়ে ১৫ জুলাই মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠিত ফাইনালের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে এ আসরের। গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনাকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে দ্বিতীয় রাউন্ডে পরাজিত করে ডেনমার্কের সঙ্গে টাইব্রেকার ভাগ্য পরিবর্তন করে জয় ছিনিয়ে নেয় জ্লাটকো দালিচের শিষ্যরা। কোয়ার্টার ফাইনালে স্বাগতিক রাশিয়াকে কাঁদিয়ে সেমিতে জায়গা করে নেয় মদ্রিচের দল। এখানেও অসাধারণ পারফর্ম করেন লুকা। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ী হয়ে ফাইনালে ফ্রান্সের মুখোমুখি হয় মদ্রিচ-রাকিটিচের দল। কিন্তু ফাইনালে আর তারুণ্যের মিশেলে গড়া ফ্রান্সের কাছে পাত্তাই পায়নি। ৪-২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা ঘরে তোলার সুযোগ হারায় জ্লাটকো দালিচের শিষ্যরা। কিন্তু অসাধারণ পারফর্ম করে সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে গোল্ডেন বল ট্রফি পান রিয়াল মাদ্রিদের এ তারকা।

এএ/ওয়াই

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল শনিবার
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট ‘গিনেস বুকে’ স্থান পাবে : প্রতিমন্ত্রী
টিভিতে আজকের খেলা
‘ফুটবলের উজ্জ্বল তারকারা অবশ্যই ফর্মে ফিরবে’
X
Fresh